স্বাস্থ্য ও পরিবেশের হুমকি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:৫৮, ২২ জুলাই ২০২২
দেশে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য। নিষ্পত্তি না হওয়ায় বর্জ্যের ৮০ শতাংশই সরাসরি গিয়ে মিশছে প্রকৃতিতে। ফলে ক্যান্সারসহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ। বাধ্য হয়ে কঠোর হচ্ছে সরকার। ডিসেম্বরের মধ্যেই ১২টি উপকূলীয় জেলায় বন্ধ হচ্ছে ওয়ানটাইম প্লাস্টিক।
নিজেকে চাঙ্গা করতে বেশিরভাগ মানুষ একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের গ্লাসে হাতে তুলে নেন ধোঁয়া ওঠা গরম চা। কিন্তু এমন গরম তাপে প্লাস্টিকে থাকা রাসায়নিক সহজেই খাবারের সাথে মিশে তৈরি করে বিষক্রিয়া।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৩৮ ধরণের রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি হয় প্লাস্টিক। এরমধ্যে ১৮ ধরনের রাসায়নিক মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যা ক্যান্সার, কিডনি, হৃদরোগ, মস্তিষ্কসহ বিভিন্ন জটিল রোগের জন্য দায়ী।
রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, "ক্যান্সারে সরসরি প্রভাব বিস্তার করে, এতে নারী ও পুরুষ উভয়েরই বন্ধ্যাত্বর শঙ্কা তৈরি হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অটিজমের শঙ্কা বেড়ে যায়।"
এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশাল ডেভেলপমেন্ট অরগানইজেশন- এসডো’র জরিপ বলছে, বছরে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয় প্রায় ৯ লাখ ৮০ হাজার টন। এর ৯৭ শতাংশই আসে কফি, পাউরুটি, চিপস, শ্যাম্পুর মতো পণ্য থেকে।
গবেষকরা বলছেন, প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরে। যার একটি অংশ খাদ্য চক্রের মাধ্যমে ফিরে আসছে মানবদেহে।
এসডোর মহাসচিব শাহরিয়ার হোসেন বলেন, "এটা যখন নদীতে যাচ্ছে তখন এটা থেকে মাইক্রো প্লাস্টিক তৈরি হয়, যা খাচ্ছে মাছ। আবার এটা যখন ফসলের ক্ষেতে ফেলা হচ্ছে তখন এটা খাবারেও যাচ্ছে। এতে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে জমছে প্রতিনিয়ত, এটা স্লোপয়জনিং।"
পরিস্থিতি উত্তরণে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার। ডিসেম্বরের মধ্যেই ১২টি উপকূলীয় জেলায় এসব প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে।
পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দীন বলেন, "আপাতত উপকূলীয় এলাকায় আমরা এটা বন্ধ করছি। পরে বাকি এলাকায় এটা কার্যকর করার ব্যবস্থা করব।"
২০১৬ সালে বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে ফ্রান্স একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয়। এরই পথ ধরে ১৩৪টি দেশে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা হয়।
এসবি/