২৬ পাহাড়ে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড স্থাপন
প্রকাশিত : ১০:০২, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩
পাহাড় কাটা রোধে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মহানগরীর বায়োজিদ লিংক রোড সংলগ্ন এলাকাসহ ২৬টি পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে দৃশ্যমান সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।
সোমবার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এসব পাহাড়ে সাইনবোর্ড স্থাপন করেন।
বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের মালিকানাধীন ১৬টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ১০টি পাহাড়সহ সর্বমোট ২৬টি পাহাড়ে প্রায় ৬ হাজার ৫৫৮টি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় অবৈধভাবে বসবাস করছে।
গত ৮ আগস্ট পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন আদেশ মোতাবেক পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুসারে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক।
সাইনবোর্ড স্থাপনকালে জেলা প্রশাসক বলেন, পাহাড় ধসের বিষয়ে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে পাহাড় কাটার দায়ে প্রায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। পাহাড় কাটা প্রতিরোধ করতে নিয়মিত মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, খেকোরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাহাড়কাটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব না হলেও এসব সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেখে অন্ততঃ জনসাধারণ পাহাড় কাটার বিষয়ে সচেতন হবে।
পাহাড়ে অবৈধ দখল ও কাটতে দেখলে তারা সরাসরি থানায়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে পারবে। পাহাড় কাটার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা নিজ উদ্যোগে পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের যাতে সরিয়ে নেয় সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, যেসব পাহাড়ে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে সেগুলো হচ্ছে: লিংক রোড ও জঙ্গল সলিমপুর সংলগ্ন পাহাড়সহ পলিটেকনিকেল হট স্টেশন সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ফৌজি ফ্লাওয়ার মিল্ক সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ষোলশহর রেলস্টেশন সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ফয়’স লেক এলাকায় ১, ২, ৩ নং ঝিল সংলগ্ন পাহাড়, মতিঝর্ণা ও বাটালি হিল সংলগ্ন পাহাড়, লেক সিটি আবাসিক এলাকা সংলগ্ন বিজয় নগর, বাটালি হিল ও মতিঝর্ণা অংশ, ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেট সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, কৈবল্যধাম হাউজিং স্টেট সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ।
এছাড়া আমিন জুট মিলস কলোনি সংলগ্ন টাংকির পাহাড়, উত্তর পাহাড়তলী মৌজার ১৫০ দাগের খাস খতিয়ানভুক্ত পাহাড় (জয়ন্তিকা পাহাড় সংলগ্ন), বিএস ২১২ ও ২১৩ দাগের পাহাড় (মুরগির ফার্ম হয়ে গার্ডেন ভিউ সংলগ্ন), আকবর শাহ বেলতলী পাহাড়, পলিটেকনিক কলেজ সংলগ্ন পাহাড়, লালখান বাজার জামিয়াতুল উলুম মাদ্রাসা সংলগ্ন পাহাড়, হারুন খান সাহেবের পাহাড়, নাসিয়াঘোনা এলাকা, চিড়িয়াখানার পিছনের পাহাড়, মধু শাহ পাহাড়, জালালাবাদ সংলগ্ন পাহাড়, নাগিন পাহাড়, ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট সংলগ্ন মীর মোহাম্মদ হাসানের পাহাড়, এমআর সিদ্দিকীর পাহাড়, মিয়ার পাহাড় ও ভেড়া ফকিরের পাহাড় (রৌফাবাদ ও অক্সিজেন)।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেক, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মাজহারুল ইসলাম, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান, মহানগরের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. উমর ফারুক, হাটহাজারীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রায়হান, সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার মাহমুদুল হাসান, আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ খায়রুল ইসলাম চৌধূরী, চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফেরদৌস আরা, বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এএফএম শামীম, স্টাফ অফিসার ও সহকারী কমিশনার প্লাবন কুমার বিশ্বাস।
এএইচ
আরও পড়ুন