ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

শিশুদের করোনা ঝুঁকিমুক্ত রাখার পাঁচ উপায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:১৫, ১৭ আগস্ট ২০২০ | আপডেট: ১৪:১৬, ১৭ আগস্ট ২০২০

 

সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারিতে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা তুলনামূলক কম। আক্রান্ত হলেও মারাত্মক অসুস্থ হওয়া বা মারা যাওয়ার ঝুঁকি শিশুদের কম থাকে। তবে শিশুদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে কিনা সেটি বোঝাই অনেক কঠিন বলে মনে করেন শিশু বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, “অনেক পরিবারের মানুষেরা বুঝতেই পারে না যে তাদের বাচ্চা কোভিড আক্রান্ত। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের কোন উপসর্গ থাকে না। যাদের জ্বর নাই, কাশি নাই, ছোট বাচ্চা হলে তো বলতেই পারে না যে গলাব্যথা হয়েছে, সে কারণে বোঝাটাই কঠিন।"

বাংলাদেশে শিশুরা যেসব রোগে আক্রান্ত হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ। আর এর উপসর্গ হচ্ছে নাক দিয়ে পানি পরা, কাশি দেয়া, ঘড়-ঘড় করে শব্দ করা, কোন কোন ক্ষেত্রে গলাব্যথা অথবা কানে ব্যথা। করোনার উপসর্গগুলোও অনেকটা একই রকম। সে কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ নাকি করোনা তা বোঝা যায় না।

শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে, যেসব পরিবারের করোনা সংক্রমণ হয়েছে, কিংবা করোনা রোগীর সংস্পর্শে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অথবা যেসব শিশুর বাবা-মায়েদের বাধ্য হয়ে বাইরে যেতে হয়, সেসব শিশুর মধ্যে কোন ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই তাকে পরীক্ষা করাতে হবে। সেই সাথে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে তাদেরকে আলাদা করে ফেলতে হবে।

তাদের মতে, যদি কোভিড আক্রান্ত কোন শিশু দীর্ঘ সময় ধরে বয়স্ক কারো সংস্পর্শে থাকে তাহলে ঝুঁকির মাত্রাটা এমনিতেই বেড়ে যাবে। তাই শিশুদের থেকে বয়স্কদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে হলে কিছু পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ এবং ভাইরোলজিস্টরা। এর মধ্যে রয়েছে-

১. শিশুদের আলাদা রাখা

শিশুরা যেহেতু সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়ে খুব বেশি কিছু বোঝে না, তাই পরিবারের অন্য সদস্য বিশেষ করে যারা বয়স্ক এবং যাদের অন্য কোন স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে তাদেরকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। প্রয়োজনে দরজা বন্ধ রাখতে হবে যাতে শিশুরা কাছে আসতে না পারে।

২. বাইরে থেকে এসে সরাসরি শিশুদের সংস্পর্শে না যাওয়া

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেহেতু বন্ধ তাই শিশুদের বাইরে যাওয়ার মাত্রাও কম। সেক্ষেত্রে তাদেরকে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্য যারা বাইরে যান, তাদের থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে। সম্পূর্ণভাবে ভাইরাস মুক্ত না হয়ে বা বাইরে থেকে এসে শিশুদের সংস্পর্শে যাওয়া যাবে না।

৩. আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে আইসোলেশন করা

শিশুরা কোভিড আক্রান্ত হলে প্রয়োজনে তাদেরকে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে আলাদা ইউনিট বা ব্যবস্থা করা যেতে পারে যেখানে শুধু শিশুদেরই আইসোলেশনে রাখা হবে। এক্ষেত্রে সব শিশুদের মধ্যে উপসর্গ থাকবে বলে তারা নিজেরা নিজেদের জন্য ঝুঁকি হিসেবে আবির্ভূত হবে না।

৪. পরিবারের অন্য সদস্যদের মাস্ক পরা

যেহেতু শিশুদের সব সময় মাস্ক পরিয়ে রাখা সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে পরিবারের অন্য সদস্যদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া অন্য স্বাস্থ্যবিধিগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে বয়স্কদের আলাদা করে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. শিশুদের সচেতন করা

শিশু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে হলে শিশুদের মধ্যেও সচেতনতার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং বুঝিয়ে বলতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব পরিবারে কোভিড রোগী রয়েছে সেসব পরিবারের বাচ্চাদের কিছু কিছু অভ্যাস মিনার কার্টুনের মতো বুঝিয়ে বলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেমন, শরীরের কোথায় কোথায় হাত দেয়া যাবে না, কোনও কিছু যেন তেন ভাবে ফেলে রাখা যাবে না, কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে না ইত্যাদি।

সেই সাথে শিশুদেরকে বুঝিয়ে বলতে হবে যে কী কী খাবার বেশি খেতে হবে। কোন কোন কাজগুলো বেশি বেশি করতে হবে। সূত্র: বিবিসি

এএইচ/এমবি


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি