ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

১১ ডিসেম্বর : রংপুরের পীরগাছা হানাদার মুক্ত দিবস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৪, ১১ ডিসেম্বর ২০২০

১১ ডিসেম্বর, রংপুরের ‘পীরগাছা উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস’। মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশ ছাড়ার মাত্র পাঁচ দিন আগে ১৯৭১ সালের এই দিনে পীরগাছা হানাদারমুক্ত হয়।

পীরগাছা উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। পাকিস্তানি সেনা, মিলিশিয়া বাহিনী এবং এ দেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মিলিতভাবে মার্চ মাসের শুরু থেকেই গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটসহ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালায়।

৬ ডিসেম্বরে মুক্তিযোদ্ধারা চৌধুরাণী হাই স্কুল মাঠে অবস্থান নিলে পাক হানাদার বাহিনী সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ চালায়। ডিনামাইড দিয়ে চৌধুরাণী রেল স্টেশনটি উড়িয়ে দেয় ও আশপাশের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তুললে পাকবাহিনী পিছু হটে রংপুর যাওয়ার চেষ্টা করে।

এ সময় মনুরছড়ার (ওকড়াবাড়ী) লোহার ব্রিজ সংলগ্ন ঘাঘট নদীর তীরে অবস্থানরত দেলোয়ার কমান্ডারের নেতৃত্বে অপর একটি মুক্তিযোদ্ধা দল তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী পিছু হটে পালিয়ে যায়। এ সময় আব্দুল মজিদ নামের এক কিশোর শহীদ হন এবং পাকবাহিনীর অনেক সদস্য হতাহত হয়।

কমান্ডার আজহার আলীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পীরগাছা বাজারস্থ তৎকালীন ছায়াবীথি ক্লাবে পাক বাহিনীর ক্যাম্প থেকে রাজাকার আলবদরসহ ১৭ জনকে আটক করেন। পরে পীরগাছা থানার প্রবেশ পথে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়।

অবশেষে ১১ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা পীরগাছা থানা ঘেরাও করলে অবস্থা বেগতিক দেখে পাকসেনারা পালিয়ে যায়। এভাবে পীরগাছা উপজেলা শক্রমুক্ত হয়।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে ভবেশ চন্দ্র বর্মণ, আবু বক্কর সিদ্দিক, ওমর আলী সরকার, আব্দুল মজিদ, মোসলেম উদ্দিন ও নজির হোসেনসহ আরো অনেক নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ শহীদ হন।

প্রতিবছর দিবসটি পালনে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে।
এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি