পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে প্রথম স্প্যান বসছে আজ
প্রকাশিত : ০৯:১৯, ১০ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ১০:৫৫, ১০ এপ্রিল ২০১৯
স্থায়ীভাবে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে আজ বুধবার বসছে প্রথম স্প্যান। এটি বসানো হবে ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। যদিও মাওয়া প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে একটি স্প্যান বসানো রয়েছে। এটি আসলে বসানো হবে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর জানান, আজ ১০ এপ্রিল বুধবার মাওয়া প্রান্তের ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারে স্প্যান ৩-এ বসানো হবে। ওই দিন সকালে মাওয়ার কুমারভোগের কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যান রওনা দেবে। কারণ, কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যান বসানোর পিলারের দূরত্ব সামান্য।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ৮টি স্প্যান স্থায়ীভাবে বসানো হয়েছে এবং সবগুলো জাজিরা প্রান্তে। সে হিসেবে জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর ১২০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। মাওয়া প্রান্তে একটি অস্থায়ী স্প্যান (স্প্যান ১-এফ) রাখা আছে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে। এটি আসলে বসানো হবে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারে। কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে জায়গা না থাকায় স্প্যানটি ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে রাখা হয়।
পদ্মা সেতুতে মোট ৪২টি পিলারে সর্বমোট ৪১টি স্প্যান বসবে। প্রতিটি স্প্যান ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের স্থায়ী ও অস্থায়ী স্প্যান উভয় মিলে সেতুর মোট দৃশ্যমান ১৩৫০ মিটার। আর বুধবার ৩-এ স্প্যান বসানোর পর দৃশ্যমান হবে সেতুর মোট ১৫০০ মিটার বা দেড় কিলোমিটার। তবে, তিনটি ভিন্ন মডিউলে বসানোর কারণে আপাতত স্প্যানগুলো বিচ্ছিন্নভাবে দৃশ্যমান থাকবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মাসেতুর পিলারের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। মাওয়া প্রান্তে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের পাইলিং করতে গিয়ে দেখা দেয় প্রথম জটিলতা। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি এ দুই পিলারসহ নকশা জটিলতার সমাধান হয়।
বর্তমানে ৭ নম্বর পিলারের পাইল ড্রাইভ শেষ। এখন বাকি আছে ৬ নম্বর পিলারের পাইল ড্রাইভিংয়ের কাজ, যা ১-২ দিনের মধ্যে শেষ হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ৭ নম্বর পিলারের সাতটি পাইল ড্রাইভিং শেষ হয়েছে। আর ৬ নম্বর পিলারের একটি পাইলের কাজ বাকি রয়েছে, যা শেষ হতে সময় লাগবে ১-২ দিন।
এই পিলারের একটি পাইলের হ্যামারিং বাকি আছে। পদ্মাসেতুর কাজ শুরুর দিকে এই ৬ ও ৭ নম্বর পিলারে তিনটি করে পাইল ড্রাইভ করার পর কাজ বন্ধ থাকে দীর্ঘদিন।
এরপর স্ক্রিন গ্রাউটিং পদ্ধতিতে বাকি চারটি পাইল ড্রাইভ সম্পন্ন করার মাধ্যমে সমাধান আসে। স্ক্রিন গ্রাউটিং করার ফলে পাইলের দৃঢ়তা বাড়ে। সয়েল দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে এই পদ্ধতি মূলত ব্যবহৃত হয়। সেতুর ৬, ৭, ১০, ১১, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ নম্বর পিলারগুলোতে স্ক্রিন গ্রাউটিং পদ্ধতিতে পাইল ড্রাইভিং হচ্ছে। স্ক্রিন গ্রাউটিং হচ্ছে ৭১টি পাইলে।
বাংলাদেশে প্রথম ও বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি সেতুতে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল সেতুতে মোট ২৯৪টি পাইল আছে। যার মধ্যে নদীতে ২৬২টি পাইল বসবে। মূল সেতুর ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৪৭টি পাইলের কাজ শেষ হয়েছে। এসব পাইলে উঠবে মোট ৪২টি পিলার।
টিআর/