শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে
সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে চিরতরে নির্মূলের শপথ
প্রকাশিত : ১৮:০৩, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০
রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনকালে স্বেচ্ছাসেবক লীগ-এর নেতৃবৃন্দ।
‘স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশকে যারা মানে না, তাদের এদেশে রাজনীতি করার কোনও অধিকার নেই। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে বাংলার মাটি থেকে চিরতরে উৎখাত করাই আমাদের শপথ।’
আজ ১৪ ডিসেম্বর (সোমবার) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ-এর নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
এর আগে সকাল ৯টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে, সকাল সাড়ে ৯টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে এবং সকাল ১০টায় রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন সংগঠনটির সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু'র নেতৃত্বে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এসময় সংগঠনের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন- জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমরা ভুলবো না। তিনি বলেন, এইদিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হারিয়েছে জাতি। বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে অত্যান্ত বেদনাদায়ক দিন ১৪ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় যখন নিশ্চিত, ঠিক তখনি পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে ধরে এনে চোখ বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আরও বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরপরই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিকট আত্মীয়রা মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে তাদের গলিত ও ক্ষত বিক্ষত লাশ খুঁজে পায়। বুদ্ধিজীবীদের লাশে ছিল বর্বোরচিত নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন। চোখ, হাত-পা ছিল বাঁধা। কারেও কারেও শরীরে ছিল একাধিক গুলির চিহ্ন। অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে। লাশের ক্ষত চিহ্নের কারণে অনেকেই প্রিয়জনের মৃতদেহ শনাক্ত করতে পারেননি।
নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন, ১৯৭২ সালে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সঙ্কলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক’-এর সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের লেখা থেকে জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন। জাতি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের চিরদিন বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন- স্বাধীনতার সূর্য উদিত হওয়ার পূর্ব মুহুর্তে পাকস্তানী হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার আল বদর আল শামস মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রকাশ্য সহায়তায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে মিরপুর ও রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে রেখে যায়।
তিনি বলেন, তারা জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই বর্বোরচিত ইতিহাসের জঘণ্যতম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থাপিত সকল প্রশ্ন ১৯৭১ সালে সমাধান হয়েছে! সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনার ধারাবাহিক উন্নয়ন অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে নতুনভাবে পুরাতন মিমাংসিত প্রশ্নের অবতারনা করে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা দেশ ও জাতির শত্রু। তাদের প্রতিরোধ করতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদাসর্বদা জাগ্রত।
এসময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয়, মহানগর উত্তর দক্ষিণের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এনএস/
আরও পড়ুন