যুদ্ধ-মহামারির মধ্যেও দেশের অগ্রযাত্রা থামবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৪:০৬, ১২ মার্চ ২০২২
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও দেশের অগ্রযাত্রা থামবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল বলেই গত ১৩ বছরে পরিবর্তিত বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছে মানুষ।”
শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) তাঁর সরকারি সফর উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আবুধাবিতে তাঁর আবাসস্থল থেকে ভার্চুয়ালি ইভেন্টে যোগ দেন, বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের লোকেরা তিনটি ভেন্যু থেকে সংযুক্ত ছিল- দুবাইতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট, আবুধাবি থিয়েটার এবং রাস আল খাইমায় বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭৫ সালের পর একটি কালো অধ্যায় ছিল, কিন্তু কালো মেঘ চলে গেছে। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।”
কোভিড-১৯ কালে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এখন আরেকটি নতুন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সুতরাং, আমরা আরেকটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। জ্বালানির দাম বাড়ছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আমরাও কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। তবে, আমি বিশ্বাস করি যে আমরা বাংলাদেশে এটি মোকাবেলা করতে সক্ষম হব।”
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের তাদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের বলতে বলেছেন, যেন কোন জমি অনাবাদি রাখা না হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা যদি তা করতে পারি, তাহলে বিশ্বজুড়ে যতই অর্থনৈতিক মন্দা এবং খাদ্য ঘাটতি থাকুক না কেন, আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না।”
দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “কেউ ইচ্ছা না করলে দেশে বেকার থাকার সুযোগ নেই। কেউ একটু উদ্যোগ নিলে আর বেকার থাকবে না।”
সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর সম্পর্কে, সরকার প্রধান জানান, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং দুই দেশের মধ্যে কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি মনে করেন তার এ সফর খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে।
তিনি বিদেশী চাকরি প্রত্যাসীদের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা কখনোই অবৈধ পথে বিদেশে না যান এবং বাড়ি-জমি বিক্রি না করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে যান।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে প্রবাসীদেরকে বিদেশের মাটিতে নিয়ম-কানুন মেনে চলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আপনাকে নিজের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে, নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং নিজ দেশ এবং যেদেশে আপনি আছেন উভয় দেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।”
প্রবাসীদের দাবির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “সরকার তাদের জন্য দ্রুত পাসপোর্ট সেবা নিশ্চিত করতে এবং বিমানবন্দরে আরও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে প্রবাসীদের হয়রানি কমাতে নজরদারি জোরদার করার পদক্ষেপ নিয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট অবতরণ করলে বিমানবন্দরে লাগেজ ডেলিভারি সেবা নিয়ে কিছু সমস্যা দেখা যায়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল তাঁর সরকার নির্মাণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্মাণকাজ শেষ হলে লাগেজ সমস্যা কেটে যাবে।”
অনুষ্ঠান চলাকালে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা প্রমুখ। তিনটি ভেন্যু ভার্চুয়ালি ইভেন্টের সাথে সংযুক্ত ছিল।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে একজন কলেজ ছাত্রীসহ তিনজন প্রবাসীও বক্তব্য রাখেন।
সূত্র: বাসস
এসএ/
আরও পড়ুন