৫৭ ধারায় মামলা : আ.লীগের কেন্দ্রের অনুমতি লাগবে
প্রকাশিত : ২০:৪৭, ৯ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১৭:৩৫, ১০ আগস্ট ২০১৭
কোনো আওয়ামী লীগ নেতা তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করতে চাইলে এখন থেকে তাকে কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হবে। সম্প্রতি ৫৭ ধারায় দায়ের করা কয়েকটি মামলা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক ওঠার পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ নির্দেশনা দিয়েছেন। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা ঢাকা থেকে ওবায়দু কাদেরের টেলিফোন বার্তা পেয়েছেন। ওই বার্তায় দলের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘৫৭ ধারায় মামলা করার আগে কেন্দ্র থেকে আলোচনা করে অনুমতি নিতে হবে। কেউ যদি ৫৭ ধারায় মামলা করতে চায়, সেক্ষেত্রে তথ্য প্রমাণসহ উপযুক্ত অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, তৃণমূল থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের সত্যতা পেলে তবেই ৫৭ ধারায় মামলা করার অনুমতি দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অনুমতি ছাড়া কোনো নেতা ৫৭ ধারায় মামলা করলে দল তার বিরুদ্ধে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৫৭ ধারায় মামলার অপপ্রয়োগ ঠেকাতে আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেন, দলের যে কেউ এই মামলা করার আগে আমাদের জানালে আমরা যাচাই-বাছাই করে অভিযোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হলে অনুমতি সাপেক্ষে এ মামলা করা যাবে। সাধারণ সম্পাদক সারাদেশে এ বার্তা পাঠিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, বিভিন্ন ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাদের ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলা নিয়ে দেশব্যাপী নেতিবাচক সমালোচনার ঝড় ওঠে। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী বলেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সম্প্রতি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্রে এক শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার হয়। ওই ছবিতে বঙ্গবন্ধুকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে দাবি করে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মামলা করেন জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ওবায়েদ উল্লাহ সাজু। মামলায় ইউএনওর জামিন বাতিল করেন আদালত।
ঘটনাটি নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় এবং স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বরিশাল ও বরগুনার জেলা প্রশাসক ও আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
এ আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তুচ্ছ কারণে ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। এ প্রবণতা আত্মঘাতী। এসব কাজ বন্ধ করতে হবে।
এর আগে ৫৭ ধারায় মামলার বিষয়ে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয় পুলিশ সদর দফতর। পাশাপাশি এ ধারায় মামলা গ্রহণের আগে পুলিশ সদর দফতরের আইন শাখার পরামর্শ নেয়ার কথা বলা হয়।
ডব্লিউএন
আরও পড়ুন