ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

১১ বছর আগের আর পরের মানুষ এক থাকে না : মিথিলা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৬, ২১ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ১৫:৫৭, ২২ জুলাই ২০১৭

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

জনপ্রিয় তারকা জুটি তাহসান-মিথিলার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে গেল গত মে মাসে। এরও প্রায় দুই বছর আগ থেকেই আলাদা থাকছেন তারা। বৃহস্পতিবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে দুজনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

তাহসান মিথিলা আলাদা থেকে নিজেদের মধ্যকার সমস্যাগুলো মিটমাটের চেষ্টাও করছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া না হওয়ায় চূড়ান্ত বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। মে মাসে তাহসান-মিথিলার তিল তিল করে গড়ে উঠা প্রেমের রসায়নের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয়েছে।

বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে প্রথমে দুজনে মুখ খুলতে না চাইলেও পরে রাজি হন। বিভিন্ন গণমাধ্যমকে দুজন নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করেন। মিথিলা জানান, তাদের দুজনের মধ্যে ব্যাক্তিত্বের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠছিল। দুজনের ভাবনাগুলোও ভিন্ন ছিল। দূরত্ব দিন দিন বাড়ছিল। একটা সময় মিথিলার কাছে মনে হল, ১১ বছর আগের তাহসান আর এখনকার তাহসান এক নন।

বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে মিথিলা গণমাধ্যমকে বলেন, একটি ইস্যু নিয়ে তো আর কখনো বিচ্ছেদ হয় না। বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে একজন মেয়ের জন্য বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা এত সহজ নয়। কিন্তু একটা সময় আমাকে মেনে নিতে হয়েছে এটাই বাস্তবতা। জীবনচলার পথের একটা সময় এসে আমরা বুঝতে পারলাম, দুজন মানুষ যার যার জায়গা থেকে দুই ধরনের জিনিস চাই। তাহসানের জীবনের লক্ষ্য হয়তো একরকম, আমার হয়তো আরেক রকম। তবু দুজন ভিন্ন রকম মানুষ তো একসঙ্গে থাকে। আমরাও থেকেছি। শেষ পর্যন্ত আর হলো না। আমাদের যখন বিয়ে হয়, তখন আমাদের দুজনের বয়সই অনেক কম। আমাদের ক্যারিয়ারও একসঙ্গে গড়ে উঠেছে। এমন না যে, কেউ কারও আগে বা পরে এসেছি। সেসব দিক থেকে আমাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা ছিল না। কিন্তু একটা সময় এসে মনে হচ্ছিল, ১১ বছর আগের একজন মানুষ আর পরের একজন এক থাকে না। অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। তাই বিচ্ছেদের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হল।  

বিচ্ছেদের নেপথ্যে কী সে সম্পর্কে তাহসান খোলামেলা কিছু বলতে চাচ্ছেন না। শুধু এটুকুই বলেন, সমাজ কী বলবে—এই ভয়ে অভিনয় করে সারা জীবন কাটিয়ে দিতে হবে, তারা (তাহসান মিথিলা) দুজন এ ব্যাপারে একমত নন। এর আগে বৃহস্পতিবার ফেসবুকে তাহসান লেখেন, ‘অতি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে। কয়েক মাস ধরেই আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। অবশেষে কোনো চাপে না থেকে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা জানি, আমাদের এ সিদ্ধান্তে অনেকে ব্যথিত হবেন। সে জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’ সংগীত ও অভিনয়শিল্পী তাহসান ও মিথিলার আশা কঠিন সময়ে ভক্তরা তাঁদের সঙ্গে থাকবেন বলেই তাঁরা বিশ্বাস করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কণ্ঠশিল্পী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন মেধাবী ছাত্র তাহসান। সে সময় মিথিলার সঙ্গে পরিচয়। এরপর তাহসানের মনের ঘরে বাঁধা পড়েন মিথিলা। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট এক সুতোয় বাঁধা পড়ে তাহসান-মিথিলার জীবন। তাহসান-মিথিলার ঘর আলো করে এসেছে একমাত্র কন্যাসন্তান আইরা তাহরিম খান। মেয়েটি এখন মিথিলার কাছেই আছে। আইরা মায়ের কাছেই থাকবে বলে জানান মিথিলা। মিথিলা বলেন, আইরা আমার কাছে ছিল। বলতে গেলে আমি একাই ওকে বড় করেছি। ওর বাবা দেখা করতে আসে। সামনের দিনগুলোতে তারও অবদান থাকবে। আর এই বোঝাপড়াটা আমাদের মধ্যে থাকবে।

বিয়ের পর এ জুটি একাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। ‘আমার গল্পে তুমি’, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস’, ‘ল্যান্ডফোনের দিনগুলোতে প্রেম’, ‘মধুরেন সমাপয়েত’ নাটকসহ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন তাহসান মিথিলা। দর্শকরা নিকট ভবিষ্যতে তাদের আর একসঙ্গে দেখতে পারবেন না। মিথিলা জানান, আপাতত তাহসানের সঙ্গে কাজ করবেন না। তবে ভবিষ্যতের বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারছেন না।

বিচ্ছেদের পর দর্শক শ্রোতারা তার পাশে থাকবে এমন প্রত্যাশা তাহসানের। তিনি বলেন, যেকোনো মানুষের জীবনে বিচ্ছেদ একটা কষ্টের ব্যাপার। আমাদের জন্য এই কষ্টটা আরও বেশি। অচেনা-অজানা লাখো মানুষ কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ফেলে যখন মিডিয়াজগতের কারও বিচ্ছেদ হয়, তারপরও অসংখ্য মানুষের সহমর্মিতা আমরা পাচ্ছি।

//এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি