ঢাকা, শুক্রবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

৩০ বছর আগের দুঃখ ঘুঁচল ইংলিশদের

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ১৮:৪৬, ১৩ নভেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১৮:৪৯, ১৩ নভেম্বর ২০২২

Ekushey Television Ltd.

২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরে এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও ঘরে তুলল ইংল্যান্ড। রোববার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে আরও একবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন জস বাটলাররা। 

প্রথমে বল করে মেলবোর্নের উইকেট কাজে লাগিয়ে ভালো বল করেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। যার ফলে নিয়মিত ব্যবধানেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৭ রান করতে পারেন বাবর আজমরা। 

যে রান তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেন বেন স্টোকসরা। অধরা অর্ধশতক হাঁকিয়েই জয় নিশ্চিত করেন স্টোকস। আর তাতেই ২০১০ সালের পরে আরও একবার ২০ ওভারের বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড।

৩০ বছর আগের দুঃখ ঘুঁচল ইংরেজদের। কেননা, ১৯৯২ সালে এই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই ইংল্যান্ডকে হারিয়েই ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জিতেছিলেন ইমরান খান। বাবর আজমরা সেটা করতে পারলেন না। হেরে মাঠ ছাড়তে হল তাদেরকে।

এমসিজিতে এদিন টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার। তার সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণিত করেন দলের বোলাররা। শুরু থেকেই সঠিক লাইন-লেংথে বল করছিলেন বেন স্টোকস, ক্রিস ওকসরা। তবে পাকিস্তানকে প্রথম ধাক্কা দেন অবশ্য স্যাম কারেনই। ১৫ রানের মাথায় মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সাজঘরে পাঠান তিনি। 

তিন নম্বরে নেমে আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন তরুণ ব্যাটার মোহাম্মদ হারিস। তবে এদিন সফল হতে পারেননি। ৮ রান করে তাকেও ফিরতে হয় ১২ বল খেলে।

দু’উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক বাবর ও শান মাসুদ। চার-ছক্কা কম হলেও মেলবোর্নের বড় মাঠ কাজে লাগিয়ে দৌড়েই রান তুলছিলেন তারা। ফাইনালে ভালোই খেলছিলেন বাবর আজম। তবে ৩৮ রানের মাথায় আদিল রশিদের গুগলি বুঝতে পারলেন না তিনি। বোলারের হাতেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পাক অধিনায়ক। পরের ওভারেই শূন্য রানে আউট হয়ে যান ইফতিখার আহমেদ। যাতে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।

সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন শান মাসুদ ও শাদাব খান। বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন তারা। এবারের বিশ্বকাপে নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন মাসুদ। কিন্তু ডেথ ওভারে ছন্দপতন হলো পাকিস্তানের। পর পর উইকেট পড়ল তাদের। ৩৮ রানে আউট হলেন শান মাসুদ। আর শাদাব করলেন ২০ রান। বাকিরা কেউ রান পাননি। শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র একটি চার মারতে পেরেছেন পাক ব্যাটাররা।

যাতে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৭ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কারেন ও আদিল রশিদ দারুণ বল করলেন। কারেন ১২ রান দিয়ে ৩টি ও রশিদ ২২ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। ক্রিস জর্ডানও শেষ দিকে ২ উইকেট তুলে নেন ২৭ রানের বিনিময়ে।

জবাব দিতে নেমে ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেললেও ফাইনালে মাত্র ১ রানে আউট হন অ্যালেক্স হেলস। নিজের প্রথম ওভারে দুর্দান্ত ইয়র্কারে তাকে সাজঘরে ফেরান শাহিন শাহ আফ্রিদি। তবে অপর প্রান্তে বাটলারকে দেখে মনে হচ্ছিল- ভারতের বিপক্ষে ঠিক যেখানে শেষ করেছিলেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে সেখান থেকেই শুরু করেছেন। নাসিম শাহকে এক ওভারে চারটি চার মারেন ইংলিশ অধিনায়ক। 

আর তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন ফিলিপ সল্ট। তবে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরান হারিস রউফ। প্রথমে ১০ রান করা ফিল সল্টকে এবং তারপর ২৬ রান করা বাটলারকে আউট করেন তিনি।

এই দুই ব্যাটার দ্রুত আউট হলেও চাপে পড়েনি ইংল্যান্ড। জুটি বাঁধেন বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক। যে ভুল পাকিস্তানের ব্যাটাররা করেছিলেন, সেই একই ভুল করেননি তারা। বল দেখে খেলছিলেন। অহেতুক ঝুঁকি নেননি। ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকেই যাচ্ছিলেন তারা। 

পাকিস্তানের বোলাররা চেষ্টা করছিলেন এই জুটি ভাঙতে। নাসিম এক ওভারে রান কম দিলে চাপ কিছুটা বাড়ায় পরের ওভারে শাদাবকে বড় শট মারতে গিয়ে শাহিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রুক। তিনি করেন ২০ রান। পরের ওভারেই অবশ্য স্টোকসকে রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করেন শাদাব খান।

শেষ দিকে রানের গতি একেবারে কমে যায় ইংল্যান্ডের। নাসিম, হারিসদের বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারছিলেন না স্টোকস। দেখে বোঝা যাচ্ছিল প্রবল চাপে আছেন বাঁহাতি ব্যাটার। শেষ পাঁচ ওভারে জিততে দরকার ছিল ৪১ রান। বল করতে আসেন শাহিন আফ্রিদি। 

কয়েক ওভার আগেই ক্যাচ ধরতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। ফলে বল করতে যাওয়ার সময় খোঁড়াচ্ছিলেন এই পেসার। একটি বল করেই তাই উঠে যান শাহিন। বড় ধাক্কা খায় পাকিস্তান। শাহিনের ওভার শেষ করেন ইফতিখার। যার শেষ দু’বলে একটি চার ও একটি ছক্কা মারেন স্টোকস। আর ওই দু’বলেই মূলত খেলার ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়।

তার পরে আর আটকানো যায়নি ইংল্যান্ডকে। শেষ পর্যন্ত ৬ বল বাকি থাকতেই খেলা শেষ করে দেয় ইংল্য়ান্ড। ৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন বেন স্টোকস। তবুও ম্যাচ সেরা হতে পারেননি প্রথম ফিফটি হাঁকানো এই ব্যাটার। 

ম্যাচে মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেটসহ মোট ১৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ ও টুর্নামেন্ট সেরা হন স্যাম কারেন।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি