শিবচর থানার ওসি’র কাণ্ড, মিশ্র প্রতিক্রিয়া
প্রকাশিত : ২১:২৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মাদারীপুরের শিবচরে এক নারী মাদকসেবীসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মাদকসেবী আটকের অভিযানকালে প্রমাণ রাখতে গোপনে প্রথমেই নারী মাদকসেবীসহ ৪ জনের ইয়াবা সেবনের দৃশ্য নিজ মোবাইলে ধারণ করেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ। পরবর্তীতে সেই ভিডিও ওসি তার নিজের ফেসবুক পেইজে আপলোড করে দেন।
সাথে সাথে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তবে দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এরকম কর্মকাণ্ড নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবচর থানার ওসি মো. রতন শেখ (পিপিএম)র নেতৃত্বে রোববার ভোররাতে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাবলাতলা হাজী কাইমুদ্দিন শিকদার কান্দি গ্রামের কালু খানের বাড়িতে প্রবেশ করে পুলিশের একটি দল। এসময় ঘরের মধ্যে এক নারীসহ ৪ জন মাদকসেবী অবস্থান করে ইয়াবা সেবন করছিলেন।
বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রমাণ রাখতে ঘরের বেড়ার ফাঁকা দিয়ে ওসি তার নিজ মোবাইলে মাদক সেবনের ১ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে সেই ভিডিও ওসি মো. রতন শেখ তার নিজের ফেসবুক পেজ আপলোড করেন। মুহূর্তেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী ও অপর ৩ জন পুরুষ একটি ঘাটের উপর বসে ইয়াবা সেবন করছেন।
ইয়াবা সেবনরত অবস্থায় ওই গ্রামের মনির হাওলাদারের স্ত্রী রাসনা আক্তার (২৮), ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার জঙ্গরদী গ্রামের দেলোয়ার শেখের ছেলে আরমান শেখ (৩২), মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার দক্ষিন শায়েস্তাবাদ গ্রামের রেজা হাওলাদার ওরফে হৃদয় (২৭) ও মাদারীপুরের শহীদ শেখের ছেলে শফিকুল ইসলামকে (২৬) আটক করে পুলিশ।
এসময় তাদের কাছ থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে বলেন, দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে কেন একজন ওসি এ ধরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেবে। এদের পরিবারতো কোন অন্যায় করেনি। এধরনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে বিপদে পরে পরিবার। সমাজ তখন তাদের পরিবাকে ভাল চোখে দেখেনা। বিষয়টি ওসি ঠিক করেনি।
এ বিষয়ে ওসি রতন শেখ বলেন, আমি জনসচেতনা সৃষ্টির লক্ষে এ ভিডিও আপলোড করেছি। ভিডিওটি ওসি হিসাবে আপলোড করতে পারি কিনা তা আমার জানা নেই।
সিনিয়র আইনজীবী জামিলুর হোসেন মিঠু জানান, কেউ কোন অপরাধ করলে তাদের বিচার আদালত করবে। এক্ষেত্রে আসামির ক্ষেত্রেও মানহানি হয় বা সমাজে হেয় হয় এমন কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করাও অপরাধ। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিও এধরণের কাজ করলে সেটা অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গির আলম জানান, এ ভিডিও কোথা থেকে ওসি পেয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে মামলার অ্যাভিডেন্স হিসাবে যদি ভিডিও করে থাকেন তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া ওসির ঠিক হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এএইচ
আরও পড়ুন