ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শীতে খোস পাঁচড়া লক্ষণ ও প্রতিকার : ডা. হরশিত কুমার পাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪০, ১ ডিসেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৮:৪৪, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

শীত আসলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়, বিশেষ করে শীতে ত্বকে বেশি সমস্যা দেখা দেয়। বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া কারণে আমাদের শরীর শুষ্ক হয়ে যায়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চার দিয়ে ত্বক তৈলাক্ত রাখা যায়। অন্য সময়ের থেকে শীতকালে ত্বক নিয়ে একটু বাড়তি সর্তক থাকতে হবে।

শীতের একই পোশাক বেশির ভাগ সময় পরে থাকেন। কাপড়-চোপড় নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। এসব কারণে শীতে খোস পাঁচড়া বা স্ক্যাবিস বেশি দেখা যায়। স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে রোগ।

সারকপটিস স্ক্যাবি নামক ক্ষুদ্র মাইটের সংক্রমণে এটি হয়ে থাকে। এ পরজীবীটি উষ্ণ পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে। স্ত্রী মাইটগুলো ছয় সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি করে ডিম পাড়ে। পরে ডিমগুলো থেকে বাচ্চা মাইটের জন্ম হয়। শীতকালে শীতের পোশাক পরিধানের কারণে ত্বক উষ্ণ থাকে। এতে করে খোস পাঁচড়ার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয়। যেহেতু  এটা ছোঁয়াচে, সেহেতু খুব সহজেই পরিবারের অন্য সদস্যা আক্রান্ত হয়। একারণে সচেতন হতে হবে। মাইট শরীরের বাইরে অর্থাৎ কাপড়-চোপড়, কাঁথা-বালিশ, আসবাবপত্রে দুই থেকে তিনদিন বেঁচে থাকতে পারে। ফলে এ সময় এগুলো কেউ ব্যবহার করলেও হতে পারে খোস পাঁচড়া।

খোস পচড়া লক্ষণ:

সাধারণত শরীরের উষ্ণ অংশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্ক্যাবিস হয়ে থাকে। সাধারণত, হাতের আঙুলের ফাঁকে, কবজিতে, কনুই ও কনুইয়ের সম্মুখভাগে, স্তনের বোঁটায়, স্তন ও বুকের ত্বকের মধ্যস্থানে, নাভি, তলপেট এবং যৌনাঙ্গের আশপাশে এবং শরীরের ভাঁজগুলোতে। তা ছাড়া পুরুষদের ক্ষেত্রে যৌনাঙ্গের অগ্রভাগে এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হাত ও পায়ের তলায়, মাথায়, ঘাড় ও গালেও দেখা যায়। স্ক্যাবিস চেনার জন্য চিকিৎসকের দরকার নেই। রাতের বেলা অস্বাভাবিক চুলকানিই স্ক্যাবিসের প্রধান লক্ষণ। রাতের বেলা বিছানার গরমের জন্য মাইটগুলো চামড়ার নিচে চলাচল করতে শুরু করে। এতে রাতের বেলা বেশি চুলকানি অনুভূত হয়। চুলকানোর ফলে নখের আঁচড়ে চামড়া উঠে যায়। এ জন্য শরীরে আঁচড়ের দাগও পাওয়া যায়। আক্রান্ত স্থানে ত্বকের ওপর কালো সুতার মতো ছোট ছোট রেখা দেখতে পাওয়া যায়, এটাকে বারো বলে। এ রেখার শেষভাগে ছোট দানা অথবা পানিযুক্ত ছোট দানা থাকে। এমন দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে।

এদানাগুলোই মাইটদের আবাসস্থল। এখানেই এরা ডিম পাড়ে। মহিলাদের ক্ষেত্রে সাধারণত স্তনের বোঁটার চারপাশে ও পুরুষের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ ও যৌনাঙ্গে চুলকানিযুক্ত ছোট দানা দেখা যায়। অনেক সময় স্ক্যাবিসে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে। বছরের অন্য সময় এরোগ বেশি দেখা না গেলেও শীতের সময় এর রোগের লক্ষণ বেশি দেখা যায়।

লেখক: বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের অধ্যাপক  ডা. হরশিত কুমার পাল।

 

 টিআর/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি