স্কুলছাত্রী অদিতা হত্যায় প্রাইভেট শিক্ষককে অভিযুক্ত করে চার্জশিট
প্রকাশিত : ১১:২৯, ১৮ এপ্রিল ২০২৩
নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার প্রাইভেট শিক্ষক আবদুর রহিম রনিকে (৩২) অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা।
ঘটনার সাত মাসের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের আলামত, ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট ও আসামির ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তির কাগজপত্রসহ অভিযোগপত্রটি দাখিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে মামলা থেকে অব্োহতি দেওয়া হয়েছে এ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. ইস্রাফিলকে (১৪)।
সোমবার দুপুরে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ও সুধারাম মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্পেসল্যাব চৌধুরী প্রমোজ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহ্ আলমের কাছে চূড়ান্ত অভিযোগপত্রটি হস্তান্তর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সুধারাম মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা স্পেসল্যাব চৌধুরী প্রমোজ বলেন, ডিএনএ টেস্টে মামলার একমাত্র অভিযুক্ত আসামি আবদুর রহিম রনির জামায় অদিতার রক্ত পাওয়া গেছে। স্কুলছাত্রী অদিতাকে ধর্ষণের চেষ্টার পর গলা কেটে হত্যা করেছিল তার সাবেক প্রাইভেট শিক্ষক রনি। আদালতে রনির দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মাইজদী পৌর এলাকার মিস্ত্রী বাড়ির পুকুর থেকে অদিতাদের ঘরে লাগানো তালার চাবি উদ্ধার করা হয়।
যে বালিশ দিয়ে তাকে চাপা দেওয়া হয়েছিল সে বালিশটিও উদ্ধার করা হয়েছে। ধস্তাধস্তির আঘাতের দাগও পাওয়া গেছে রনির মাথার অংশে। এ মামলায় ৩১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তদন্তকারি কর্মকর্তা।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহ্ আলম বলেন, নিহত স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতার প্রাইভেট শিক্ষক আবদুর রহিম রনিকে একমাত্র আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আগামী ৭ মে অভিযোগপত্রটি ১নং আমলি আদালতের বিচারক মোসলে উদ্দিন মিজানের আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী পৌর এলাকার লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার নিজ বাসায় খুন হন নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা। ওইরাতে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে অদিতার রক্তাক্ত মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। যা অর্ধনগ্ন, গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল।
ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে রনি ঘরে থাকা চাকু দিয়ে অদিতার হাত ও গলা কেটে রাখে। একই সঙ্গে ঘরে আলমিরায় থাকা মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ তাৎক্ষনিক অদিতার সাবেক প্রাইভেট শিক্ষক আবদুর রহিম রনিসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পরদিন নিহত অদিতার মা রাজিয়া সুলতানা বাদি হয়ে সুধারাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর ২৪ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার আবদুর রহিম রনি হত্যার দায় স্বীকার করে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এমদাদ আলীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
এএইচ
আরও পড়ুন