ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

সস্তায় আলুটিলা ভ্রমণ

সাদ্দাম উদ্দিন

প্রকাশিত : ১৩:৩৩, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১৫:০৭, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

খাগড়াছড়ি জেলার আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে অবস্থিত আলুটিলা গুহা একটি প্রাকৃতিক গুহা। স্থানীয়দের কাছে আলুটিলা গুহা ‘মাতাই হাকড়’ বা ‘দেবতার গুহা’ নামে পরিচিত। আলুটিলা গুহার দৈর্ঘ্য ৩৫০ ফুট। আলুটিলা গুহার এক প্রান্ত দিয়ে ঢুকে অন্য প্রান্ত দিয়ে বের হতে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। 

গুহার ভেতরে সব সময় অন্ধকার থাকে এজন্য গুহায় প্রবেশ করতে হলে মশালের প্রয়োজন হয়। গুহার প্রবেশ করার সিড়ির পাশেই ছোট আকারের মশাল কিনে পাওয়া যায়। চাইলে মশালের বিকল্প হিসাবে মোবাইল টর্চ বা চার্জ লাইট ব্যাবহার করতে পারেন। তাছাড়া গুহার অভ্যন্তরের পাথর গুলো বেশ পিচ্ছিল তাই ভালো গ্রিপের জুতা পড়ে যাওয়া উচিত।

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের ভিতরেই আলুটিলা গুহার অবস্থান, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশ ফি ৪০ টাকা। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে লাভ ব্রিজ সহ নানা স্থাপনা রয়েছে, আর সন্ধ্যায় রয়েছে মনোরম আলোকসজ্জার ব্যবস্থা।

আলুটিলার যথেষ্ট পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, স্থানীয়রা জানায় পর্যটন এলাকায় দর্শনার্থীরা নিশ্চিতে ঘুরে বেড়াতে পারেন। খাগড়াছড়ির মেয়র জানান আগামীতে খাগড়াছড়ি পৌরসভা পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিবেন। যে কোন সমস্যায় স্থানীয়দের সহযোগীতা নিতে পারেন। স্থানীয়রাও পর্যটকদেরকে অনেক আন্তরিক ভাবে অভ্যর্থনা জানায়।

কিভাবে যাবেন

খাগড়াছড়ি শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় আলুটিলা গুহা অবস্থিত।

আলুটিলা গুহা দেখতে যেতে চাইলে প্রথমে খাগড়াছড়ি যেতে হবে হবে।

ঢাকা হতে শান্তি, হানিফ, এস আলম, শ্যামলী, ইকোনো এবং ঈগল পরিবহনের এসি/নন-এসি বাসে চড়ে সরাসরি খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়ার পরিমান নন এসি ৫২০ টাকা এবং এসি ৮৫০ থেকে ১২০০ টাকা। তারপর খাগড়াছড়ি থেকে স্থানীয় পরিবহণ বাস , মোটরসাইকেল অথবা চান্দের গাড়িতে যেতে পারেন। খাগড়াছড়ি শহর থেকে চান্দের গাড়ি, সিএনজি, মোটরবাইক অথবা লোকাল বাস পাওয়া যায়। আপনারা একসাথে কতজন যাবেন সেই অনুযায়ী সুবিধামত পরিবহণ ব্যবস্থা ঠিক করে নিতে হবে।

খাগড়াছড়ি থেকে সস্তায় আলুটিলা গুহায় যেতে চাইলে বাসে যেতে পারেন ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ৪০ টাকা, আর মোটরসাইকেলে যেতে ভাড়া লাগবে ১০০ টাকা।

কোথায় খাবেন

সরারাত জার্নি করে সকালে খাগড়াছড়ি পৌঁছে সকালের নাস্তা সেরে হোটেল খুঁজতে বেরিয়ে পরবেন। খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর এবং বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া পানথাই পাড়ায় অবস্থিত ‘সিস্টেম রেস্তোরা’ তে কফি, হাঁসের কালাভূনা, বাশকুড়ুল এবং ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।

কোথায় থাকবেন

খাগড়াছড়ি শহরে রাত্রি যাপনের জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। রুম দেখে দরদাম করে আপনার পছন্দমত হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। হোটেলে ভেদে এক রাত অবস্থানের জন্য আপনাকে ৪০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে। যদি খুবই কম খরচে থাকতে চান তাহলে শাপলা চত্বরের আশেপাশে কিছু বোর্ডিং ধরণের হোটেল আছে সে গুলোতে ৩০০-৪০০ টাকায় থাকতে পারবেন।

সতর্কতা ও টিপস

গুহা ও আশেপাশের পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন।

 গুহার ভিতর বেশ পিচ্ছিল, তাই ভাল গ্রিপের জুতা পড়া উচিত এবং সাবধানে হাটা উচিৎ।

 গুহার ভিতর উচ্চস্বরে কথা ও উল্লাস করা থেকে বিরত থাকুন।

মশাল নিয়ে গেলে তা গুহার ভিতর না ফেলে বাইরে নিয়ে এসে নির্দিষ্ট স্থান ফেলুন।

খাগড়াছড়িতে পৌছে শাপলা চত্তরের পাশেই ওয়াংড বোদ্ধা মন্দির ঘুরে দেখেতে পারেন, ।

আর আলুটিলা গুহার কাছেই রয়েছে রিসাং ঝর্ণা। আলুটিলায় ঘুরতে এসে এত কাছের ঝর্ণাটি না দেখে চলে যাওয়া মোটেও ঠিক হবে না।

এছাড়া আলুটিলা গুহার কাছেই বৌদ্ধ মন্দির ও রিসাং ঝর্ণা। তাই সবচেয়ে ভালো আপনি যদি একসাথে এই সব গুলো জায়গা ঘুরে দেখে নিন। গাড়ি ঠিক করার

সময় কোথায় কোথায় ঘুরবেন তা বলে নিবেন। সব গুলো জায়গা ঘুরতে সাধারণত চান্দের গাড়ি (১০-১৫ জনের জন্যে)

রিসার্ভ করতে লাগবে ২০০০-৩০০০ টাকা, সিএনজি রিসার্ভ করতে লাগবে ৮০০-১০০০ টাকা। এই জায়গা গুলো ঘুরে

দেখতে ৪-৫ ঘন্টা লাগবে। আর অবশ্যই ভাড়ার জন্যে দরদাম করে নিবেন।

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি