ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

৯৯৯ : পাঁচ দিনে সেবা মিলেছে ১৫ হাজার ‍মানুষের

প্রকাশিত : ১৯:০১, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ০৯:৫২, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পুলিশি সেবা দিতে ১২ ডিসেম্বর থেকে জরুরি সেবা সার্ভিস ‘৯৯৯’ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। ১২ ডিসেম্বর উদ্বোধনের পর প্রথম পাঁচ দিনে সেবা পেয়েছেন ১৫ হাজার ‍মানুষপালাক্রমে পুলিশের মোট ১২৮ জন সদস্য এই কাজে সহায়তা করেছেন।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯টা পর্যন্ত ১ লাখ ৫ হাজার ১৮৭টি ফোন এসেছে ইমার্জেন্সি সার্ভিসে। এর মধ্যে ৫৯ হাজার ৬৪৭টি ফোনেই অপর প্রান্ত থেকে কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। শিশুরা ৫৬২টি ফোন করেছে। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব চেয়ে ফোন এসেছে ১৪ হাজার ৯৩৩টি। কর্তব্যরত নারী পুলিশ সদস্যদের বিরক্ত করার ফোনের সংখ্যা ১৬ হাজার ৩৬৪টি। ১১ হাজার ৭৯০টি মিসড কল।

নিজেদের বিভিন্ন অভিযোগ এবং সমস্যার সমাধান চেয়ে ফোন করেছেন- এমন নারীর সংখ্য ১৫২ জন। বাকি ফোনগুলোর মধ্যে কিছু ফোন এসেছে পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকেই। আর কিছু ফোনকে কোনো শ্রেণি বিভাগের মধ্যে ফেলা হয়নি। ৩৩২ জন সেবা পাওয়া ব্যক্তির মধ্যে আগুন-সংক্রান্ত ছিল ৯৭টি, দুর্ঘটনা ৫৩টি এবং জুয়া, প্রতারণা, সাইবার অপরাধ, মৃত্যুসংবাদ, অপহরণ—এসব পুলিশি সমস্যা নিয়ে ফোন করেছেন বাকি ১৮২ জন।

এ প্রসঙ্গে পুলিশের এসপি তবারক উল্ল্যাহ জানান, এই সেবা পেতে গ্রাহকের কোনো রকম খরচ লাগে না। কোনো অপরাধ ঘটতে দেখলে, প্রাণনাশের আশঙ্কা দেখা দিলে, কোনো হতাহতের ঘটনা চোখে পড়লে, দুর্ঘটনায় পড়লে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে, জরুরিভাবে অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাওয়া যাবে।

মোবাইল ফোন ও টেলিফোন উভয় মাধ্যমে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা যাবে। বর্তমানে ১২৮ জন সদস্য কাজ করলেও খুব শিগগির জনবল দ্বিগুণ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।

৯৯৯ সেবাটির নাম রাখা হয়েছে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস। এতে ফোন করলে একই সঙ্গে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা মিলবে।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশ পুলিশ এ সেবা শুরু করেছে। ডিজিকন টেকনোলজিস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই তথ্য প্রযুক্তিতে সহায়তা দিচ্ছে। আগামী দুই বছর এক্ষেত্রে সহায়তা দিবে তারা।

আপাতত আবদুল গনি রোডে অবস্থিত পুলিশের কমান্ড কন্ট্রোল সেন্টার থেকে এ সেবা পরিচালিত হচ্ছে। এ সেবা কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (আইসিটি) এ প্রক্রিয়ায় সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছেন।

ইতোপূর্বে ২০১৫ সাল থেকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে সীমিত আকারে ২০১৬ সালের শেষ পর্যন্ত ৯৯৯ সেবা চালু ছিল। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমটি চলে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে। সেখানে প্রায় ২৭ লাখ কল আসে। এর মধ্যে ৩৬ হাজার কল পুলিশকে জানানো হলে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। জরুরি প্রয়োজনে যারা সেবা চেয়েছেন, তাদের ৯০ শতাংশ সেবা পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। প্রকল্পটি তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের পর ২৮ অক্টোবর থেকে পুলিশের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে পরীক্ষামূলকভাবে চালু ছিল।

সেবা দেওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কল স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেকর্ড করা হবে। এ রেকর্ড পর্যালোচনার মাধ্যমে সেবা প্রক্রিয়াটিকে আরও উন্নততর করা হবে।

৯৯৯-এ ফোন করে যিনি সাহায্য চাইবেন, সাহায্যপ্রার্থীর বক্তব্যের নোট নিয়ে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জায়গায় কল ট্রান্সফার করা হবে। যেমন- সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে বা হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে ফোন করলেন। ফোন রিসিভ করার পর কলসেন্টার থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করা হবে। থানার ওসি বা অন্য কোনো কর্মকর্তা কল সেন্টারের বার্তা পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠাবেন।

সাহায্য দেওয়ার পর তিনি ৯৯৯-এ পুনরায় ফলোআপ বার্তা পাঠাবেন। এভাবে একটি প্রক্রিয়া শেষ হবে। তবে অবাঞ্ছিত কল এড়ানোর সব ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া যিনি দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে ঘটনাস্থল জানাতে পারবেন না, তারও দুর্ভাবনার কোনো কারণ নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রযুক্তির সহায়তায় তার লোকেশন বের করতে সক্ষম হবে।

পুলিশের জরুরি সেবা সার্ভিস নম্বরে ফোন দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেবা নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এরই মধ্যে খুন, ধর্ষণ, অগ্নিকাণ্ড ও বাল্যবিবাহের মতো ঘটনায় ফোন দিয়ে সেবা নিয়েছেন অনেকে।

 

/ডিডি/ এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি