ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

স্রষ্টার সর্বোত্তম অনুগ্রহ মানুষের হেদায়েত

প্রকাশিত : ১২:৫৫, ১০ মে ২০১৯

আল্লাহতায়ালা মশা, মাছি, মাকড়শা, পিঁপড়া, উট, মাছ, পাখিসহ প্রতিটি সৃষ্টিকে এই পৃথিবীতে টিকে থাকার মতো দেহ কাঠামো ও খাবার সংগ্রহ করে বেঁচে থাকার যথাযথ পথনির্দেশ বা হেদায়েত দিয়েছেন। এই পথনির্দেশের মাধ্যমে বর্ণঅন্ধ মাকড়শা তার শরীরের রঙের সঙ্গে পুরোপুরি মিশে যায় এমন ফুলের মাঝে লুকিয়ে থাকে ও ফুলের উপর রস আহরণ করতে আসা মৌমাছির দৃষ্টিকে ধোকা দিয়ে তাকে ধরে ফেলে। তবে সৃষ্টির প্রতি সৃষ্টিকর্তার এই পথনির্দেশ তাদের জেনেটিক তথ্যের মধ্যে সংরক্ষিত বিধায় অপরিবর্তনযোগ্য।

আল্লাহতায়ালা পৃথিবীর ক্ষুদ্র বৃহৎ প্রতিটি সৃষ্টিকে পথনির্দেশ দিয়েছেন, তিনি সৃষ্টির সেরা জীব মানুষকে হেদায়েত বা পথনির্দেশ না দিয়ে ছেড়ে দেবেন তা হতে পারে না। কেননা প্রতিটি সৃষ্টিকে পথনির্দেশ বা হেদায়েত দান তার রব বা প্রতিপালক হিসেবে দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেজন্য আল্লাহতায়ালা অসীম করুণায় মানুষকে পথ নির্দেশ দেওয়ার জন্য যুগে যুগে নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দেয়া হয়েছে। এই বিশ্বের প্রতিটি সৃষ্টি যেমন স্রষ্টার নির্ধারিত পথনির্দেশ অনুসরণ করে খাদ্য, আশ্রয়, নিরাপত্তাসহ যাবতীয় প্রয়োজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে পূরণ করে, মানুষও তেমনি স্রষ্টা নির্ধারিত পথনির্দেশ অনুসরণ করে সুস্বাস্থ্য, প্রশান্তি, প্রাচুর্যের জগতে ঢুকে যেতে পারে। স্রষ্টা নির্দেশিত পথনির্দেশ বা হেদায়েতকে অমান্য করে দুর্দশার চক্রে বন্দি হতে পারে। সমুদ্রের মধ্যে পথ প্রদর্শন না করলে যেমন একটি ক্ষুদ্র মাছের সমুদ্র পার হওয়া সম্ভব নয়, তেমনি আল্লাহ পথ প্রদর্শন না করলে কোন মানুষের পক্ষে ইহকাল ও পরকাল উভয় জীবনে সাফল্যের পথে থাকা সম্ভব নয়। এটা সৃষ্টিকর্তার সর্বোত্তম করুণা যে, তিনি ক্ষুদ্র মানুষকে সাফল্যের সরল পথ দেখিয়েছেন তার প্রেরিত নবী/রাসূল (বাণী বাহক) ও ঐশী গ্রন্থের মাধ্যমে।

‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি তার বান্দার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং এতে কোন বক্রতা রাখেন নাই।’ (সূরা কাহাফ ১৮/০১)

স্রষ্টা প্রদত্ত এই হেদায়েত বা পথনির্দেশ মানবজাতির জন্য স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ উপহার ও স্রষ্টার করুণার সর্বোত্তম বহিঃপ্রকাশ। মানুষকে আল্লাহতায়ালা যেহেতু স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তাই হেদায়েত গ্রহণ করা আর না করা তার স্বাধীন ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। যদি সে হেদায়েত গ্রহণ করে তাহলে উপকৃত হবে আর যদি গ্রহণ না করে জীবন যাপন করে তাহলে ইহ ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

‘আলিফ-লাম-মিম। এটি একটি ঐশী গ্রন্থ যা আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি। যাতে মানবজাতিকে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনতে পারেন। তারপক্ষে যিনি পরাক্রমশালী ও প্রশংসার যোগ্য।’ (সূরা ইবরাহীম ১৪/৩১)

সৎ পথ প্রদর্শন যে স্রষ্টার পক্ষ থেকে সর্বোত্তম অনুগ্রহ ছিল তা সত্যিকারভাবে তখনই উপলব্ধি করবে যখন সে এই পৃথিবীর জীবন শেষ করে পরকালে সাফল্য ও প্রশান্তির ভুবনে প্রবেশ করবে।

‘আর আমি অন্তর হতে দূর করবো মনোমালিন্য। তাদের তলদেশে প্রবাহিত হবে নদী। তারা বলবে, প্রশংসা আল্লাহরই যিনি পথ দেখিয়েছেন। আল্লাহ আমাদের পথ না দেখালে আমরা কখনই পথ পেতাম না’। (সূরা আরাফ ৭/৪৩)

(শোকরিয়া : প্রশান্তি ও প্রাচুর্যের রাজপথ গ্রন্থ)

এএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি