শোকর গুজার কেন হবেন?
প্রকাশিত : ১৩:৫৮, ৮ মে ২০১৯
আপনি তো এখনও দম নিতে পারছেন, এখনও বেঁচে আছেন- এটিই হতে পারে শুকরিয়া আদায়ের প্রধান একটি কারণ। বেঁচে আছেন মানে আপনার স্বপ্নগুলো পূরণের জন্য কিছু করার সুযোগ রয়েছে।
দেহের কথাই ভাবুন, ৫ শতাধিক মাংসপেশি, ২ শতাধিক হাড়, ৮০ থেকে ১০০ ট্রিলিয়ন দেহকোষের সমন্বয়ে গঠিত এই শরীরের প্রতিটি কোষে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে শিরা ও ধমনীর ৬০ হাজার মাইল দীর্ঘ পাইপ লাইন। রয়েছে ফুসফুসের মতো রক্ত শোধনাগার।
আপনার হার্ট কোনোরকম ক্লান্তি বা প্রতিবাদ ছাড়াই প্রতিদিন প্রায় লক্ষবার স্পন্দনের মাধ্যমে ১৬ শত গ্যালনেরও বেশি রক্ত পাম্প করে দেহকে সচল রাখছে। রয়েছে চোখের মতো ছোট্ট লেন্স, যা দিয়ে বিশাল পৃথিবী দেখা যায়।
আপনার মনোদৈহিক কার্যক্রম পরিচালনাকারী মস্তিষ্ক হচ্ছে যে কোনো কম্পিউটারের চেয়েও কমপক্ষে ১০ লক্ষ গুণ বেশি শক্তিশালী। কম্পিউটারের দামের অনুপাতে আপনার মস্তিষ্কের মূল্য কমপক্ষে ৫ হাজার কোটি টাকা।
বিশ্বের সাড়ে ৬ শত কোটি মানুষের মধ্যে আপনি অনন্য। আপনার মতো হুবহু দ্বিতীয় কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্রষ্টা আপনার মতো আর কাউকেই সৃষ্টি করেননি। তিনি আপনাকে এমন কিছু মেধা দিয়েছেন যা আর কাউকে দেননি।
যত নিজের দিকে তাকাবেন ততো দেখবেন আপনার সাফল্যের জন্যে যে যে উপকরণ প্রয়োজন তার সবই আপনার রয়েছে। এ উপকরণগুলো ব্যবহার করেই আপনি নির্মাণ করতে পারেন আপনার পৃথিবী।
শুকরিয়ার প্রাপ্তি:
১. শুকরিয়া অস্থির মনকে স্থির করে, মন যখন প্রশান্ত থাকে মস্তিষ্ক তখন সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী চিন্তা-পরিকল্পনা কাজে লাগানো সহজ হয়। ২. অতীতের গ্লানি আর ভবিষ্যতের আশঙ্কা থেকে মুক্ত করে মনকে বর্তমানে নিয়ে আসে।
৩. শুকরিয়া অনুভূতি সচেতন করে ব্যক্তির সামর্থ্য, পারিপাশ্বিক উপায়-উপকরণ ও জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে। ৪. লালিত অভ্যাসচক্রের ক্ষতিকর দিকগুলো নিজের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পরিচয় ঘটে মনের বিশাল সম্ভাবনার সঙ্গে। ৫. সবকিছুতে পূর্ণতার অনুভূতি নিয়ে আসে। ৬. শুকরিয়া মনে আনন্দানুরণন সৃষ্টি করে। এ অনুরণন মেধাকে কাজে লাগিয়ে রোগকে সুস্থতায়, অশান্তিকে প্রশান্তিতে, ব্যর্থতাকে সাফল্যে রূপান্তরের প্রক্রিয়া বেগবান করে।
৭. আশাবাদী করে, আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, কাজের প্রেরণা যোগায়, অজুহাত কমায়। ৮. ইতিবাচক ব্যক্তিত্ব নির্মাণ করে। ৯. শুকরিয়া ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে, পরবর্তী সাফল্যকে আমন্ত্রণ জানায়। ১০. শোকর গুজার মনই প্রশান্ত মন। প্রশান্তমন সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারে করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে, সহজেই সংযুক্ত হয়ে যায় শক্তির মূল উৎসের সঙ্গে- যেখান থেকে উৎসারিত হয় সাফল্যের ফল্গুধারা।
(আলোকিত জীবনের হাজার সূত্র কোয়ান্টাম কণিকা)
এএইচ/
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।