ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

হাবিপ্রবিতে পদার্থ বিজ্ঞান ও বিএস অনুষদের অবস্থান কর্মসূচি

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২২:৩৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ২২:৩৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে শনিবার রিজেন্ট বোর্ডের ৪৮তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দুটি বিবিধ বিষয়সহ ২৮বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে এমএস এর এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক রমজান আলীকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে মিডিয়ায় মিথ্যাচার,আর্থিক দুর্নীতি এবং একাডেমিক জালিয়াতিসহ বেশ কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক শাস্তির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানা গেছে।

গতকাল রিজেন্ট বোর্ডে এসব সিন্ধান্ত আসার পরেই আজ রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড করায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে তাদের পাশে অবস্থান নেয় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদীয় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।  
 
পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে কি ষড়যন্ত্র হচ্ছে এই বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান,চেয়ারম্যান হিসবে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.মমিনুল ইসলাম স্যারের মেয়াদ শেষ হওয়ার দুদিন আগেই ১১ ফেব্রুয়ারি জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পুনরায় স্যারকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে অফিস আদেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। সেই হিসেবে আমরা ছাত্র-শিক্ষকরা স্যারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাই কিন্তু এর ২ দিন পরেই ১৩ ফেব্রুয়ারি পূর্বের অফিস আদেশ বাতিল করে অধ্যাপক ড.কামরুজ্জামান স্যারকে বিভাগীয় চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করার সংশোধিত অফিস আদেশ দেয়া হয়। এতে করে একজন সম্মানিত স্যারকে হেয়-প্রতিপন্ন করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। তারই প্রতিবাদের আমাদের আজকের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসুচি। শিক্ষকদের বিষয়ে ছাত্ররা কেন ? এর উত্তরে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি । তবে তারা জানিয়েছেন, এইটা আমাদের পদার্থবিজ্ঞান পরিবারের বিষয় তাই আমরা এসেছি। পরিবারের বিষয়  বলে দাবি করলেও আন্দোলনে কোন শিক্ষককে দেখা যায় নি। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার বরাবর একটি স্বারকলিপি প্রদান করে।

কর্মসূচি চলাকালীন, ওয়াজেদ ভবনের একপাশে অবস্থানকারী শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ,অধ্যাপক ড.ফেরদৌস মেহবুব ও সৌরভপাল চৌধুরী জর্জ সহ আরো কয়েকজন শিক্ষকের সাথে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতিসহ দিনাজপুর জেলা সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ,অধ্যাপক ড.ফেরদৌস মেহবুব তাদের সাথে রুঢ় ব্যবহার করেন। এ সময় সৌরভ পাল চৌধুরী জর্জ তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন ।    

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বের ব্যাপারে অধ্যাপক ড. মমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ২টি আদেশই বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ২৫ ধারার কথা বলা হয়েছে। তবে পরের যে সংশোধিত আদেশটি দেয়া হয়েছে তা ঠিক হয়নি। এরপরে শিক্ষার্থীরা যাতে করে কোন ধরনের আন্দোলন না করে সেজন্য তাদেরকে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির ব্যাপারে কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা কেন অবস্থান নিয়েছেন সে ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেন নি এবং অবস্থানকালীন তাদের হাতে কোন ব্যানার বা ফেস্টুন ছিলো না। তবে বিজন দেবনাথ নামে একজন শিক্ষার্থীর কথা জানান তারা। পরে বিজন দেবনাথের সাথে কথা বললে সে জানায় এইটা আমাদের ফ্যাকাল্টির বিষয় । আমাদের একজন শিক্ষককে শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে আমরা বিভিন্ন মিডিয়ার জানতে পারি। কি কারনে শাস্তি দেয়া হয়েছে তা জানতে স্বতস্ফুর্তভাবে শিক্ষার্থীরা এসেছে, এখানে কাউকে জোর পুর্বক ডাকা হয়নি।

তবে উক্ত অনুষদের শিক্ষার্থী পল্লব হোসেন রাঙ্গা বলেন, আমরা এই অনুষদের শিক্ষার্থী হলেও আন্দোলনের বিষয়ে কিছু জানি না। আমাদের কাউকে কিছু জানানো হয়নি। তবে,ফোন করে আন্দোলনের জন্য আমাদের ফ্যাকাল্টির অনেক ছাত্রকে ডাকা হয়েছে বলে আমি জেনেছি।  

আন্দোলনের বিষয়ে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন জানান, আন্দোলনের বিষয়টি জেনেছি। তবে, কাউকে আন্দোলনের অনুমতি দেয়া হয় নি। আন্দোলনে জোরপূর্বকভাবে ১৯ এবং ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি ছাত্রদের বারবার বলেছি,এটা ফ্যাকাল্টির কোন বিষয় না। তোমরা এখানে পড়তে আসছো ভালোকরে পড়াশোনা কর। আন্দোলন ছাত্রদের সংশ্লিষ্ট কোন বিষয় না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।  
 
সাময়িক শাস্তি প্রাপ্তদের মধ্যে থাকা বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৌরভ পাল চৌধুরী রয়েছেন বলে জানা গেছে। বিজনেস স্টাডিজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিষয়ে তার সাথে কথা বললে তিনি জানান,শিক্ষার্থীরা কি কারনে আন্দোলন করছে সেটা আমি জানি না। তাদের কাছেই জেনে নিন। আমি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।

সার্বিক বিষয়ে রেজিষ্ট্রার অধ্যাপক ডা.মো.ফজলুল হক(বীর মুক্তিযোদ্ধা) বলেন,পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান হিসাবে প্রফেসর কামরুজ্জামান কে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই নিযুক্ত করা হয়েছে। আর চেয়ারম্যানের নামের পরিবর্তন সংশোধন এর আগের প্রশাসনও একাধিকবার করেছেন। তাই এখানে নিয়মের কোন ব্যত্য় হয়নি। অন্যায়কারীকে তার অন্যায়ের জন্য শাস্তি দেয়া হয়েছে।

আরকে//

 

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি