৫১৪ স্টল নিয়ে বসছে বাণিজ্য মেলা
প্রকাশিত : ১৬:১০, ২৭ নভেম্বর ২০১৭
আসন্ন বাণিজ্য মেলায় জায়গা পেতে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দফতরে ১৩০০টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। তবে আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি লটারি ও দরপত্রের মাধ্যমে মাত্র ৫১৪টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দিবে । মেলার আয়োজন কমিটিতে থাকা ইপিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এবারের ২৩ তম মেলা আগামী ১ জানুয়ারী থেকে শুরু হবে। প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মাঠে মাসব্যাপী এ মেলা চলবে। মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পেতে এ পর্যন্ত ১৩০০টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। আবেদনগুলোর মধ্যে যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে ৫১৪টি প্রতিষ্ঠান স্টল ও প্যাভিলিয়ন পাবে। তবে এর মধ্যে ২৭৭টি স্টল লটারির মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হবে। আর অবশিষ্ট প্যাভিলিয়নগুলো দেওয়া হবে দরপত্রের মাধ্যমে। এবারের মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২৬টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিদেশী উদ্যোক্তাদের জন্য রাখা হয়েছে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ১৮টি, মিনি প্যাভিলিয়ন ৮টি এবং প্যাভিলিয়ন ২৭টি।
মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) অনলাইনকে বলেন, মেলার সার্বিক প্রস্তুতি খুব দ্রুত এগুচ্ছে। এরই মধ্যে ৮০ ভাগ স্টল বরাদ্দের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট বরাদ্দের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। চলতি মাসে-ই বরাদ্দ কাজ শেষ করতে লটারি অনুষ্ঠিত হবে।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, মেলার এবারের আসর নতুন আঙ্গিকে সাজানোর পরিকল্পনা অনুযায়ী দরপত্র দিয়েছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো। এজন্য মেলার নকশায় ভিন্নতার পাশাপাশি নান্দনিক গেট, ডিজিটাল লে-আউট প্ল্যান ও ডিজিটাল ব্লোআপ রোড করা হবে।
এবারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় নতুন বিষয় হচ্ছে- প্রধান ফটক। গত কয়েক বছর ধরে কার্জন হলের আদলে তৈরি হয়েছিল এটি। এবার এই ফটকের পরিবর্তন করে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের চিত্র তুলে ধরা হবে। সেক্ষেত্রে এবারের ফটক ঢাকা গেটের আদলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হবে। এই আয়োজনের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে নানা প্রস্তাব এসেছে।
ইপিবি ইতিমধ্যে নির্মাণশৈলীর নকশা জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া মেলার মধ্যে ডিজিটাল `টাচ স্ক্রিন` থাকবে। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন চেনা যাবে।
রফতানি বাণিজ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। তবে এতে দেশীয় পণ্যের স্থানীয় ক্রেতা বাড়ানোর কৌশলও থাকবে। মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলা আয়োজন করতে যাচ্ছে।
এবারের মেলার ব্যতিক্রমী আয়োজন বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নকে আরও তথ্যবহুল করা হবে। এ জন্য প্যাভিলিয়নের আয়তন বাড়ানো হবে। প্যাভিলিয়ন আরও সমৃদ্ধ করা হবে। মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও পাখির পরিচিতির জন্য আলাদা আয়োজন থাকবে। ফিশ অ্যাকুরিয়াম ও বার্ড অ্যাকুরিয়ামে তা প্রদর্শন করা হবে। মেলায় গত বছর সুন্দরবনের আদলে কোনো পার্ক ছিল না। এবার সুন্দরবন পার্ক করা হবে। মেলায় প্রধান মঞ্চে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন লোকজ ঐতিহ্য ধারণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
মেলায় একাধিক স্টল বরাদ্দ নিয়েও অনেকে তা অর্থের বিনিময়ে অন্যকে দিয়ে দেয়। আবার অনেকে একাধিক স্টল বরাদ্দ পাওয়ার কারণে সময়সীমার মধ্যে তার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে পারে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এবার সে অভিযোগের বিষয়ে ইপিবি কোনো ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে কী না?
জানতে চাইলে মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, বরাদ্দের কাজ শেষ হলে আগামী ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করতে সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শেষ না করতে পারলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবেদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে জানতে স্ব স্ব জেলার ডিসির মাধ্যমে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে, যাতে ভুয়া কোনো প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ না পায়। এছাড়া বরাদ্দ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২৭টি শর্ত দিয়েই বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। শর্তগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট সময় নির্মাণ শেষ করা, অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্মানশৈলী মানসম্পন্ন করা উল্লেখযোগ্য।
/ডিডি/এআর
আরও পড়ুন