ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

শিগগিরই ফিরবে ইটিভির হারানো গৌরব: চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২৩, ৩১ আগস্ট ২০২৪ | আপডেট: ১৮:৪৮, ৩১ আগস্ট ২০২৪

গত দশ বছরে হারিয়ে যাওয়া একুশে টেলিভিশনের সেই গৌরব শিগগিরই ফিরবে বলে প্রত্যাশা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালাম।  

দীর্ঘ দশ বছর পর গেলো ৫ আগস্ট বিকেলে নিজ প্রতিষ্ঠান একুশে টেলিভিশনে পা রাখেন তিনি। এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আয়োজন করেন প্রতিনিধি সম্মেলনের।

৩০ ও ৩১ আগস্ট দুই দিনের এই সম্মেলনের শেষ দিন শনিবার বিকেলে চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ও জেলা প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। 

বক্তব্যের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণ করেন তিনি। এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করেন আনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই। 

এরপর চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, একুশ সব সময় পরিবর্তনে বদ্ধপরিকর। আর এখন আবারো সময় এসেছে মুক্ত গণমাধ্যমের। 

একুশে টেলিভিশন সবার জন্যই একটি গর্বের জায়গা বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে এই গৌরব গেলো দশ বছরে হারিয়ে গেছে, সেই হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বানো জানান তিনি।  

এ সময় জেলা প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের শহিদদের পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে প্রতিনিধি তৈরি করুন। এখন থেকে নৈতিকভাবে কাজ করুন। যদি কোনো  অনিয়মের খবর পাই তাহলে ছাড় দেয়া হবে না।"

চেয়ারম্যান বলেন, "এখন ডিজিটাল প্লাটফর্ম, তাই আপনাদের ফিট হতে হবে। এই প্লাটফরমের জন্য আগে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করতে হবে। এই কর্মশালার মাধ্যমে আপনাদের কাজের গতি বাড়াতে হবে।"

এখন থেকে সারাদেশের সংবাদ প্রচার বাড়ানো হবে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে নিউজ বুলেটিন বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।  

এ সময় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, "তিনি একজন ফ্যান্টাটিক পার্সন। পুরো জাতি তার কাছে কৃতজ্ঞ। এই সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে যেন একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বজায় থাকে। অবশ্যই আমরা গণতন্ত্র চাই। সেদিকে দেশ ফিরে যাবে। এখন কাজ হচ্ছে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং এই সরকারকে সহায়তা করা।"

বিগত দিনে যারা একুশের দখল নিয়েছিলো তাদের সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, "যারা দায়িত্ব নিয়েছিলো তারা শুধু লুটপাট করে নিজ নিজ পকেট ভারি করেছে। কেউ একুশে টেলিভিশন প্রতিষ্ঠানের কথা চিন্তা করেনি।"

এ সময় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "টেলিভিশনের অবস্থা ভালো হলে সবাই উপকৃত হবেন।"

চেয়ারম্যানের বক্তব্যের আগে বক্তব্য রাখেন একুশে টেলিভিশনের ভাইস চেয়ারম্যান তাসনুভা মাহবুব সালাম। তিনি বলেন, "গত দশ বছরে বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে রাখা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের দখল নিয়ে লুটপাট করা হয়েছে। "

এ সময় সবার উদ্দেশ্যে সর্বাত্মক চেষ্টায় কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। 

পুরো অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন মাসুমা লিসা এবং সমাপনী বক্তব্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন ন্যাশনাল ডেস্কের ইনচার্জ  
মুসফিকা নাজনীন।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের শুরুর অংশে বিভিন্ন বিষয়ে সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ট্রানজিশন ফরম টিভি টু ডিজিটাল প্রডাকশন, স্টোরি হানটিং, ডিজিটাল কনটেন্ট, ভিডিও এডিটিং ও প্রডাকশন নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন করেন ডিজিটাল বিভাগের এডভাইজার সালাউদ্দিন সেলিম। এসময় ফেক নিউজ এবং ফ্যাক্ট চেকিং নিয়ে  বিস্তর আলোচনা করেন তিনি। আলোচনা করেন, কমিউনিটি গাইডলাইন ও ভায়োলেশন নিয়ে। কী ধরনের কাজ করলে স্টাইক আসতে পারে এসব নিয়েও কথা বলেন তিনি। 

এর আগে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকালে একুশে টেলিভিশন ভবনে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধান সম্পাদক ও বার্তা প্রধান রাশেদ চৌধুরী। সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন দেশের সব জেলা ও উপজেলার প্রতিনিধিরা। 

শুরুতে প্রতিনিধিদের কাছে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ডেস্ক ইনচার্জ মুশফিকা নাজনীন, সমর ইসলাম, মাসুমা লিসা, মাহিয়া রহমান লিয়া ও বনশ্রী ডলি।

এই দিন বিভিন্ন সেশনের মাধ্যমে ছবি ও স্টোরি প্ল্যানিং নিয়ে বক্তব্য দেন ডেপুটি হেড অব নিউজ হারুন উর রশীদ, এ্যাসাইনমেন্ট এডিটর দীপু সারোয়ার ও ফারুক হোসেন তানভীর।

স্ক্রিপ্ট রাইটিং, ভয়েস ওভার ও নৈতিকতা বিষয়ে নির্দেশনা দেন চীফ নিউজ এডিটর হাসান জাকির।

এই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিনিধিরা নতুন উদ্যমে একুশের চেতনায় গণমানুষের কথা তুলে আনবেন বলে প্রত্যাশা সবার। 

কেআই/এসবি 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি