মেট্রোরেলে এমন দৃশ্য আগে দেখেনি কেউ!
প্রকাশিত : ২০:৫৩, ২ মার্চ ২০২৫

পবিত্র রমজান মাসে সরকারি অফিসের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল থেকে উত্তরাগামী মেট্রো ট্রেনগুলোতে অফিস ফেরত যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে একটি ট্রেন স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার তিন মিনিট পর কেউ যদি প্ল্যাটফর্মে উঠেন, তবে তিনি আর পরবর্তী ট্রেনে উঠতে পারছেন না। তাকে দ্বিতীয় ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এমনও হয়েছে, কোনও কোনও যাত্রীর একটি পা ভেতরে রাখার মতো জায়গা নেই। ফলে ট্রেন থেকে তাদেরকে নেমে যেতে হয়েছে।
রোববার (২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর একাধিক মেট্রো স্টেশন ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
মতিঝিল ও সচিবালয় মেট্রো স্টেশনের কনকোর্স প্লাজায় খুবই কম সংখ্যক যাত্রী সিঙ্গেল টিকিট সংগ্রহের জন্য লাইনে অপেক্ষা করছেন। তাদের সংখ্যা প্রতি লাইনে ১০ থেকে ১৫ জনের মতো। অন্যদিকে অফিস ফেরত বেশিরভাগ যাত্রীর রয়েছে এমআরটি পাস অথবা র্যাপিড পাস। ফলে তারা সরাসরি উঠে যাচ্ছেন প্লাটফর্মে।
সিঁড়ি বেয়ে প্লাটফর্মে উঠে দেখা গেছে, সেখানে যাত্রীদের লোকারণ্য। জায়গা খালি আছে এমন জায়গা পাওয়ায় মুশকিল। প্লাটফর্মের প্রতিটি দরজার দু'পাশে অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন যাত্রী লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। আশপাশেও আরও অনেক যাত্রী দেখা যায়। সবমিলিয়ে কয়েকশ যাত্রী স্টেশনে অবস্থান করছেন।
সরেজমিনে সচিবালয় স্টেশনে দেখা গেছে, ৮ মিনিট পরপর মতিঝিল স্টেশন থেকে যাত্রীবোঝাই করে আসছে মেট্রো ট্রেনগুলো। ফলে এ স্টেশন থেকে খুব বেশি যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারছেন না। ট্রেন আসলেই হুড়োহুড়ি লেগে যাচ্ছে যাত্রীদের মধ্যে। কার আগে, কে উঠবেন ট্রেনে। ট্রেনের প্রতি গেট দিয়ে সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ জন মানুষ উঠতে পারছেন। বাকিরা করছেন ধাক্কাধাক্কি। কিন্তু কোনোভাবেই তারা ট্রেনে উঠতে পারছেন না। এর মধ্যে ট্রেনের দরজা লাগার সময় হয়ে যাচ্ছে। এমন মুহূর্তে কেউ কেউ ট্রেনের দরজায় আটকে যাচ্ছেন। কেউ এক পা ট্রেনের ভেতরে প্রবেশ করাতে না পেরে বাধ্য হয়ে ট্রেন থেকে নেমে যাচ্ছেন। ট্রেনের ভেতরে উঠেছেন, এমন অনেকের ব্যাগও আটকে যাচ্ছে দরজায়। বাধ্য হয়ে ট্রেনের দরজা লাগাতে কয়েকবার চেষ্টা করতে হচ্ছে চালককে। একটি ট্রেন চলে যাওয়ার পরও শ’খানেক যাত্রী স্টেশনে থেকে যাচ্ছেন।
স্টেশনে থাকা যাত্রী নার্গিস আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, চালুর পর থেকে অফিসে আসি মেট্রোরেলে চড়ে। শেওরাপাড়ার বাসা থেকে আগে আসতাম অফিসের বাসে। আজ প্রথম রোজা। ইফতারের আগে বাসায় যাওয়ার জন্য মেট্রোরেলের বিকল্প নেই। কিন্তু স্টেশনে এসে দেখি প্রচণ্ড ভিড়। প্রথম ট্রেনে উঠতে পারেনি। দ্বিতীয় ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি।
আরেক যাত্রী নাজমুল হুদা ঢাকা পোস্টকে বলেন, অফিস ছুটির পর আজ প্লাটফর্মে এসে দেখি প্রচণ্ড ভিড়। ট্রেনে উঠতে পারব কিনা, সেটাই বুঝতে পারছি না। তবে, অপেক্ষা করা লাগলেও এটিই একমাত্র দ্রুতগতির নিরাপদ বাহন।
তিনি আরও বলেন, কষ্ট করে ট্রেনে উঠতে পারলে ৩৫ মিনিটের মধ্যে উত্তরা স্টেশনে পৌঁছাতে পারব এটা নিশ্চিত। সেখান থেকে রিকশায় মাত্র ১০ মিনিটের পথ। কিন্তু বাসে গেলে ইফতারের আগে বাসায় পৌঁছাতে পারব কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নই। আমার মতো নিশ্চয়ই বাকিরাও নিরাপদে ও দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য ট্রেনের অপেক্ষা করছে।
এসএস//
আরও পড়ুন