সৌদিতে রোজা শুরু, আতংকিত বাংলাদেশিরা
প্রকাশিত : ২০:৩৪, ২৩ এপ্রিল ২০২০
সৌদিতে ঘরে আবদ্ধ বাংলাদেশিদের একটা অংশ
চলমান বৈশ্বিক মহামারির কারণে সৌদি আরবে রমজান শুরু হচ্ছে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) থেকে। এ নিয়ে সেখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে করোনা আতংক দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। একদিকে কর্মহীনতা আর লকডাউন, অন্যদিকে দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের পরিবারের অবস্থা বিবেচনা করে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন অনেকেই।
দেশটিতে করোনা ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশি প্রবাসীদেরই। হৃদরোগে এ পর্যন্ত ৮০ জনেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের।
এদিকে, আজ (২৩ এপ্রিল) সৌদি আরবে তারাবীহ নামাজ পড়ে ভোরে সেহেরি খেয়ে পবিত্র রমজান মাস শুরু করবে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। রমজান উপলক্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য জারিকৃত কারফিউ শিথিল করেছে সৌদি সরকার।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, পবিত্র রমজান মাস জুড়ে, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মানুষ জন বাহিরে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারবে, তবে নিজ এলাকার ভিতরে।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতির কারণে হারামাইন শরিফাইন তথা মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীতে এ বছর তারাবীহ নামাজ দশ রাকাত করে পড়া হবে। এছাড়া আরও বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সৌদি সরকার।
সৌদিতে একদিকে করোনা আতংক, অন্যদিকে দুর্দশা আর হতাশা, সব মিলিয়ে এখানকার প্রবাসীরা দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে বলে জানান প্রবাসী নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশে অবস্থানরত পরিবারের কথা চিন্তা করে আমিও দিনের পর দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমি টাকা না পাঠাতে পারলে আমার পরিবার না খেয়ে রাস্তায় আসবে। একদিকে চাকরি নাই, অন্যদিকে পরিবারের চিন্তায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করছি।
আরেক প্রবাসী জসীমউদ্দীন বলেন, আমরা সৌদি আরবে হারেজ চৌয়ারিতে (হকার মার্কেটে) দৈনিক বেতনে কাজ করি। কিন্তু সৌদি আরবে কারফিউ ও লকডাউন ঘোষণার পর থেকে মার্কেট বন্ধ থাকায় আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে আর্থিক সংকটের পাশাপাশি অনাহারে জীবন যাপন করছি। কিছু সাহায্য পেলেও তা পরিমাণে সামান্য।
রমজানে সৌদিতে এইভাবে কারফিউ ও লকডাউন চলতে থাকলে গৃহবন্দি থাকা মানুষগুলোকে আর্থিক সংকটের পাশাপাশি আরও কঠিনতর ও দুর্বিসহ জীবন যাপন করতে হবে মনে করছেন প্রবাসীরা।
প্রসঙ্গত, আজ (২৩ এপ্রিল) সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া সবশেষ অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সৌদিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১৫৮ জন এবং মারা গেছেন ৭ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৩০ জন এবং মৃত্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২১ জনে। অন্যদিকে ১১৩ জন নিয়ে দেশটিতে সর্বমোট সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১৯২৫ জন।
এনএস/
আরও পড়ুন