চার জেলার লুঙ্গি রফতানি হচ্ছে ২৫ দেশে
প্রকাশিত : ১১:৩৪, ২৫ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১১:৫৭, ৫ এপ্রিল ২০১৮
বাঙালিদের কাছে লুঙ্গি প্রিয় এবং ঐতিয্যবাহী একটি পোশাক। এ পোশাক পড়তেই ভালোবাসেন প্রায় সবাই বলা যায়। তা দেশে বা দেশের বাইরে যেখানেই হোক না কেনো। সিরাজগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল ও নরসিংদীর লুঙ্গি এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রফতানি হচ্ছে ২৫টি দেশে। প্রায় দুই কোটি পিস লুঙ্গি রফতানি হচ্ছেে এসব দেশে। বছরে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা আয় হচ্ছে।
বিদেশে অনেক বাংলাদেশি কাজ করছেন। তাদের চাহিদা পূরণ করতেই মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, বাহারাইন, দুবাই, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কানাডা, ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৫ দেশে লুঙ্গি রফতানি হচ্ছে। এসব দেশে বসবাসকারী বাঙালিরাই মূলত এ লুঙ্গির ক্রেতা। ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের লোকজন শখ করে এ দেশের লুঙ্গি কিনেন।
দেশে ১৯৯৮ সালে বিদ্যুৎচালিত পাওয়ারলুমে লুঙ্গি তৈরি শুরু হয়। বর্তমানে এ ধরনের তাঁতে ৯০ শতাংশ লুঙ্গি তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া চিত্তরঞ্জন ও পিটলুমে লুঙ্গি তৈরি হচ্ছে। পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও নরসিংদীর ছোট-বড় মিলিয়ে লুঙ্গি প্রস্তুতকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় সোয়া এক লাখ।
তাঁতিরা জানান, একসময় নামে-বেনামে বিক্রি হওয়া লুঙ্গি এখন পরিচিতি পাচ্ছে নিজস্ব ব্র্যান্ডে। দেশে প্রথম লুঙ্গি ব্র্যান্ডিং শুরু করে নরসিংদীর হেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্স। সোনার বাংলা টেক্সটাইল, ডিসেন্ট, ইউনিক, স্ট্যান্ডার্ড, আমানত শাহ, রুহিতপুরী, স্মার্ট, অমর, পাকিজা, এটিএম, বোখারী, ফজর আলী, অনুসন্ধান, জেএম, স্কাই, ওয়েস্ট, রংধনুসহ ১২৫ ব্র্যান্ডের লুঙ্গি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। মান ভেদে প্রতিটি লুঙ্গি ৩৫০ থেকে ৭০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভালো ডিজাইনের কারণে বাংলাদেশের লুঙ্গির দিকে নজর এখন বিদেশিদেরও। বাংলাদেশি লুঙ্গির বড় ক্রেতা ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তারা বাংলাদেশ থেকে লুঙ্গি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বাজারে প্রতি পিস এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করছেন।
ভারতের মালদহ জেলার একজন আমদানি ও রফতানিকারক জানান, বিভিন্ন রাজ্যের ১২ জন আমদানি-রফতানিকারক এখান থেকে লুঙ্গি নিয়ে ভারতের বিভিন্ন নামি প্রতিষ্ঠানের স্টিকার লাগিয়ে অন্য দেশে রফতানি করছেন। ভারতীয় আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ পিস লুঙ্গি কেনেন বলে তিনি জানান।
শাহজাদপুরের পাইকারি কাপড় ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল মাসুদ জানান, ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, এনায়েতপুর; পাবনার আতাইকুলা, টাঙ্গাইলের করটিয়া ও নরসিংদীর বাবুরহাট থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২৫ কোটি টাকার কাপড় কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এতে এ অঞ্চলের তাঁতশিল্প প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
সোনার বাংলা টেক্সটাইলের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন ক্রেতারা লুঙ্গি কেনার ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডকে প্রাধান্য দেন।
বাংলাদেশ লুঙ্গি ম্যানুফ্যাকচারার্স, এক্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েসনের সভাপতি ও আমানত শাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হেলাল মিয়া জানান, সরকারি সহযোগিতা পেলে তৈরি পোশাকের পর লুঙ্গি দিয়ে বিশ্ববাজারে নতুন জায়গা করে নেওয়া যাবে।
এসএইচ/