ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক মাসুমা আর নেই

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:০৭, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রাজশাহীতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক মাসুমা আক্তার (৩০) আর নেই। কুমিল্লায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত তিনি। চারদিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে।

মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাংবাদিক মাসুমা।

মাসুমা আক্তারের বাবার বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর। তার শ্বশুর বাড়ি কুমিল্লায়। মাসুমা রাজশাহী নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটি থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে লেখাপড়া করেন। আর সাংবাদিকতা শুরু করেন ২০১৪ সালে। সর্বশেষ তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এখন টিভিতে কর্মরত ছিলেন।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এখন টিভির রাজশাহী অফিসের সিনিয়র রিপোর্টার রাজিউল হাসান রাজিব বলেন, গত শুক্রবার বিকালে মাসুমা ছুটি নিয়ে স্বামীর সঙ্গে কুমিল্লায় শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছিলেন। কুমিল্লায় বাস থেকে নেমে সিএনজির সঙ্গে ভাড়ার বিষয়ে কথা বলছিলেন তারা। এসময় আরেকটি সিএনজি এসে তাদের সামনে দাঁড়ায়। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ওই সিএনজির ধাক্কায় তারা দুজনই রাস্তার উপর সিটকে পড়েন।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। রাস্তার উপর পড়ে গিয়ে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান মাসুমা। উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা থেকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। যেখানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।

মাসুমা আক্তারের অকাল মৃত্যুতে সাংবাদিক সমাজ, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাজশাহীর প্রায় সকল সাংবাদিক তাদের ফেসবুকে মাসুমার মৃত্যু নিয়ে পোস্ট দিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন। 

রাজিউল হাসান রাজিব তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ফুলের স্টোরি শেষ করে এসে এক গাদা ফুল ধরিয়ে দিলো। বললো; ভাইয়া শুক্রবার ডে-অফ, শনিবার শব-ই-বরাতের ছুটি, আরো দু'দিন বাড়িয়ে ছুটি দেন। শাশুড়িকে দেখতে যাবো। প্রথমে ভাবলাম বলবো, না মাসুমা ছুটি নিওনা। অনেকগুলো কাজ বাকি। ভাইয়া আসতে চেয়েছেন। এই সব বলে থামাবো।

পরে বললো একটা স্টোরি তুলে দিয়ে যাই। আপনি ভয়েস দিয়ে দিয়েন। বললাম থাক- তুমিই ভয়েস দিবা। ফিরে এসে করো। ছুটি পেয়ে অনেক হাসলো। বারণ করলাম, বললাম যাও সাবধানে ঘুরে আসো। একটা সুস্থ্য হাসি-খুশি মানুষ কি থেকে কি!!

জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা মোটেও ভালো না, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সেমিষ্টার আর কর্মজীবনের প্রায় দু'বছর তাকে খুব ডিসিপ্লিন এবং সচেতন হিসেবেই জানি।’

রাজশাহীর সিনিয়র সাংবাদিক ও এটিএন বাংলার স্টাফ রিপোর্টার সুজাউদ্দিন ছোটন তার ফেসবুকে লিখিছেন, ‘রাজশাহীতে নারী সাংবাদিকতায় সম্ভাবনামায় একজন বোনকে আমরা অকালে হারালাম। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণের জন্য উদ্যোগ নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে সকল সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে। দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট ইউনিটির (আরটিজেইউ) আহবায়ক বদরুল হাসান লিটন বলেন, ‘মাসুমা আক্তার সাংবাদিকতা পেশায় নিষ্ঠাবান ও প্রতিশ্রুতিশীল ছিলেন। তিনি ছিলেন পরিশ্রমী, সাহসী ও দায়িত্বশীল এক সংবাদকর্মী। তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি