রাতারগুল
স্বচ্ছ পানি আর সবুজাভ প্রকৃতির মাখামাখি
প্রকাশিত : ১৫:৫৩, ১৫ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ২১:৪৬, ১৭ জুলাই ২০১৭
সবুজ গাছ-গাছালি নিথর পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে এক নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য নিয়ে। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে সবুজ পত্র-পল্লবে ঢাকা ‘রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট’। এটি বিশ্বের ২২টি সোয়াম্প ফরেস্টের মধ্যে একটি। প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা রাতারগুল একটি নজরকাড়া পর্যটন কেন্দ্র।
ছুটি পেলেই প্রচুর পর্যটক ছুটে আসেন এখানে। চাইলে আপনি ঘুরে আসতে পারেন স্ব-পরিবার অথবা বন্ধুদের নিয়ে।
কোমর ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমায় বর্ষা মৌসুমে। তখন অবশ্য ডিঙ্গি নৌকায় করে ঘুরতে হয়। ডিঙিতে চড়ে বনের ভেতর ঘুরতে ঘুরতে দেখা যাবে প্রকৃতির রূপসুধা। জলমগ্ন বলে এই বনে সাপের আবাসটাই বেশি। তবে ভাগ্য ভালো হলে দেখা হয়ে যেতে পারে দু-একটা বানরের সঙ্গে।
এছাড়া চোখে পরার মত বনে সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙ্গা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঢুপি, ঘুঘু, চিলসহ নানা জাতের পাখিতো আছেই।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি প্রতিদিন গ্রীণলাইন, হানিফ, শ্যামলীসহ অনেক বাস যায় মহাখালি, সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল থেকে। চাইলে ট্রেনেও যেতে পারেন। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে রোজ একাধিক ট্রেন সিলেটের উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়।
ঢাকা – সিলেট রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলো হলো- কালনী এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস উপবন এক্সপ্রেস। সিলেট নগরীতে নামার পর নগরী থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলায় রাতারগুলের অবস্থান।
আম্বরখানা-বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে সাহেব বাজার হয়ে আবার সিলেট-তামাবিল সড়ক হয়ে হরিপুর সড়ক দিয়ে রাতারগুল যাওয়া যায়। অথবা জাফলং রোডেও যেতে পারেন। তবে যেতে হবে সিলেট থেকেই।
যাইহোক, মানুষ ৬-৮ জন হলে প্রথমেই সিলেট শহরে ‘চৌহাট্টা থেকে একটা মাইক্রোবাস ঠিক করে নিন। আসা-যাওয়ার বাবদ খরচ পরবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মত। মাইক্রোবাসে করে প্রায় ঘণ্টাখানেক যাওয়ার পর পৌছে যাবেন গোয়াইন নদীর তীরে।
এখানে নেমেই ড্রাইভারের মোবাইল নাম্বার নিয়ে নিন, যাতে পরে এসে খুঁজে পেতে সমস্যা না হয়। তারপর চলে যান সোজা নদীর ঘাট। সেখান থেকে যেতে হবে প্রায় আধঘণ্টা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে। খরচ পরবে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার মত।
মনে রাখবেন এই নৌকা কিন্তু বনের ভেতর ঢুকবে না। বনে ঢুকতে হবে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে। এই নৌকা আপনাকে বনের পাশে নামিয়ে দেবে। বনে নামার পর কিছুদূর গেলেই চোখে পড়বে ডিঙ্গি নৌকা। কথাবার্তা বলে একটা ঠিক করে নিন। ডিঙ্গি নৌকার ভাড়া পরবে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মত।
সর্তকতা
বর্ষায় বনে জোঁক আর সাপের প্রকোপ বেশি থাকে। তাই সতর্ক থাকবেন। যাঁরা সাঁতার জানেন না, সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখতে পারেন। তাছাড়া বনে ঢুকে পানিতে হাত না দেয়াই ভালো। কারণ বিষাক্ত সব সাঁপ এখানে ঘুরে বেড়ায়! নৌকায় বসে কোন গাছের ডালে হাত দিতেও সতর্ক থাকুন।
রাতারগুল থাকা-খাওয়ার কোন ব্যাবস্থা নেই। যাওয়ার শুকনো খাবার (চিপস, বিস্কিট, পানি ইত্যাদি) সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন। আর থাকার জন্য ফিরে আসতে হবে সিলেটেই।
থাকার ব্যবস্থা
জেলা পরিষদের একটি রেস্ট হাউস আছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে। থাকতে হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি নিতে হয়। এ ছাড়া ভোলাগঞ্জ বা কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় থাকার জন্য তেমন কোন ভাল ব্যবস্থা নাই। ভোলাগঞ্জ দর্শন শেষ করে সিলেটে এসে অবস্থান করতে পারবেন।
//আর//এআর
আরও পড়ুন