ঢাকা, বুধবার   ০৯ অক্টোবর ২০২৪

চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি থেকে প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড (ভিডিও)

সাইদুল ইসলাম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৪৯, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

কখনো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, কখনো রাজউকের অথরাইজড অফিসার আবার কখনো গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী- নিজেকে এভাবে উপস্থাপন করে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। 

বলছিলাম- খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চাকরিচ্যুত চেইনম্যান মুজিবুর রহমানের কথা। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থেকে প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড মুজিবুর এখন বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক। 

চেইনম্যান মুজিবুর রহমান। ঘুষ, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে বরখাস্ত করা হয় তাকে। এরপর শুরু তার বহুমুখী পরিচয়ের বহুবিধ প্রতারণা।

রাজউকের প্লট দেয়ার নামে একাধিক মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। সব শেষ পূর্বাচলে ৬ কাঠার প্লট বিক্রির কথা বলে ধানমণ্ডিতে একইভবনের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমানের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকা।

ভুক্তভোগী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “৩ কোটি টাকা দর নির্ধারণ হয় এবং তাকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা।”

পরে ধানমন্ডি থানায় অভিনব কায়দায় উল্টো ভুক্তভোগী এই মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধেই মামলা করেন মুজিবুর। 

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “মামলায় এসে লিখেছে তাকে নাকি ৬ ঘণ্টা আটকে রেখে পিটানো হয়। তার স্টাম্প ছিনতাই করা হয়েছে।”

পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে মামলটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। পিবিআই প্রধান জানান, নথি গায়েবসহ যেসব বিষয় মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। 

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, “যিনি টাকা নিয়েছেন তিনিই মামলা করেছেন। মামলার পর এটি আমরা তদন্ত করেছি। তদন্তে দেখা যায় বাদি মিথ্যা কথা বলেছেন। ভিকটিম আসলে প্রতারকের শিকার।”

পিবিআই প্রধান আরও জানান, মিথ্যা মামলার জন্য বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, “২১১ ধারায় মিথ্যা মামলার প্রসিকিউশন দেওয়া হবে। আদালত যদি অনুমোদন দেন তাহলে মামলা করবো।”

ধানমণ্ডি থানায় কিভাবে এমন বানোয়াট মামলা হলো সেটি জানতে যাই থানায়। কিন্তু কথা বলতে রাজি হননি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। 

টাকা উদ্ধারের জন্য মুজিবরকে চাপ দিলে বহিরাগত সন্ত্রাসী দ্বারা মেরে ফেলার হুমকিসহ ভয়ভীতি দেখানো হয় ভুক্তভোগীকে। এমন অবস্থায় পুরো ভবনের বাসিন্দারাই বিপাকে আছেন।

বিটিভির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা সেখ আব্দুল সালেক বলেন, “এটাকে কেন্দ্র করে বাইরের সন্ত্রাসী এসে আমাদের বিল্ডিংয়ে হামলা করে। এতে আমাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে।”

অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুজিবর বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যেমে টাকা নিয়ে নিজে বহু সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। ধানমণ্ডি ১১ নম্বর সড়কের বিলাসবহুল এ ভবনে তার ফ্ল্যাটটির মূল্য অন্তত চার কোটি টাকা। আর বাবর রোডে এ ভবনের পুরো একটি ফ্লোরের মালিকও প্রতারক মুজিবুর। 

এছাড়া রাজধানীর আরও কয়েকটি স্থানে নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে-বেনামে সম্পত্তি রয়েছে তার। নিজে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেন দুটি গাড়ি। 

প্রতারণার এমন সব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য মুজিবুর রহমানের বাসায় গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি