দুই বছরেও খোঁজ মেলেনি মালয়েশিয়া প্রবাসীর
প্রকাশিত : ১৫:১৯, ২৩ মে ২০২২
ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন পাবনার আটঘোরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের চৌকিবাড়ি গ্রামের দুলাল মণ্ডলের ছেলে মিরাজুল মণ্ডল। দেশটিতে যাওয়ার কিছুদিন পর পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এরপর দুই বছর কেটে গেলেও আজও তার খোঁজ মেলেনি।
পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-৫৪৯) নামক একটি কোম্পানির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মিরাজুল। সেখানে পৌঁছানোর পর মালয়েশিয়ার ইয়াংসিং ইন্ডাষ্ট্রিজ ইপুএসডিএন.বিএইচডি নামক কোম্পানিতে সাধারণ কর্মী হিসেবে যোগ দেন তিনি। নিয়মিত টাকা পাঠানো ও বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনের খোঁজখবরও রাখতেন তিনি।
কিন্তু হঠাৎ করেই ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে পরিবারের সাথে মিরাজুলের যোগাযোগ বন্ধ। পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনরা কেউই জানেন না মিরাজুলের কী হয়েছে? আদৌ তিনি বেঁচে আছেন কি না।
মিরাজুলের বাবা দুলাল মণ্ডলের অভিযোগ, মালয়েশিয়া যাওয়ার পর থেকে যথারীতি যোগাযোগ করাসহ বেতনের টাকা পাঠাতো। কিন্তু বেতন-ভাতা বা চাকরির কোনো সমস্যা না থাকলেও মাঝে মাঝে ফোনে বলতো তার রুমমেট পাবনার মিলন, কুমিল্লার ফরহাদ ও ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার সজীব নামের তিনজন তাকে নির্যাতন করতো এবং টাকা পয়সা কেড়ে নিতো। এছাড়া তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিতো তারা।
এরপর ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি শেষ বার কথা বলার পর থেকেই তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো সন্ধান পাইনি।
বাবার দাবি, তিন রুমমেটই মিরাজুলকে অপহরণ করে রেখেছে।
মিরাজুলের সন্ধান চেয়ে বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে ও থানায় লিখিত আবেদন করেন বাবা দুলাল মণ্ডল। কিন্তু কোনো সহায়তা পাননি তিনি।
এদিকে, একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে ঢাকা মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন মিরাজুলের মা। পরিবারের প্রত্যাশা, ছেলেকে ফিরে পেলেই হয়তো আবারও সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্টরা জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে নিয়োগকারী কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা পেতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই মিরাজুল মণ্ডলের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দূতাবাস সংশ্লিষ্টরা।
এএইচ
আরও পড়ুন