ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

হার্ড ইমিউনিটি পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে : সৌম্য স্বামীনাথন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:০৫, ২৬ জুলাই ২০২০

Ekushey Television Ltd.

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা বা হার্ড ইমিউনিটি পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে। জেনেভার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আয়োজিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা এক অনুষ্ঠানে এক কথা বলেন তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী বলেন, ‘হার্ড ইমিউনিটির ধারণা সফল করতে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষকে ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম করতে হবে। এতে কেবল সংক্রমণ প্রবাহের শৃঙ্খলে বাধা দেওয়া সম্ভব হবে। টিকা চলে এলে এটা করা খুব সহজ হবে।’

সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, ‘আমরা এখন বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখেছি, আক্রান্ত অনেক দেশে ৫ থেকে ১০ শতাংশ রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। অনেক জায়গায় অ্যান্টিবডি তৈরির হার ২০ শতাংশ পর্যন্ত দেখা গেছে।’

মোটামুটিভাবে হার্ড ইমিউনিটি বলতে বোঝায় একটি সমাজের অধিকাংশ লোকের মধ্যে কোনো রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠা। তা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ লোকের মধ্যে গড়ে উঠলে ধরে নেওয়া যায় ওই নির্দিষ্ট রোগ থেকে ওই সমাজ মোটামুটি শঙ্কামুক্ত।

সৌম্য স্বামীনাথন সতর্ক করেছেন, বিজ্ঞানীরা যত দিন পর্যন্ত টিকা না আনছেন, তত দিন বিশ্বকে করোনা ঠেকানোর সম্ভাব্য সব উপায় নিয়ে কাজ করতে হবে। এ সময়টা এক বছর বা তার কাছাকাছি হতে পারে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন থেরাপি মৃত্যুহার কমিয়ে রাখবে এবং মানুষ তাদের জীবনে ফেরত যাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘মানুষের মৃত্যু বা অসুস্থতা ছাড়াই দ্রুতগতিতে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করে ফেলা যাবে। এ কারণে টিকা দিয়েই হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করা ভালো। প্রাকৃতিক সংক্রমণের মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি সৃষ্টি হওয়ার চেয়ে টিকা দিয়ে করা ভালো হবে। তা না হলে সংক্রমণের একাধিক তরঙ্গ লাগবে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেকে মারা যাবে।’

এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখনো সংক্রমণের তরঙ্গ চলছে। সেখানকার মানুষের শরীরেও অ্যান্টিবডি তৈরি হবে এবং কিছু সময়ের জন্য মানুষ প্রতিরোধী হয়ে উঠবে বলে আশা করা যাবে। তারা ভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে সংক্রমণ রুখে দেবে। তবে টিকা আসা পর্যন্ত জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে এগোতে হবে।’

সৌম্য স্বামীনাথন আরও বলেন, ‘বিভিন্ন টিকা নিয়ে পরীক্ষা চলছে। যদি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষাগুলো সফল হয়, তবে এ বছরের শেষ নাগাদ একাধিক টিকা হাতে থাকবে। তবে আমাদের কয়েক শ কোটি ডোজ টিকা প্রয়োজন পড়বে, যার জন্য সময় লাগবে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে ২০০ টিকার বেশি প্রকল্পে কাজ হচ্ছে। এসব প্রকল্প অভাবনীয় গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) জরুরি বিভাগের শীর্ষকর্তা মাইক রায়ান জানান, ২০২১ সালের প্রথম ভাগের আগে প্রতিষেধক সাধারণের হাতে আসবে বলে মনে হয় না। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের গবেষণা জোর কদমে এগোচ্ছে। বেশ কয়েকটি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে পৌঁছে গিয়েছে। সুরক্ষা বা শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এখনও পর্যন্ত কোনটি ব্যর্থ হয়নি। তবু সকলের জন্য টিকা পেতে হয়তো সামনের বছরের শুরুর দিক পর্যন্ত সময় লেগে যাবে।’

রায়ান জানান, করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের পরে তা সমবণ্টনের বিষয়টি হু গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। 
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি