ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

শিশুদের ব্যাগসহ শিক্ষাসামগ্রী দিল হাবিপ্রবির ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ

মো: তানভির আহমেদ, হাবিপ্রবি থেকে

প্রকাশিত : ১২:০৩, ১৩ মার্চ ২০২৩ | আপডেট: ১২:৪৩, ১৩ মার্চ ২০২৩

নতুন বছরে নতুন ব্যাগ আর বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার আনন্দ অতুলনীয় হলেও এই আনন্দ পাওয়া হয়ে ওঠে না অনেক সুবিধাবঞ্চিত শিশুর। সেই আনন্দের স্বাদ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটিই সফলভাবে সম্পন্ন করছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১২ মার্চ) বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল মাঠে বিভাগটি আয়োজন করে ‘বিদ্যার ঝুলি’ অনুষ্ঠানের। একজন শিশুর নতুন স্কুল ব্যাগ সঙ্গে খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার, শার্পণার, স্কেল প্রভৃতি শিক্ষাসামগ্রী একসঙ্গে হাতে তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠানই মূলত 'বিদ্যার ঝুলি'। 

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের লেভেল-২, সেমিস্টার-২’র ‘এনজিও এন্ড ডেভলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট’ কোর্সের অংশ হিসেবে বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকার গরীব, অসহায় ও দুস্থ পরিবারের অর্ধ-শতাধিক শিশুদের হাতে এসব উপকরণ তুলে দেওয়া হয়। 

আয়োজকরা বলছেন, নতুন শিক্ষা উপকরণ হাতে পেয়ে শিশুরা শিক্ষার প্রতি যাতে আরও আগ্রহী হতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীরা তহবিল সংগ্রহ থেকে শুরু করে প্রোগ্রামের অংশগ্রহণকারী (শিশুদের) নির্বাচন, উপকরণ কেনা ও বিতরণসহ সার্বিক কাজটি নিজস্ব দক্ষতা এবং ব্যবস্থাপনায় সম্পন্ন করেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চাঁদগঞ্জ, ডাঙ্গাপাড়া, কর্নাইসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে অর্ধশতাধিক প্রকৃত দরিদ্র পরিবারের শিশু খুঁজে বের করেন এবং সে অনুযায়ী তহবিল সংগ্রহ করেন। অধিকাংশ শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয় হাবিপ্রবি স্কুল থেকে। আর সেই তহবিল থেকেই মূলত শিশুদেরকে এসব উপকরণ কিনে দেওয়া হয়।      

বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের হল সুপার ড. রোজিনা ইয়াসমিন (লাকী), বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং সহকারী প্রক্টর  ড. মো. ইয়াছিন প্রধান, ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহবুব চৌধুরী এবং উক্ত বিভাগের এনজিও অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্সের কোর্স শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মো. জুয়েল আহমেদ সরকার। 

উপস্থিত অতিথিরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এই মানবিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বলেন, তাত্ত্বিক শিক্ষার এমন মানবিক প্রয়োগ সত্যিই অতুলনীয় এবং অনুকরণীয়।
    
অধ্যাপক ড. রোজিনা ইয়াসমিন বলেন, শিক্ষার অন্যতম একটি দিক নিজেকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। আমি মনে করি, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা আজ তারই চর্চা করেছে। একটি রিসার্চের কাজের মতো তারা গ্রুপ করে ফান্ড সংগ্রহ, ডাটা কালেকশন, তথ্য বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে সব কাজ নিজ উদ্যমে করার মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করতে পেরেছে। 

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২য় ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমাদের সব টিম মেম্বার অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ফান্ড সংগ্রহ থেকে বিতরণ পর্যন্ত কাজটি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছি। সবাই বেশ সহযোগিতা করেছে। এমন মানবিক প্রয়োগের উদাহরণ আরও সৃষ্টি করতে চাই।

এনজিও অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্সের কোর্স শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মো. জুয়েল আহমেদ সরকার বলেন, “এনজিও এন্ড ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর মত কোর্সে তত্ত্ব আর বাস্তবের মেলবন্ধন খুব জরুরি। আমি শিক্ষার্থীদের প্রায়োগিক দক্ষতা অর্জনের সুযোগ করে দেয়ার চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীরা সেই সুযোগ মানবিক কাজে ব্যবহার করেছে, এতে খুশি হয়েছি।”

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি