ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিল্পকলায় বিশ্ব পুতুলনাট্য দিবসের আয়োজন

প্রকাশিত : ২১:৫৯, ২১ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ২২:০১, ২১ মার্চ ২০১৯

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে শুরু হয়েছে ‘জাতীয় পুতুলনাট্য উৎসব ২০১৯’। গত ১৯ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল ও স্টুডিও থিয়েটার হলে উৎসবের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সারাদেশে থেকে ২৪টি দল এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে।

বৃহস্পতিবার বিশ্ব পুতুলনাট্য দিবস ২০১৯ উপলক্ষে সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে আলোচনা, সম্মাননা প্রদান ও পুতুলনাট্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা পর্বে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ঋত্বিক নাট্যপ্রাণ লিয়াকত আলী লাকী এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, নাট্যজন এস এম মোহসীন এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. রশীদ হারুন।পুতুলনাট্যশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মো: ছিদ্দিকুর রহমান কে সম্মাননা (মরনোত্তর) প্রদান করা হয়। সম্মাননা স্বরূপ তার স্ত্রীর হাতে নগদ ত্রিশ হাজার টাকা, মেডেল ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। আলোচনা ও সম্মাননা প্রদান শেষে পুতুলনাট্য পরিবেশন করে ঢাকার মাল্টিমিডিয়া পাপেট সেন্টার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের পাপেট ল্যাব।

বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী ধারা হিসেবে লোকায়ত কাহিনী, রূপকথা বা গীতিকা পরিবেশনা আজও বাংলার লোক-সমাজে প্রচলিত রয়েছে। লোকশিল্পের গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম হিসেবে বর্তমান বিশ্বে আধুনিক শিল্পচর্চা ও গবেষণার ক্ষেত্রে পুতুলনাট্য একটি বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে। বৃহৎ জনগোষ্ঠীর নিকট কোনো তথ্য দ্রুত প্রচার, জনসচেতনতা তৈরী, গণশিক্ষা প্রসার, পণ্য বাজারজাতকরণের লক্ষে প্রচারণা প্রভৃতি কাজেও পুতুলনাট্যের প্রয়োগ পরিলক্ষিত হয়। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বিগত কয়েক দশক ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক মচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সংস্কৃতির এ মাধ্যমটি বিশেষ ভমিকা পালন করে যাচ্ছে। বাংলার ঐতিহ্যবাহী পুতুলনাট্যকে সংস্কৃতির মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে এবং বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নিরলসভাকে কাজ করে যাচ্ছে।

পুতুলনাট্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম: বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পুতুলনাট্য ও এই শিল্পের শিল্পীদের মূল্যায়ন কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে চারজন পুতুলনাট্য শিল্পীকে অনুদান দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। একাডেমির মাহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী’র পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে পুতুলনাট্যের চারটি প্রযোজনা নির্মিত হয়েছে যা দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্মিত চারটি প্রযোজনার জন্য চারজন পুতুলনাট্য শিল্পীকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। অনুদানের অর্থ দিয়ে নতুন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা ও পুতুলনাট্যের মান উন্নয়নে কাজ করবেন জলে জানিয়েছেন শিল্পীরা।

পুতুলনাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন, কর্মশালা পরিচালনা, মুক্ত আলোচনা, এবং আন্তর্জাতিক পুতুলনাট্য উৎসবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পুতুল নাট্যদলের নিয়মিত অংশগ্রহণ, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পুতুলনাট্য ও এই শিল্পের শিল্পীদের মূল্যায়ন কর্মকান্ডেরই অংশ। এছাড়াও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নিয়মিতভাবে বিশ্ব পুতুলনাট্য দিবস উদযাপন করে আসছে।

ভারতের প্রখ্যাত পাপেট থিয়েটার নির্দেশক পদ্মশ্রী সুরেশ দত্ত এর তত্বাবধানে ও নির্দেশনায় গত ৮-১২ অক্টোবর ৫দিনব্যাপী ‘সমকালীন পুতুলনাট্য কর্মশালা ২০১৮ আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনে প্রখ্যাত পাপেট থিয়েটার নির্দেশক পদ্মশ্রী সুরেশ দত্ত-কে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সমাপনী আলোচনা শেষে ক্যালকাটা পাপেট থিয়েটার প্রযোজনা ‘আলাদীন’ মঞ্চায়ন করা হয়।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযদ্ধের উপর আরো চারটি নতুন প্রযোজনা নির্মানের জন্য চারজন লেখকের মাধ্যমে স্ক্রিপ্ত তৈরীর কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। তারা হলেন জাতীয় কবি কাজী জনরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আল জাবীর ও সহকারী অধ্যাপক তোকদার বাঁধন, নাট্যকার তানভীর আহমেদ সিডনী, পুতুলনাট্য শিল্পী ও উপস্থাপক তামান্না তিথি।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি