কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন
প্রকাশিত : ১৯:২৩, ১৭ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১৯:৪০, ১৭ আগস্ট ২০১৮
ইসলামী শিক্ষা ও আদর্শের সুতিকাগার ‘কওমী মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি বিল’ মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কাতার প্রবাসী উলামা-মাশায়েখ ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, এ স্বীকৃতি কাওমী সন্তানদের জন্য মেধা ও জ্ঞানচর্চার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে তাদের ব্যাপক অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি করবে। আল নূর কালচারাল সেন্টার, কাতার আয়োজিত কওমী সনদের স্বীকৃতিঃ প্রত্যাশা ও আশংকা শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মতামত ব্যক্ত করা হয়।
গত ১৪ আগষ্ট দোহার দাওয়াত রেষ্টুরেন্টে নির্বাহী সদস্য মুফতি আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে এ সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন আলনূর নির্বাহী পরিচালক মাওলানা ইউসুফ নূর।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন কাতার শখার সভাপতি নজরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ কাতার শাখার (একাংশ) সভাপতি শফিকুল ইসলাম প্রধান, ইসলামী আন্দোলন কাতারের সেক্রেটারী মাওলানা তোয়াহা সিদ্দিকী, ঢাকা সমিতির সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আলিমুদ্দিন, কফিল উদ্দিন, মুফতি আব্দুল কাদের শাহীন ও প্রকৌশলী আবুল ওয়ালীদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেন প্রখ্যাত কারী হাফেজ নূর মুহাম্মদ, হাফেজ জুনাইদ, কারী মুস্তাফিজুর রহমান ও হাফেজ সাফওয়ান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,কাতার ইসলামী সেন্টারের গবেষক প্রকৌশলী মাওলানা সৈয়দ মাহবুব আলম, আল নূর শিক্ষা বিভাগীয় সহকারী পরিচালক মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী সদস্য হাফেজ লোকমান, কারী ইব্রাহিম, রাকিবুল ইসলাম ও ফজলে রাব্বি প্রমুখ।
মাওলানা ইউসুফ নূর বলেন, ‘১৮৬৮ খৃষ্টাব্দে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উপমহাদেশে ইসলামী রেনেসাঁর নতুন অধ্যায় শুরু হয়। এই ধারাবাহিকতায় ১৯০১ইং সনে চট্টগ্রাম দারুল উলুম হাটহাজারীর গোড়াপত্তনের মধ্য দিয়ে এ দেশে কওমী ধারার শুভ সূচনা হয়।
আজ শুধু উপমহাদেশ নয় বরং দুনিয়াজুড়ে কওমী মাদ্রাসার জয়জয়কার। এক নিউইয়র্ক শহরেই রয়েছে কয়েকশ কওমী সেন্টার। কওমী মাদ্রাসার তুখোড় মেধাবী সন্তানেরা হিফজুল কুরআন, ইসলামী ফিকহ ও আরবী সাহিত্যে আন্তর্জাতিক পুরস্কার ছিনিয়ে এনে দেশের মুখ উজ্জল করেছে। কাতারে প্রায় হাজার খানেক ইমাম-মুয়জ্জিন ও কুরআন প্রশিক্ষক রয়েছে, যাদের অধিকাংশই কওমী পড়ুয়া।
তিনি আরও বলেন, এ স্বীকৃতি আমাদের প্রত্যাশা ও আশংকা দুটোই বাড়িয়ে দিয়েছে। এ স্বীকৃতির কারণে কওমী ছাত্ররা পৃথিবীর খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশুনা ও অধ্যাপনার সুযোগ পাবে। ইসলামী বিভাগ সমূহ তাদের দ্বারা উপকৃত হবে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের কর্মপরিধি বৃদ্ধি পাবে। তবে সরকারী সংশ্লিষ্টতার কারণে অতীতে পৃথিবীর বিভিন্ন ইসলামী প্রতিষ্ঠানের স্বকীয়তা হারানোর নজিরও কম নয়। তাই উলামা মাশায়েখদের সর্বোচ্চ সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, কওমী মাদ্রাসা শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি ইসলামের দুর্গ, মানবতা ও নৈতিকতার পতাকাবাহী এবং জাতির অতন্দ্র প্রহরী।
মাওলানা ইউসুফ নূর আরও বলেন, কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন। শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফীর গতিশীল নেতৃত্ব স্বীকৃতি আন্দোলনকে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছিয়েছে। মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ, মুফতি রুহুল আমিন ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান প্রমুখের অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে।শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক, মুফতি ফজলুল হক আমিনী ও মাওলানা আব্দুল জাব্বার সাহেবানদের অবদান ও জাতি কৃতজ্ঞ চিত্তে স্বরণ করবে।
শফিকুল ইসলাম প্রধান বলেন, উলামা মাশায়েখ জাতির দরদি অভিভাবক। তারা আমাদের দুরে ঠেলে দিতে পারেননা। তারা কল্যাণের উৎস। প্রশাসন ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ এ উৎস থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখলে তা হবে দুঃখজনক। কওমী সনদের স্বীকৃতি দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তৌহীদি জনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন। আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। সাধারণ শিক্ষিত ও ইসলামী বিশেষজ্ঞদের সেতুবন্ধন আল নূর সেন্টারের সফলতা কামনা করি।
এসি
আরও পড়ুন