ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

৬ মাসে লক্ষমাত্রার ২৯ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায়

প্রকাশিত : ১৭:৫৬, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব আদায়ে লক্ষমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। জুলাই থেকে ডিসেম্বরে লক্ষমাত্রা ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭ কোটি টাকা হলেও আদায় করা গেছে এর চেয়ে ২৯ হাজার কোটি টাকা কম।

লক্ষমাত্রা তুলনায় কম আদায়ের এ প্রবণতা সরকারের জন্য উদ্বেগজনক বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, রাজস্ব আদায় কম হলে ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে ঋণ গ্রহণ বাড়ে। ফলে সুদ পরিশোধে চাপ আসে, যা সামষ্টিক অর্থনীতিকে ব্যাহত করে। বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ জোরদারের পরামর্শ দেন তারা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ সময়ে রাজস্ব আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। এর আগের অর্থবছরে ছিল যা প্রায় ১৮ শতাংশ।

এনবিআরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয় ৯৭ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে আমদানি পর্যায়ে ৪০ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয় ৩০ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। স্থানীয় ভ্যাটে ৫০ হাজার ২৪ কোটি টাকার বিপরীতে আয় ৩৭ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা এবং আয়করে ৩৫ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় ২৮ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। এবার বাজেট ঘোষণায় এনবিআরের মাধ্যমে মোট আহরণের লক্ষ্য ধরা হয় ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছর থেকে ২৯ শতাংশ বেশি আয় ধরে এটি প্রাক্কলন করা হয়।

সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনের বছরে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক থাকলেও রাজস্ব আদায় তেমন বাড়ছে না।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের কারণে রাজস্ব আয়ে প্রভাব পড়েছে। তবে নির্বাচনের পরে আয় বাড়বে। তিনি বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে বিশদ কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে অর্থবছর শেষে ঘাটতি অনেক কমে আসবে। তিনি দাবি করেন, চলতি অর্থবছর রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্য দেওয়া হয়, তা অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস খাত থেকে বেশি ভ্যাট আদায় হয়। এলএনজির দাম সহনীয় রাখতে সম্প্রতি এর সম্পূরক শুল্ক্ক কমানো হয়। এ ছাড়া নির্বাচন ঘিরে উন্নয়ন কাজের গতি স্তিমিত হয়ে পড়েছে। এসব কারণে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হবে। এটি কমিয়ে ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি