১৬-১৮ হাজার রোহিঙ্গা নারী গর্ভবতী : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রকাশিত : ২০:১৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১১:৪২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর নৃসংশতার মুখে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে অন্তত ১৬ হাজার নারী গর্ভবতী বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
এ পর্যন্ত প্রশিক্ষিত নার্স ও মিডওয়াইফারদের হাতে ১৭৩টি নরমাল ডেলিভরির মাধ্যম রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিয়েছে বলে জানান মোহাম্মদ নাসিম। তার মতে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ১৬ থেকে ১৮ হাজার গর্ভবতী নারীকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের অনেকের জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কোনো জ্ঞান নাই। মিয়ানমারে তারা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যসেবা পেতেন না।
পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের দিয়ে রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে তিন ধরণের (কনডম, খাবার বড়ি ও তিন মাসমেয়াদী ইনজেকশন) জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম এনায়েত হোসেন।
তিনি বলেন, প্রায় এক মাসে গুলিবিদ্ধ ও ধারালো অস্ত্রের ক্ষতসহ নানাভাবে আঘাত পাওয়া দুই হাজার ৩৬৪ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ডায়রিয়ায় ৩ হাজার ৫২০ জন, চর্মরোগে দুই হাজার ৩৩৫ জন ও শ্বাসনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত সাত হাজার ৯৬৯ জন রোহিঙ্গা চিকিৎসা নিয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান।
রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবায় ৪০টিরও বেশি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা কাজ করছে। এর মধ্যে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ৮টি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার ১৪টি, স্থানীয় বেসরকারি সংস্থার ৯টি ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট ৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
শরণার্থীদের জন্য নবনির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১২টি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে, যেগুলোর প্রত্যেকটি কেন্দ্রে পরিদর্শকসহ চিকিৎসক, নার্স, ধাত্রী ও প্যারামেডিক থাকবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য উখিয়া ও টেকনাফের ৫০ শয্যার হাসপাতালে আরও ৫০টি করে অস্থায়ী শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন।
তাদের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ অধীনস্থ সব সংস্থার চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একদিনে বেতন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে হাসপাতালের বর্হিবিভাগ দুই ঘণ্টা বেশি খোলা থাকবে বলেও মন্ত্রী জানান।অর্থাৎ দুপুর ২টার স্থলে ওই দিন বর্হিবিভাগ খোলা থাকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মাস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী মোস্তফা সারোয়ার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ডব্লিউএন
আরও পড়ুন