সৌদিতে আরো ৯ বাংলাদেশির মৃত্যু
প্রকাশিত : ১৬:৫৩, ১৯ এপ্রিল ২০২০
৯ বাংলাদেশির ৮ জন
সৌদি আরবে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে গত ১৮ এপ্রিল (শনিবার) নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১১৩২ জন। মৃত্যুর মিছিলে নতুন করে যোগ হয়েছে আরো ৫ জন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৯২ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩২৯ জন। সৌদি প্রেস এজেন্সি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সৌদি সরকার ইতিমধ্যেই অনেকগুলো জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। করোনা নিয়ে সৌদি সরকারের দিক নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে তারা। রাজধানী রিয়াদ, মক্কা, মদিনা ও জেদ্দাসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে জারি করা কার্ফিউ অনির্দিষ্টকালের জন্য চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সউদ।
এদিকে, রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দা কনস্যূলেটের দেয়া তথ্যমতে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মোট ১৮ জন বাংলাদেশী প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। একদিকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু, অন্যদিকে অবরুদ্ধ ও গৃহবন্দী অবস্থায় বেকার, অর্থ সংকট, মানসিক ও পারিবারিক চিন্তাসহ নানা কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে সৌদি আরব প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে আরো ৯ বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এর হলেন- শফি উল্লাহ (৫২), মাওলানা তাওহিদুল ইসলাম (৪৩), মুহাম্মদ জমির উদ্দিন (৩৫), মুহাম্মদ সমির (৩২), মোঃ আবদুল হালিম (৪৫), রমজাল আলী, খোরশেদুল আলম (৪০), আবদুল কাদির, সিরাজুল হক (৫৫)।
শফি উল্লাহ মদিনায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি মদিনা থেকে একশ কিলোমিটার দূরে আল মাহদা আল দাবারের বাগানের কাজ করতেন। প্রবাসী শফি উল্লাহ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের মছনহাট এলাকার এজাহার মিয়ার পুত্র।
প্রবাসী মাওলানা তাওহিদুল ইসলাম জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে মদিনা মানোয়ারার কাছে নিজ বাসায় মারা যান। তার বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের সিকদার পাড়া গ্রামে।
মুহাম্মদ জমির উদ্দিন মক্কা নগরীতে নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া ইউনিয়নে। প্রবাসী মুহাম্মদ সমির মারা যান মক্কায় নিজ বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায়। তিনি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার দলিয়া মাছিপুর গ্রামে মাদু ভূইয়ার পুত্র। সিরাজুল হক মক্কা নগরীর বাহারাত এলাকায় নিজ বাসায় মারা যান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার রহিমানগরে।
এদিকে, একইরোগে আক্রান্ত হয়ে মোঃ আবদুল হালিম ও রমজাল আলীর মৃত্যু হয় জেদ্দাস্থ নিজ নিজ বাসায়। আবদুল হালিমের বাড়ি বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলায়। তবে রমজাল আলীর গ্রামের বাড়ির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, জেদ্দা নগরীর একটি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রবাসী খোরশেদুল আলমের। তার বাড়ি কক্সবাজার ভারুয়াখালী ইউনিয়নে। একই রোগে আক্রান্ত হয়ে তার ছোট ভাই জেদ্দা প্রবাসী মুহাম্মদ তারেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসাধীন।
মদিনায় মৃত্যু হয়েছে আবদুল কাদির নামে আরেক প্রবাসী ও গত ১৮ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে সৌদির একটি হাসপাতাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া বাংলাদেশি নাম এখনো পাওয়া যায়নি।
এভাবে প্রতিদিন সৌদি-প্রবাসী বাংলাদেশিরা মারা যাচ্ছে। গত দেড় মাসে মরণব্যাধি রোগ করোনায় মারা গেছে ১৮ জন ও হৃদরোগ-সহ নানা কারণে হাসপাতাল অথবা নিজ বাসায় মারা গেছেন অনন্ত ৫৪ জন বাংলাদেশি।
এনএস/
আরও পড়ুন