৬০ বছরে পা দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত : ১১:৩১, ১৮ আগস্ট ২০২০
আজ ১৮ আগস্ট। ৫৯ পেরিয়ে ৬০ বছরে পা দিয়েছে ময়মনসিংহে অবস্থিত কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার আঁতুড়ঘর খ্যাত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। কৃষিশিক্ষা, গবেষণা ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৯৬১ সালের এই দিনে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়। এর পদযাত্রা শুরু হয়েছিল ভেটেরিনারি ও কৃষি অনুষদ নিয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ৫৯ বছরের দীর্ঘ পথচলায় দেশের কৃষিতে এসেছে অনেক সাফল্য। ধান, সরিষা, কুল, সয়াবিন, আলু, আম, লিচু, মুখিকচুসহ বেশ কিছু ফসলের কয়েকটি করে উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ফলদ, ভেষজ প্রজাতির বৃক্ষসমৃদ্ধ এখানকার জার্মপ্লাজম সেন্টারটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং দেশে প্রথম। গাঙ মাগুর, কই, বাটা মাছ, তারাবাইন, গুচিবাইন, বড় বাইন, কুঁচিয়াসহ বিভিন্ন মাছের কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিও উদ্ভাবন করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণাকে বেগবান করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেশকিছু বিশেষায়িত গবেষণাগার। গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ১৯৮৪ সালের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাউরেস উদ্ভাবিত উন্নত কৃষি প্রযুক্তিগুলো সম্প্রসারণের জন্য ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্র। এ সম্প্রসারণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়। বর্তমানে বাউরেসের অধীনে ৫১৯টি গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি, ইনস্টিটিউট অব এগ্রিবিজনেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, হাওর ও চর উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, ভেটেরিনারি ক্লিনিক, দেশের প্রথম কৃষি জাদুঘর, উপমহাদেশের প্রথম মৎস্য জাদুঘর এবং প্রায় সাড়ে চার হাজার বৃক্ষসমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন রয়েছে।
ময়মনসিংহ শহর থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে এক হাজার ২০০ একর জায়গায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট ছয়টি অনুষদে ৪৩টি বিভাগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৬৮৫ শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দিয়েছে। এর মধ্যে স্নাতক ২৮ হাজার ৯৩০ জন, স্নাতকোত্তর ১৯ হাজার ৫ জন এবং পিএইচডি ৭৫০ জন। বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী সাত হাজার ৯২৩ জন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ৫৬৩ জন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছেলেদের জন্য ৯টি ও মেয়েদের জন্য ৪টি আবাসিক হল রয়েছে।
শোকের মাস আগস্ট এবং করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে জাঁকজমকপূর্ণ তেমন কোনো কর্মসূচি হাতে নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে আজ সকালে ব্রহ্মপুত্র নদে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান।
এসএ/
আরও পড়ুন