ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪

বাতির নিচে অন্ধকার

ফয়সাল আহাম্মেদ দ্বীপ

প্রকাশিত : ২০:২৯, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ | আপডেট: ২০:৪৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

ইউরোপের দেশ প্যারিস। এক স্বপ্নময় কাল্পনিক শহর। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য আর সংস্কৃতির এক পাদপীঠ। যুগে যুগে কালের আবর্তনে মানুষ প্যারিসের স্বপ্নে বিভোর হয়ে নীজ পরিবার স্বজন কিংবা প্রিয় জন্মভূমি ছেড়ে প্যারিসে বসতি গড়েছেন। কেউবা অর্থনৈতিক মুক্তির আশায় কেউবা নীজ দেশে নির্যাতিত কিংবা বিতাড়িত হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন এই শহরে।

প্যারিস এমন এক শহর যেই শহরের প্রতিটি অলি গলিতে আছে জৌলুস আর আধিপত্য। 

সাম্প্রতিক সময়ে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যুদ্ধ বিধ্ধস্ত দেশ আফগানিস্তান, সিরিয়া থেকেও বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন ফ্রান্সে। আশ্রয় প্রার্থনা মঞ্জুর হলে জীবনের পটভূমি যেমন পরিবর্তন আসে তেমনি নামঞ্জুর হলে জীবনে নেমে আসে চরম অন্ধকার। 

কুমিল্লার রহিম (ছদ্ম নাম), চার বছর হলো ফ্রান্সে আছেন। ইতিমধ্যে ফ্রান্সে বাড়ি কিনেছেন। দেশেও একাধিক প্ল্যাট কিনেছেন। বাবা মাকে হজ্বে পাঠিয়েছেন, চাকুরি করেছিলেন অ-তাকসে। এখন নিজেই অ-তাকসের স্বত্বাধিকারী। 

প্যারিসের আসার ছয় মাসের মাথায় অফরা থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় মঞ্জুর করা হয়েছে। দার দেনা করে ফ্রান্সে এসেছিলেন, এক বছরেরও কম সময়ে সব শোধ করেছেন। সব কিছুই কল্পনার মতো মনে হচ্ছে এতো কম সময়ে ভাগ্যের এতো পরিবর্তন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বাংলাদেশি জানান, এগারো বছর ধরে ফ্রান্সে আছেন, বহু আগেই আশ্রয় প্রার্থনা বাতিল হয়েছে। দেশে থাকাকালীন একটা চাকরি করতেন, বেতনও মোটামুটি ভালো ছিল। উন্নত জীবনের সন্ধানে নানা দেশ ঘুরে ফ্রান্সে আসেন। শুরুতে সরকারি ভাতা এবং টেলিফোনের দোকানে চাকরি করে ভালোই চলছিল, তবে আশ্রয় প্রার্থনা বাতিল হওয়ার পর জীবনে নেমে এলো চরম অন্ধকার। 

আইফেল টাওয়ার, শতাব্দীর চিরচেনা গীর্জা, দর্শনীয় স্থানে চাকচিক্যময় ছবি তুলে ফেইসবুকে আপলোড করলেও মনের কোণে বাসা বেঁধে আছে এক অজানা অসুখ। নীজের চাহিদা, পরিবারের চাহিদা কিংবা স্বজনদের চাহিদা পূরণে বার বার ব্যর্থ হয়ে মনে করেছিলেন আত্মহত্যাই করবেন কি-না। তবে এই সংখ্যাটা একেবারেই কম নয়, কারণ তার মতো এমন অনেক বাংলাদেশি আছেন যারা আশ্রয় প্রার্থনা মঞ্জুর না হওয়ার পর চরম হতাশায় জীবন পার করছেন। এ যেন বাতির নিচেই অন্ধকার।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি