সৌদিতে করোনায় আক্রান্ত ৩৭১৭ বাংলাদেশি, মৃত ৫৫
প্রকাশিত : ২০:৩৭, ৫ মে ২০২০
সৌদিতে প্রাণ হারানো ১০ বাংলাদেশি
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। রিয়াদ দূতাবাস ও জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট-এর তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশটিতে ৩ হাজার ৭১৭ জন বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় এই পর্যন্ত ৫৫ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
গত ২ মার্চ থেকে সৌদি আরবে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা শনাক্ত হবার পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩ জনের করোনা ভাইরাস টেস্ট করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজ (৫ মে) নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৯৫ জন এবং মারা গেছেন ৯ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ২৫১ জন এবং মারা গেছেন ২০০ জন। আক্রান্তের মধ্যে ৮৫ শতাংশ বিদেশি এবং ১৫ শতাংশ সৌদি নাগরিক বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৫ হাজার ৪৩১ জন।
উল্লেখ্য, রমজান উপলক্ষে সৌদি সরকার আগামী ১৩ মে পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল এবং শপিং মল খুলে দেয়া হয়েছে। শুরুর দিকে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কম হলেও গত কিছুদিন ধরে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘরে ঘরে গিয়ে করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা চালাচ্ছে। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিদিনই এক থেকে দেড় হাজার মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও কম নয়।
এদিকে, দেশটিতে আক্রান্তের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে মক্কা। শহরটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮৪৮ জন। এরপরেই আছে রাজধানী রিয়াদ। সেখানে আক্রান্ত ৫ হাজার ১৫২ জন, জেদ্দায় ৫ হাজার ৩৩ জন, মদিনায় ৪ হাজার ৬৪৬৮ জন, দাম্মামে ২ হাজার ৪৫ জন, হুফুফে ১ হাজার ৪২০ জন। এছাড়া অন্যান্য শহরেও কম-বেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত বিমান চলাচল বন্ধ, স্থানীয় অফিস-আদালত বন্ধ, লাশ সংরক্ষণে হিমঘরে স্থান সংকুলান না হওয়ায় এবং অন্যন্য নানা কারণে বেশ অসুবিধা দেখা দিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, বর্তমানে বাংলাদেশি কর্মীদের লাশ বাংলাদেশে প্রেরণ করা সম্ভব হবে না। তাই সব মরদেহ স্থানীয়ভাবে সৌদি আরবে দাফনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জুবাইল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে নতুন নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি এলাকার পুলিশ/ট্রাফিক, হাসপাতাল এবং গভর্নর অফিসের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা ৩-৭ দিনের মধ্যে পুরোনো যে কোনো লাশ দাফন করতে পারবে।
মৃতের পরিবার দাফনের অনুমতি না দিলে দূতাবাস এনওসি (অনাপত্তি পত্র) ইস্যু করে না। আর এনওসি ইস্যু না হলে মৃত্যু সনদসহ অন্যন্য কাগজপত্র ইস্যু হবে না। এনওসি ও অন্যন্য কাগজপত্র ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডে জমা দিতে না পারলে পূর্বঘোষিত এককালীন সাহায্য ৩ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে- এমন নিশ্চয়তাও পাওয়া যায় না।
এমতাবস্থায় বিভিন্ন কারণে সৌদিতে মারা যাওয়া প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের লাশ স্থানীয়ভাবে দাফন করার অনুমতি দিতে মৃতদের পরিবারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দা কনস্যুলেট।
এনএস/
আরও পড়ুন