শিশুর শ্বাসকষ্ট-নিউমোনিয়া: কী করবেন
প্রকাশিত : ১৭:৪০, ৭ জানুয়ারি ২০১৮
সারাদেশে বইছে শীতের হিমেল হাওয়া। এতে রাজধানীতে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। এ সময় শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। মূলত নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা, কাশি, সর্দি অ্যাজমায় সিজনাল জ্বর বেশি দেখা দেয়। একটু সর্তক থাকলে এসব রোগ প্রতিকার পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান সবুজ।
শীতে নবজাতক ও শিশুদের রোগ ও তার প্রতিকার নিয়ে সম্প্রতি একুশে টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান।
একুশে টিভি অনলাইন: শীতে শিশুদের কি কি রোগ দেখা দেয়?
ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান সবুজ : শীত আসলে শিশুরা ভাইরাসজড়িত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। এসময় শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা, কাশি, সর্দি এ্যাজমা ও সিজনাল জ্বর বেশি দেখা দেয়। এছাড়া অপুষ্টির শিকার ও কম ওজনের শিশুরাই বিভিন্ন রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আর দরিদ্র পরিবারের শিশুরা সুষম খাদ্য এবং যত্নের অভাবে পুষ্টিহীনতায় ভোগে।
একুশে টিভি অনলাইন: নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের লক্ষণগুলো কি কি?
ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান সবুজ : প্রথমে শিশুর হালকা জ্বর, কাশি অথবা শ্বাসকষ্ট দিয়ে শুরু হয়। বয়স অনুযায়ী শ্বাস দ্রুত নেয়। বা স্বাভাবিক শ্বাস নিতে পারে না। খাবারে রুচি থাকে না। বমি ভাব দেখা দেয়। বুকে বা পেটে ব্যথা দেখা দেয়। নি:শ্বাস নেওয়ার সময় শিশুর নাক ফুলে উঠবে। শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে। মুখ ও ঠোঁটের চারপাশ নীল হয়ে যেতে পারে এবং কাঁপুনি দিয়ে জ্বরও আসতে পারে।
একুশে টিভি অনলাইন: নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ কিভাবে হয়?
ডা.মোহাম্মদ কামরুল হাসান সবুজ: এগুলো সংক্রামক রোগ। এ রোগের জীবাণু রোগাক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে একটি শিশুর মাধ্যমে অন্য শিশুর মধ্যে ছড়ায়। আক্রান্ত শিশু ব্যবহৃত জিনিস ও পোশাকের মাধ্যমেও অন্য শিশুরা আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া কিছু সময় রক্তের সাহায্যেও ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে।
একুশে টিভি অনলাইন: নিউমোনিয়া শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের প্রতিকার করণীয় কি ?
ডা.মোহাম্মদ কামরুল হাসান সবুজ: শিশুদের অবস্থা নির্ভর করে চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। লক্ষ্য রাখতে হবে যে, শিশু স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিচ্ছে কি না। বেশি সমস্যা দেখা দিলে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে, চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে অক্সিজেন বা শিরাপথে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজনও হতে পারে।
এই রোগ এড়াতে আমাদের এবং শিশুদের একটু বাড়তি সর্তক হতে হবে। ঘরের তৈরি খাবার ও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারে অত্যন্ত যত্নবান হতে হবে। শুধু শিশু না বড়দেরও পরিস্কার পরিচ্ছন থাকতে হবে। খাওয়ার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে পরিস্কার করতে হবে। এমনকি নাক পরিস্কার করার পর অবশ্যই হাত ভালভাবে পরিস্কার করতে হবে।
খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বাহিরে না যাওয়াই ভালো। কোনো শিশু অপরিণত বয়সে জন্ম নিলে অথবা স্বল্প ওজনের শিশুদের ব্যপারে অতিরিক্ত সতর্কতা জরুরি।
শিশু যাতে অপুষ্টির শিকার না হয়, সেজন্য শিশুর জন্মের প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এবং ৬ মাস পূর্ণ হলে শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়িতে তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে।
একুশে টিভি অনলাইন : আপনার মূল্যবান সময় দেওয়া জন্য ধন্যবাদ।
ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান সবুজ: একুশে টিভি পরিবারকেও ধন্যবাদ।
/ এআর /