ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

সামনে ওটিটির সময় আসছে: আরিয়ান

একুশে টেলিভিশন 

প্রকাশিত : ২০:২৯, ১ এপ্রিল ২০২১ | আপডেট: ২২:৫৬, ১৮ এপ্রিল ২০২১

প্রেমের টানে সেই সিলেট থেকে ঢাকায় চলে আসে ফারিয়া। ইন্টারনেটে পরিচয় হওয়া প্রেমিকের পাত্তা নেই রাজধানীতে। ওই কঠিন সময়টাতে ফারিয়া পাশে পায় একেবারেই অচেনা যুবক; কবিরের। কিন্তু শহরটাযে অচেনা। গল্পটা এভাবেই এগিয়ে চলে। ফারিয়ার চরিত্রে তাসনিয়া ফারিন আর কবিরের চরিত্রে অপূর্বের অভিনয় ছিল অনবদ্য।

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভে প্রচারিত হয় ‘তোমার টানে।’ প্রচারের পর থেকেই বেশ জনপ্রিয়তা পায় মিষ্টি এই প্রেমের গল্পটি। আর তা পরিচালনা করেছেন জনপ্রিয় পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান। 

আসছে ঈদ। পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার মিজানুর রহমান আরিয়ান এখন বেশ ব্যস্ত। এছাড়া সামনে জি ফাইভের সাথেও কাজ করবেন তিনি। টিভি ও রূপালি পর্দা ছাড়িয়ে এখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে চলে যাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। সেখানে বাংলাদেশের কন্টেন্টও পৌঁছে যাচ্ছে বিশ^বাসীর কাছে। আরিয়ান মনে করেন আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে চলে যাবে। আর এখনই সময় পরিচালকসহ এই অঙ্গনে যারা আছেন তাদের গুছিয়ে উঠার। আরিয়ান মনে করেন, তিনটি বিষয় নিয়ে আসবে সাফল্য, জয় করা যাবে চ্যালেঞ্জ। তা হলো, ভালো গল্প, দলগত প্রচেষ্টা আর সততা। এসব নিয়েই কথা হচ্ছিল একুশে টিভি অনলাইনের সাথে। 

ইটিভি অনলাইন : ব্যস্ততা কেমন এখন?

আরিয়ান : সামনে ঈদুল ফিতর। ঈদের জন্য নাটক করতে হবে। হাতে স্ক্রিপ্ট আছে। কাজও চলছে। এ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে।

ইটিভি অনলাইন:  জি ফাইভে দেখা যাচ্ছে আপনার পরিচালিত নাটক ‘তোমার টানে।’ বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।

আরিয়ান: ভালো লাগছে শুনে। দর্শকরা মিষ্টি এই প্রেমের গল্পটাকে পছন্দ করেছেন। এটা জি ফাইভের অরিজিনাল কন্টেন্ট নয়। এটা টিভির জন্য করা হয়েছিল। পরে জি ফাইভ এটা তাঁদের প্ল্যাটফর্মে দিয়েছে। এবং জি ফাইভ কর্তৃপক্ষই আমাকে জানিয়েছেন তাঁরা বেশ ভালো রেসপন্স পাচ্ছেন দর্শকদের কাছ থেকে। শুনে ভালো লাগছে।

ইটিভি অনলাইন: সামনে জি ফাইভের অরিজিনাল কন্টেন্টে কাজ করবেন?

আরিয়ান: হ্যাঁ। আমি প্রস্তাব পেয়েছি। আর এ নিয়ে কথাবার্তাও হচ্ছে। আশা করছি খুব শিগগিরই কাজ শুরু করব।

ইটিভি অনলাইন: আরিয়ানের নাটকে বার্তা থাকে। সেটা কী ইচ্ছে করেই দেওয়া হয়?

আরিয়ান: আমি কোনো নাটকে জোর করে কোনো মেসেজ দেওয়ার কথা ভাবি না। মেসেজ দেওয়ার উদ্দেশে গল্পটা করি না। কিন্তু গল্পের মাধ্যমে অডিয়েন্স মেসেজ পেয়ে যায়। আমি জোর করে বলি না।  একটা গল্পের মধ্য দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করি এটা করলে তোমার ভালো হবে, এটা করলে খারাপ হবে। আমি কখনোই বলি না, এটা তুমি করো না। আমি গল্পটা বলে যাই। গল্পের যে জিনিসটা ভালো লাগলো, সেটা সে গ্রহণ করল, যেটা খারাপ লাগলো সেটা সে অ্যাভয়েড করল।’

ইটিভি অনলাইন: ওটিটির দিকে ঝুঁকছে দর্শক। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

 আরিয়ান : ওটিটির বিষয়টি অবশ্যই ভালো ভাবে দেখছি। সব পরিচালকরাই এটা ভালো ভাবে দেখবে। প্রপার বাজেট পাওয়া যাচ্ছে। স্বাধীনতা পাওয়া যাচ্ছে। শুটিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাচ্ছে। তাই নিজের মনমত গল্পটা বলার চেষ্টা করা যাচ্ছে।

ইটিভি অনলাইন:   সেক্ষেত্রে কন্টেন্টের মানের দিকটিও ভালো করা প্রয়োজন। তাই না?

আরিয়ান: অডিয়েন্স টাকা দিয়ে হলেও ভালো কন্টেন্ট দেখতে চায়। ভালো কন্টেন্টের জন্য প্রথমত একটা গল্প লাগে, এরপর ক্যাপ্টেন অব দি শিপ- ডিরেক্টর লাগে, আর্টিস্ট লাগে, প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট যেমন লাগে এর মধ্যে প্রয়োজনীয় একটা ডিপার্টমেন্ট হচ্ছে টাকা। খুব স্বাভাবিকভাবে যে কাজটা আমি সময় নিয়ে করতে পারবেন সে কাজটা ভালো হয়। একজন ডিরেক্টরকে যদি নাটক করে চলতে হয় তাহলে তাকে অনেক বেশি কাজ করতে হয়। ইয়ারলি অনেক কাজ করতে হয়, মান্থলি অনেক কাজ করতে হয়। একজন ডিরেক্টর যদি মাসে তিনটা কাজ করে, সে যদি একটা কাজে ওই এফোর্ট দেয়ার সুযোগ পেত কাজটা আরো ভালো হতো।

সামনে ওটিটির সময় আসছে। এর প্রধান কারণ এখানে সিস্টেম আছে। অডিয়েন্স টাকা খরচ করে ভালো কন্টেন্ট দেখছে। ডিরেক্টরদেরও দায়বদ্ধতা দাঁড়াচ্ছে যে আপনার কন্টেন্ট তখনই মানুষ টাকা দিয়ে দেখবে যখন কন্টেন্টটা ভালো হয়।

ইটিভি অনলাইন: জি ফাইভের মাধ্যমে ভারতসহ আন্তর্জাতিক পরিমÐলে যাবে কন্টেন্ট। এ নিয়ে কিছু বলুন।

আরিয়ান: ভারতের অডিয়েন্সের সাথে আমি পরিচিত অনেক আগে থেকেই। যখন আমি জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করি। আমি যখন ইউটিউবে আমার কন্টেন্টের ১০০ টা কমেন্ট হিসাব করি সেখানে মিনিমাম ২০ শতাংশ ভারতীয় দর্শকের। তখনই বুঝতে পারি আমাদের একটা সাইডের দর্শক ভারতেও দাঁড়াচ্ছে।

ইটিভি অনলাইন: ভালো কন্টেন্টের জন্য কী করা উচিত?

আরিয়ান: একটা সুন্দর গল্পকে সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য একটা ভালো টেকনিক্যাল টিম দরকার। স্ট্রং টিম কিন্তু গল্পটাতে ডেপথ নেই, তাহলে হবে না। প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হবে। ফিল্ম মেকিংয়ে ১৬ থেকে ২০টি ডিপার্টমেন্ট থাকে। প্রত্যেকটা ডিপার্টমেন্টের এফোর্টে একটা কন্টেন্ট ভালো হয়। প্রথমত চাই গল্প। গল্পের পর প্রতিটি ডিপার্টমেন্টকে সিনসিয়ার হতে হবে।

এই এক দুই বছরের মধ্যে ওটিটি দাঁড়াবে। এই সময় আমরা যারা পরিচালক আছি আমাদের আরেকটু বেশি সিনসিয়ার হওয়ার দরকার এবং কাজের প্রতি আরো বেশি ডেডিকেশন থাকা দরকার।’

ইটিভি অনলাইন: জি ফাইভের মত প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের কন্টেন্টের প্রতি আগ্রহ হচ্ছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের কন্টেন্ট এখন বিশ্বপরিমণ্ডলে দ্রুত ছড়িয়ে যাবে। নতুন তরুণ-তরুনীরা পরিচালনায় আগ্রহী হচ্ছে। তাঁদের জন্য কী বলবেন?

আরিয়ান: আমাদের সংকট স্ক্রিপ্টরাইটারের। বেশিরভাগই ডিরেক্টরকে লিখতে হয়। গল্প ভাবার ব্যাপকতাটাই কমে গেছে। সবাই ভাবছে ছোট স্কেলে করতে হবে। বড় স্কেলে গল্প ভাবা যাচ্ছে না। এখন ওটিটিতে যখন দেখবে বড় গল্প হচ্ছে, বড় আয়োজনের গল্প হচ্ছে, তখন আবার বড় গল্প ভাবার, চ্যালেঞ্জিং গল্প ভাবার সময় আসবে। একটা গল্প নিয়ে হয়তো ২০ দিন, ৩০ দিন শুটিং করা যাবে, তখন স্ক্রিপ্টরাইটাররা বড় মানের গল্প ভাবার চেষ্টা করবে। যখন বাজেট আসবে তখন শুটিং টিম, টেকনিক্যাল টিম স্ট্রং হবে, আরাম করে শুটিং করা যাবে। ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

সব ধরণের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়ার পরও যে জিনিসটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে কন্টেন্ট বানানোর ক্ষেত্রে যে ডিপার্টমেন্টগুলো কাজ করে সে ডিপার্টমেন্টগুলোর হেডের সততা।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি