১৬টি ক্যাম্পে রয়েছে সোয়া ৬ লাখ রোহিঙ্গা
প্রকাশিত : ২৩:১৪, ৮ নভেম্বর ২০১৭
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের মুখ থেকে পালিয়ে আসা প্রায় সোয়া ৬ লাখ রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ১৬টি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।
মিয়ানমারের শরণার্থীদের ক্যাম্পভিত্তিক এ হিসাব সরকারের পক্ষ থেকে বুধবার জানানো হয়েছে।
তাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন এবং ত্রাণ সরবরাহের হালনাগাদ তথ্যও দেওয়া হয় সরকারের তথ্য বিবরণীতে।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরুর পর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তে নামে রোহিঙ্গা স্রোত। গত আড়াই মাসে এই সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়,“গত ২৫ আগস্টের পর থেকে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে এ পর্যন্ত ৬ লাখ ২৫ হাজার মিয়ানমার নাগরিক অবস্থান নিয়েছে।”
সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার জন্য তাদের ছোট-বড় ১৬টি অস্থায়ী কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়।
কেন্দ্রভিত্তিক অবস্থান
উখিয়ার কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্প- ১৫ হাজার।
উখিয়ার কুতুপালং অস্থায়ী ক্যাম্প- ২ লাখ ৪৭ হাজার।
উখিয়ার বালুখালী অস্থায়ী ক্যাম্প- ৯১ হাজার।
উখিয়ার ময়নার ঘোনা ক্যাম্প- ৫০ হাজার।
উখিয়ার তাসনিমার ঘোনা ক্যাম্প- ২৭ হাজার।
উখিয়ার জামতলী বাঘঘোনা ক্যাম্প- ১৮ হাজার।
উখিয়ার শফিউল্লা কাটা ক্যাম্প- ১৭ হাজার।
উখিয়ার হাকিমপাড়া ক্যাম্প- ৫৫ হাজার।
উখিয়া উপজেলার আশেপাশের গ্রামগুলো- ৮ হাজার।
উখিয়ার শামলাপুর অস্থায়ী ক্যাম্প- ১৬ হাজার।
টেকনাফ উপজেলার আশেপাশের গ্রামগুলো- ১০ হাজার।
টেকনাফের নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্প- ১৫ হাজার।
টেকনাফের লেদা অস্থায়ী ক্যাম্প- ১৫ হাজার।
টেকনাফের ঊনচিপ্রাং ক্যাম্প- ২৮ হাজার।
কক্সবাজারের অন্যান্য স্থান- ৩ হাজার।
চাকডালা ক্যাম্প- ১০ হাজার।
উখিয়া ও টেকনাফের ১২টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা রোহিঙ্গাদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাতটি ক্যাম্পের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন কাজ এগিয়ে চলছে।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, বুধবার কুতুপালং -১ ক্যাম্পে ৬০১ জন পুরুষ, ৫১৮ জন নারী মিলে ১ হাজার ১১৯ জন, কুতুপালং-২ ক্যাম্পে ৯৬১ জন পুরুষ, ১ হাজার ২৮৩ জন নারী মিলে ২ হাজার ২৪৪ জন, নোয়াপাড়া ক্যাম্পে ৪৭৬ জন পুরুষ, ৫৪১ জন নারী মিলে ১ হাজার ১৭ জন, থাইংখালী-১ ক্যাম্পে ৮৯৯ জন পুরুষ, ১ হাজার ১৮৩ জন নারী মিলে ২ হাজার ৮২ জন, থাইংখালী -২ ক্যাম্পে ৩৯৭ জন পুরুষ, ৩২০ জন নারী মিলে ৭১৭ জন, বালুখালী ক্যাম্পে ১ হাজার ৩৯৭ জন পুরুষ, ১ হাজার ৪০০ জন নারী মিলে ২ হাজার ৭৯৭ জন, লেদা ক্যাম্পে ২৯৭ জন পুরুষ, ৩৪২ জন নারী মিলে ৬৩৯ জন এবং পুরোদিনে ৭টি কেন্দ্রে মোট ১০ হাজার ৬ শত ১৫ জনের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা হয়েছে।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে এই পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৮২১ জনের নিবন্ধন করা হয়েছে বলে জানানো হয় তথ্য বিবরণীতে।
ত্রাণ বিতরণ
উখিয়া ও টেকনাফের ১২টি অস্থায়ী কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে বেসরকারি উৎস হতে ত্রাণ সংগ্রহ ও সরকারি উদ্যোগে বিতরণ চলছে।
উখিয়ায় স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বুধবার ১৯ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ৩৬ ট্রাকের মাধ্যমে ৯৬টন ত্রাণ জমা দিয়েছে বলে তথ্য বিবরণিতে জানানো হয়।
এসব ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৯ হাজার ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ১ হাজার প্যাকেট শিশু খাদ্য, ৫ হাজার ৪৫০ পিস পোশাক, ৯৫০ পিস গৃহস্থালি সামগ্রী। এসব ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ কার্যালয় জানিয়েছে, কক্সবাজারের ৪টি খাদ্য গুদামে প্রাপ্তি ও প্রদানের পর ৯৭৭ টন চাল, ৮১ টন ডাল, ৯৮ হাজার ২২৯ লিটার তেল, ৬৩ টন লবণ, ৮৭ টন চিনি, ৯ হাজার ৪০৮ কেজি আটা, ৮১ হাজার ৪৭০ কেজি গুঁড়ো দুধ, ২৫ কেজি মুড়ি, ১৬ হাজার ১০০ পিস ও ৪৮৯ বান্ডেল কম্বল, ৫১১টি তাঁবু ও ত্রিপল মজুদ রয়েছে।
কেআই/ ডব্লিউএন
আরও পড়ুন