সোনারগাঁও হোটেলে জমে উঠেছে থাই পণ্যের মেলা
প্রকাশিত : ১৬:৩২, ২৫ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৬:৩৫, ২৫ এপ্রিল ২০১৮
থাইল্যান্ডের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে জমে উঠেছে থাই মেলা। বাংলাদেশের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে থাই খাবারের নাম চলে আসে। থাই পণ্য-দ্রব্য এবং খাবার-দাবারের ক্ষেত্রে পৃথিবীব্যাপী সুনাম রয়েছে। এছাড়া সৌন্দর্য চর্চায় দেশটির প্রসাধন সামগ্রীর কদরও এখানে বেশ।
এছাড়া ক্যান বা প্যাকেটজাত খাদ্য পণ্যের ক্রেতাও রয়েছে এদেশে। এসব পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়ে চলছে চার দিনব্যাপী থাই পণ্যের মেলা।
থাইল্যান্ড সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উন্নয়ন বিভাগ (ডিআইটিপি) আয়োজিত এই মেলায় রয়েছে সেদেশে তৈরি করা প্রায় ১৮ ক্যাটাগরির বাহারি পণ্যের পসরা। কিছু পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে শুধু পরিবেশক সংগ্রহের জন্য। থাইল্যান্ডের উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি থাই পণ্য আমদানি করে দেশের বাজারে বিক্রি করছে এমন স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও এ মেলায় অংশ নিয়েছে।
এবারের মেলায় থাইল্যান্ডের ৪৫টি ও বাংলাদেশের ২৭টি প্রতিষ্ঠান থাই পণ্যের প্রদর্শনী করছে। মেলায় স্টলের সংখ্যা ৭৯টি। এছাড়া মেলায় প্রবেশের জন্য লাগবে না কোনো ধরনের প্রবেশ মূল্য।
আজ ছিল মেলার দ্বিতীয় দিন। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, থাইল্যান্ডের উদ্যোক্তাদের অনেকেই এরইমধ্যে এ দেশে ডিলারের মাধ্যমে তাঁদের পণ্য বাজারে বিপণন করছেন। কোনো কোনো উদ্যোক্তা প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছেন ডিলার সংগ্রহের জন্য।
মেলায় অংশ নেওয়া থাইল্যান্ডের উদ্যোক্তা হারিন চাওলার প্রতিষ্ঠানের নাম টিনসেলস। প্রতিষ্ঠানটি মূলত ফল ও মাছজাতীয় পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে টিনের কৌটায় ভরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করে থাকে।
চাওলা জানান, বাংলাদেশে তাঁর দুই-তিনজন ডিলার রয়েছে যাঁরা এই পণ্যগুলো আমদানি করে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে সরবরাহ করে থাকেন। মাছের ক্যানগুলোর চাহিদা তুলনামূলক বেশি বলে জানান তিনি।
পুরান ঢাকার চকবাজারের প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শাহেদ চৌধুরী বলেন, আমরা মূলত চুলের সাজগোজের আইটেম সামগ্রী থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করি। দেশের বিভিন্ন স্থানের খুচরা বিক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে পণ্যগুলো কিনে নিয়ে সারা দেশে বিক্রি করে থাকে। থাই এ পণ্য গুলো গুণে মানে অনন্য তাই ক্রেতা চাহিদা বেশ ভালো। মূলত আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য আমরা এ মেলায় অংশ নিয়েছি। আমি আশা করছি, আগামি দুই আরও ভালো বিক্রি হবে।
মেলায় আশা ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের চিকিৎসক ড. মালিহা আলম বলেন, আমি শিশুদের জন্য খেলনা, জুস কিনেছি। এছাড়া কিছু গিফট আইটেম নিয়েছি। এই মেলায় দাম রিজনাবল হওয়ায় বেশ কেনাকাটা করলাম। মেলা ঘুরে বেশ ভালো লেগেছে, এখানকার পণ্যের গুণগতমান ভালো।
থাই উদ্যোক্তা বুডি লেইক জানান, ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমাদের প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরণের ব্যাগ প্রস্তুত করে থাকে। তাই ব্যাগগুলো কালারফুল আর টেকসই। সেই সঙ্গে দামও রিজনেবল। বিক্রি গতকালের চেয়ে আজ ভালো।
এছাড়া মেলায় রয়েছে পণ্যের উপর মূল্যছাড়, নেই কোনো মূসক। মেলায় থাইল্যান্ডের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাবারের থাই স্লিপার, থাই চটি জুতা, প্লাস্টিকের জার, আকর্ষণীয় নকশার হটপট, কাজুবাদামের প্যাকেট, আপেল-কমলার জুস, চকলেট, থাই চানাচুর, কসমেটিকস, মেয়েদের চুলের বাহারি ক্লিপ, ওড়না, পার্স, ওয়ালেট, ফেসিয়াল পণ্য, গৃহ-সজ্জার উপকরণ,ব্যাথা নাশক মলম, সুগন্ধির ওপর মূল্যছাড় দিচ্ছে। মেরি ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির বোনসার ব্র্যান্ডের থাই পারফিউমের একটি কিনলে ২০০ টাকা, দুইটি কিনলে ৩০০ টাকা এবং চারটি কিনলে ৫০০ টাকা দাম রাখছে বিভিন্ন পরিবেশক প্রতিষ্ঠান।
থাই-বিমস্টেকের স্টলে প্রদর্শিত হচ্ছে থাই ফল। এসবের মধ্যে রয়েছে-আম, পেঁপে, রাম ভুটান, ড্রাগন। এছাড়া রয়েছে জ্যাম-জেলির আচার, মাখন, পনির, সামুদ্রিক মাছের প্যাকেট, বেকারিপণ্য উৎপাদনের উপকরণ।
বিসকস স্টলে গিয়ে দেখা যায়, নানা রকম বডি স্ক্র্যাপ, মশা দূর করার মলম, মাথা ব্যাথার মলমসহ প্রসাধনী পণ্যদ্রব্য।
প্রসঙ্গত, গত রোববার রাজধানীর পান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ মেলার উদ্বোধন করেন। আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্ব সাধারণের জন্য এ মেলা খোলা থাকবে।
/ এআর /
আরও পড়ুন