সিআরবি রক্ষায় চট্টগ্রামবাসী কি কি করতে পারে?
প্রকাশিত : ১৪:০০, ৩১ জুলাই ২০২১
ঐতিহ্যের সিআরবি, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদের স্মৃতিবাহী শতাব্দীপ্রাচীন বৃক্ষরাজি সমাকীর্ণ হাজারো কীটপতঙ্গের নিরাপদ বাসভূমি, জীববৈচিত্র্যের বিচরণে মধুর, চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত জনগণের প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক হাসপাতাল বাঁচানোর সুপরামর্শ যদি কোনো ধান্ধবাজ গোষ্ঠী গ্রহণ না করে উপেক্ষাই করতে থাকে, তাহলে, ‘সোজা আঙ্গুলে ঘি ওঠে না’- সেই সুপ্রাচীন প্রবাদবচনটিকে স্মরণ করে জনগণের আঙ্গুল বাঁকাতে তো হবেই।
তার আগে আর কী করার আছে তা বোধহয় একটুখানি ভেবে দেখা যায়। আমরা জানি না, চট্টগ্রাম শহরের শ্বাস প্রশ্বাসের ফুসফুস, জনগণের ক্ষণিকের অবসরে শ্রান্তি দূরীকরণ স্থান, মনোধ্যানে নিবিষ্ট হয়ে থেকে প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে বসে চিকিৎসা গ্রহণ এবং খেলাধুলা ও শিল্প সংস্কৃতি চর্চার এই প্রাণকেন্দ্র, এককালের আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে বোর্ডের কেন্দ্রীয় অফিস বিল্ডিং সংলগ্ন অঞ্চল সাত রাস্তায় মোড়সহ সমগ্র এলাকাটি যে এখন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যিক সংরক্ষিত সম্পদ, এই গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্পূর্ণভাবে অন্ধকারে রাখা হয়েছে কি না!
তাই, ধারণা করি আমাদের আজকের গণজাগরণের ধারাকে সঠিক পথে পরিচালনার লক্ষ্যে কিছু করণীয় রয়েছে।
প্রয়োজনে, চট্টগ্রামের ভালোমন্দের দেখভাল করায় অঙ্গীকারাবদ্ধ ও সবধরনের উন্নয়নের দায়িত্ব গ্রহণকারী আমাদের বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, পরিবেশে ও প্রকৃতি সুরক্ষার অগ্রসেনানী, সকলের নির্ভরতার আধার প্রিয়নেত্রী শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে চট্টগ্রামে নিয়ে এসে সিআরবি'র বৃক্ষময় নয়নসুখ সবুজ ক্লোরোফিল সমৃদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহ অঞ্চল ও উৎপাদন এলাকায় ছোট ছোট টিলার চূড়ায় সুপ্রাচীন কালের পরিকল্পিত জনবসতির দৃশ্য, পাখ-পাখালির বসবাসে ভিন্ন ধরনের সংঙ্গীতময় প্রাকৃতিক-সামাজিক-নান্দনিক পরিবেশে ক্লান্ত জনগণের দু'দণ্ডের শান্তি উপভোগের শান্ত নিঃশঙ্ক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবিস্মরণীয় নৈসর্গিক সৌন্দর্য ঘুরে ফিরে দেখানোর আয়োজন করাটাও বর্তমানে সৃষ্ট দ্বন্দ্বমুখর অবস্থার প্রেক্ষাপটে দরকার।
বিশ্বাস করি, দেশ ও জনগণের কল্যাণের কথা এদেশের যেই প্রধানমন্ত্রীর হৃদয়ে নিয়ত বহমান, তিনি তাঁর প্রিয় জনগণের এমন আমন্ত্রণকে অগ্রাহ্য করবেন না। আর, বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সমস্যার প্রকৃত সমাধানের খোঁজে মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীরও এই সফরের সবিশেষ আবশ্যকতা রয়েছে।
আশা করছি, তাঁর জনকল্যাণকর পদক্ষেপে এই বিপন্ন ক্ষতবিক্ষত চট্টগ্রামে কবিতার স্নিগ্ধ সুবাতাস বয়ে যাবে। প্রতিক্রিয়াশীল পুঁজির ষড়যন্ত্র ও লুটপাটের অনৈতিক ব্যবসাবুদ্ধির আগ্রাসন থেকে চট্টগ্রামবাসীকেও মুক্তি দেবে, রক্ষা করবে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও পরিবেশ ধ্বংসকারীদের থোঁতা মুখগুলোকে ভোঁতা করে দেবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের ও পদক্ষেপের ছায়ায় সুফল প্রাপ্তির মাধ্যমে এই নিরানন্দের বঞ্চিত চট্টগ্রামে আনন্দকল্লোলের গণ-সুনামি ঘৃণ্যদের লেনদেনের সকল অপকর্ম ও অপরাধকে ভাসিয়ে নিয়ে যবে।
জানি না, বিনীত আশার এই ক্ষুদ্র রচনাটি বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসবে কিনা।
তবে জানি, যে কোনো জনকল্যাণকামী সরকারের লক্ষ চক্ষু সদা জাগ্রত থাকে। এ সরকার জনগণের ভরসার সরকার। গণশত্রুদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের মানুষ এখনও এই সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণী ভূমিকারই প্রতীক্ষা করে আছে।
লেখক : কবি ও সাংবাদিক
এসএ/
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।