ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সিসা দূষণে প্রতিবছর প্রাণ যাচ্ছে ৩১ হাজার মানুষের (ভিডিও)

শিউলি শবনম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০০, ৫ জুন ২০২২

সিসা দূষণে প্রতিবছর প্রাণ যাচ্ছে প্রায় ৩১ হাজার মানুষের। আর বহু মানুষ ভুগছেন অ্যাজমা, হাঁপানিসহ শ্বাসকষ্টে। সরকারি তদারকির অভাবে ঢাকার আশেপাশে গড়ে ওঠেছে অবৈধ ২৭০টি ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানা। যদিও পরিবেশমন্ত্রীর দাবি, সিসা দূষণ ঠেকাতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।

বুড়িঙ্গার তীর ঘেঁষে কামরাঙ্গীরের ঘনবসিতপূর্ণ এলাকাটিতে বছরের পর বছর ধরে কোনরকম সতর্কতা ও নিয়ম না মেনেই কারখানায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে পোড়ানো হচ্ছে সীসা ও দস্তার মত ক্ষতিকর উপাদান। বাংলাদেশের বিভিন্ন লোকালয়ে এরকম উন্মুক্তভাবে সীসা উচ্চ তাপমাত্রায় গলানোর ফলে বাতাসে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে।

কারখানার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া আর তাপে ঘরের দরজা-জানালা, টিনের ছাউনি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে শ্বাসকষ্ট, তীব্র মাথা ব্যথার মতো নানা রোগে আক্রান্ত। কেউ কেউ ভুগছেন ত্বকের সমস্যায়।

স্থানীয়রা জানান, “আশপাশে অনেক ধোঁয়া হয়, এটা বিষাক্ত ধোঁয়া। সন্তানাদি নিয়ে বাসাবাড়িতে থাকার মত নয়। ধোঁয়া এসে অন্ধকার হয়ে যায়। ছয় মাস পরপর ঘরের টিনগুলো পরিবর্তন করতে হচ্ছে।”

এসডো এবং পিওর আর্থের তথ্য বলছে, শুধুমাত্র ঢাকা ও এর আশেপাশের লোকালয়ে গড়ে উঠেছে ২৭০টি অনুমোদনহীন রিসাইকেল ব্যাটারি কারখানা। সারাদেশে এই সংখ্যা এক হাজারের উপর। যা মানুষ ও পরিবেশের জন্য উদ্বেগজনক বলছেন গবেষকরা।

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন এসডো’র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, “এটা এমন যে বাসাবাড়ির ছাদেও আছে। ২৭০টির মতো ঢাকার আসপাশেই দেখেছি। কিন্তু এটা সংখ্যায় আরও বেশি হবে।”

ইউনিসেফের গবেষণা বলছে, যানবাহন বাড়ায় সিসা-এসিড ব্যাটারির অনিরাপদ পুর্নব্যবহার বেড়েছে অন্তত তিনগুণ। অপরিশোধিত সিসা এভাবে উন্মুক্ত চুল্লিতে গলানোর ফলে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান। 

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটের গবেষণায় দেখা গেছে, শুধুমাত্র সীসা দূষণেই প্রতিবছর দেশে প্রাণ যাচ্ছে ৩০ হাজার ৭৭৭ জনের। যারা বেঁচে আছেন তারা ভূগছেন অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সারের মত নানা রোগে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “চামড়া-চোখে সমস্যা হয়। কারও কারও চোখের দৃষ্টি শক্তি কমে আসছে। সীসা পয়জনিং যাতে না হয় তাতে আমাদের সচেতন হতে হবে।”

এদিকে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সিসা দূষণ ঠেকাতে সরকার দৃঢ় অবস্থানে বলে জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী।

পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, “সীসা বায়ুদূষণ করছে, সে কারণে আমাদের পরিবেশের এনফোর্সমেন্ট সবসময় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

ব্যবহৃত সিসা অ্যাসিড ব্যাটারির পুনর্ব্যবহারে আর্ন্তজাতিক মানের নীতিমালা প্রণয়নের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি