ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

২ কোটি টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন ডিবি হারুন, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:০৪, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সাবেক ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন এক নারী। তিনি দাবি করেন, একটি মামলায় তার কাছ থেকে দুই কোটি টাকা দাবি করেন হারুন। টাকা দিতে না পারায় মামলার চার্জশিটে নাম দেওয়া হয় তার পরিবারের সদস্যদের।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, তার স্বামী মৃত হাসান আহমেদ, তিনি ছিলেন পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। পরে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানও ছিলেন। পৈতৃক সূত্রে একজন জুট মিলস ব্যবসায়ী ছিলেন।

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে জুট রফতানি করতেন। দেশের একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি পুরস্কৃতও হয়েছিলেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ২০২০ সালে ব্রেন স্ট্রোকজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তার স্বামী। সেই সময়ে তার দেবর কবির আহমেদ ও মূসা এবং তাদের কর্মচারী বিদ্যুৎ ঘোষ বিভিন্ন অজুহাতে কোম্পানির বিভিন্ন ডকুমেন্টস সরাতে শুরু করে। কোম্পানির চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ করা হয় তার স্বামীকে। এ অবস্থা বুঝতে পেরে তার স্বামী তার প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি রক্ষায় ভিডিও বার্তায় কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তা কামনা করেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি রাজধানীর মতিঝিল থানায় জিডিও করেন।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি তার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর মরদেহ দাফনে কোনরূপ পদক্ষেপ না নিয়ে এ ভুক্তভোগীসহ তার ৯০ বছরের বৃদ্ধা মা, বোন, ভগ্নিপতিসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু করে। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটির মৃত্যু, সন্তানেরা পিতৃহীন এ পরিস্থিতিতে এক কঠিন বাস্তবতা ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হন বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভুক্তভোগী। তিনি বলেন, এ মামলা পল্টন থানা পুলিশ তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। পরে এ তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিলে আদালত তা পুনরায় তদন্তে দেয় ডিবিকে। ডিবি প্রধান হারুন তাকে ডেকে নিয়ে ২ কোটি টাকা চান। অন্যাথায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হবে বলে জানিয়ে দেন। টাকা দিতে না পারায় এবং প্রভাবিত হয়ে এ মামলায় চার্জশিট দেয় ডিবি। পরে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তারা। মামলাটি এখন চার্জ শুনানির জন্য ধার্য রয়েছে। আমরা ডিসচার্জ আবেদন করছি। এর উপর শুনানি হবে। আমরা ন্যায়বিচার পাবো বলে আশা করছি।

ভুক্তভোগী নারী আরো বলেন, তার স্বামী প্রথমে স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু তার দেবরগণ ও কর্মচারীর পরস্পরের যোগসাজশে ও ষড়যন্ত্রে কোম্পানি-ব্যাবসা বাণিজ্য এবং সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা দেখে আবারো স্ট্রোক করেন এবং মৃত্যুবরণ করেন। তারপরও ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি মিথ্যা মামলা করে সম্পত্তি আত্মসাতের লক্ষ্যে মামলা দিয়ে আমাদেরকে নির্মূলের অপচেষ্টা চলে।

তিনি বলেন, আমার স্বামীর বেতনভুক্ত কর্মচারী বেইলি রোডে কয়েক কোটি টাকার ফ্ল্যাটসহ বিপুল অর্থের মালিক। এসবই তার স্বামীর অসুস্থতার সুযোগে আত্মসাৎ করা অর্থ। দেবরগণ তার স্বামীর মৃত্যুর পরে তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

তিনি জানান, আত্মসাৎ, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে দেবরগণ ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় ২০২৪ সালের ৩ জুলাই মামলা করি।

মামলায় আসামি গ্রেফতারের পর আমাদের (বাদি) জিম্মায় জামিন দেয়া হয়। জামিনের শর্ত ছিল যে, আইন অনুযায়ী তার স্বামীর সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু তা তারা প্রতিপালন না করে ভয়ভীতি হুমকি ধমক দিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে বেশকটি এসএমএসও গণমাধ্যমকর্মীদের দেখান এ ভুক্তভোগী।

তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনা সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি এখন জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ংকর এক বাস্তবতার মুখোমুখি আমার পুরো পরিবার।’

সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পরিবার ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আর্তনাদ জানান ভুক্তভোগী এ নারী, তার শিশু সন্তান, ৯০ বছরের বৃদ্ধা মাসহ পরিস্থিতির শিকারগণ।

এমকে/এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি