চীনের সাংস্কৃতিক উৎসবে বাংলাদেশীদের জয়জয়কার
প্রকাশিত : ১৫:৫৮, ২৮ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৬:০৫, ২৮ মে ২০১৯
চীনের শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত উহানের সেন্ট্রাল চায়না নরমাল ইউনিভার্সিটিতে হয়ে গেল আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব। দুদিনব্যাপী এ উৎসবে প্রায় ৭০ টি দেশের মিলনমেলায় অংশ নেয় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও। এবারের উৎসবে সেরা স্টল ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করে বাংলাদেশের স্টল।
গেল শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ আন্তর্জাতিক উৎসবটির পঞ্চম আসরের প্রথম পর্বে স্টল সাজিয়ে নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরেন বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীর। রোববার রাতে একটি জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ আয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কলেজ অব ইন্টারন্যাশনাল কালচারাল এক্সচেঞ্জ এর ২০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও এ মিলনমেলায় অংশ নেয়া উল্লেখযোগ্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে চীন, রাশিয়া কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া, মিশর, কাজাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া ও আরো অর্ধশতাধিক দেশ।
উদ্বোধনী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জাও লিংয়ুনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠে এবারের আসরের। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভাব এবং সংস্কৃতির আদান প্রদান ও সম্প্রীতি বাড়াতেই দুই বছর পর পর এ ধরনের আয়োজন করা হয়। এসময় তিনি আয়োজনের সাথে জড়িত সকল সদস্য ও অংশগ্রহণকারীদের শুভেচ্ছা জানান।
উৎসবের প্রথমদিনে বাংলাদেশের নানা ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে স্টল সাজান বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা। সেন্ট্রাল চায়না ইউনিভার্সিটির চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী, চিত্রশিল্পী ইব্রাহীম মাহমুদের তৈরী করা দৃষ্টিনন্দন প্রবেশদ্বার, স্টলে যোগ করে ভিন্নমাত্রা। পুরো স্টলজুড়ে বাংলাদেশী নানা পোশাক, খাদ্য, সাংস্কৃতিক নিদর্শন, শিল্পপণ্যসহ নানা সামগ্রী স্থান পায় যা প্রশংসা কুড়ায় অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের। এসময় হাতে মেহেদী লাগাতে বাংলাদেশী স্টলে ভীড় করেন অন্যান্য দেশের নারী শিক্ষার্থীরা। মেলা ঘুরে বাংলাদেশি স্টলে এসে এর ভূয়সী প্রশংসা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এবার দর্শনার্থী ভোট এবং সেরা স্টল ক্যাটাগরি উভয়তে সব দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করে নেয় বাংলাদেশের স্টল।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে মুক্তমঞ্চে অন্যান্য দেশে সাথে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীরাও নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মঞ্চস্থ করেন। বাংলাদেশী গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করেন ফারজানা ইয়াসমিন মুক্তা, হিমানি আরা, শিশুশিল্পী অদ্রি,প্রাপ্তি, আরিশা ও পৌরি। এসময় ময়না ছলাত ছলাত গানের সাথে শিশুশিল্পীদের পরিবেশনা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এছাড়াও বাংলাদেশের হয়ে চীনা সংগীত পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব ইরফান ও সঞ্জয়।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে আয়োজন করা হয় এক জাকজমক সাংস্কৃতিক উৎসবের। এতে প্রায় ১৫ টি দেশ তাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মঞ্চস্থ করে। এসময় নানা দেশের বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুগ্ধ হয়ে করতালি আর উল্লাসে অনুষ্ঠানস্থল মাতিয়ে তোলেন শত শত দর্শক। নানা রঙের আলোকসজ্জা আর বিভিন্ন দেশের বাহারি পোশাকে এসময় পুরো স্থানটি রুপ নেয় একটি জমকালো উৎসবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক হানিফ মিয়া এবং শাহীনুর রহমান, বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তা ও পিএইডি গবেষক আবদুল্লাহ আল হাফিজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক মোবারক হোসেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পিএইচডি গবেষক আবির মাহমুদ, চিত্রশিল্পী ও মাস্টার্স শিক্ষার্থী ইব্রাহীম মাহমুদ, পিএইচডি গবেষক নূর মোহাম্মদ ও আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পিএইচডি গবেষক খালিদ ইবনে হাসান। আয়োজনে সহযোগীতায় ছিলেন আকিব ইরফান, রফিক, ফাহিম, সঞ্জয়, সামিউল, নূহ, আরাফ মাহমুদ আকিব ও হৃদয়।
আন্তর্জাতিক এ সাংস্কৃতিক উৎসবের প্রমোশনাল টিমে ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ফায়সাল করিম। উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তার তৈরি করা একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়।
টিআর/
আরও পড়ুন