বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখ’
প্রকাশিত : ১৮:১৩, ১১ এপ্রিল ২০২৫

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রার নাম এ বছর আর ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ থাকছে না। আগেই ইঙ্গিত মিলেছিল নাম পরিবর্তনের— এবার তা সত্যি হলো। বিতর্ক ও সমালোচনার মধ্যেই শোভাযাত্রার নতুন নাম রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
নতুন নাম হলেও আয়োজন থাকবে আগের মতোই বর্ণিল ও প্রতীকসমৃদ্ধ। থাকবে বড়, মাঝারি ও ছোট বিভিন্ন মোটিফ। এর মধ্যে ৬টি হবে বড় মোটিফ, যেগুলোতে উঠে আসবে নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক বার্তা।
বড় মোটিফগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’— যার মুখে থাকবে দাঁত, মাথায় শিং। অনেকেই মনে করছেন এটি একটি রাজনৈতিক প্রতীক, যা বর্তমান বা অতীত কোন ফ্যাসিবাদী শাসকের ইঙ্গিত দিতে পারে। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি দেখে কেউ যদি কারো সঙ্গে মিল খুঁজে পান, তা ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা সামগ্রিকভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান জানাচ্ছি।”
শোভাযাত্রার অন্যান্য বড় মোটিফগুলোতে থাকবে: কাঠের বাঘ, ইলিশ মাছ, টাইপোগ্রাফিতে লেখা ‘৩৬ জুলাই’, শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা, পালকি এবং জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধর পানির বোতল, যেটি রড দিয়ে তৈরি ১৫ ফুট লম্বা একটি প্রতীকী বোতল।
শুধু তাই নয়, এবার শোভাযাত্রায় উঠে আসবে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের প্রতি সংহতির বার্তাও। তাদের প্রতীক হিসেবে থাকছে তরমুজের মোটিফ।
অন্যান্য মোটিফের মধ্যে থাকছে, ১০টি সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, ৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখ, ২০টি রঙিন চরকি, ২০০টি বাঘের মাথা, ৮টি তালপাতার সেপাই, ১০টি পলো, ৫টি তুহিন পাখি, ৬টি মাছ ধরার চাই, ২০টি মাথাল, ২০টি ঘোড়া, ৫টি লাঙল, ৫টি মাছের ডোলা এবং ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস।
এছাড়া চারুকলার সামনের দেয়ালে আঁকা হচ্ছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী শখের হাঁড়ির মোটিফ এবং জয়নুল শিশু নিকেতনের দেয়ালে চিত্রিত হচ্ছে সাঁওতালদের মাটির দেয়ালের রীতিনীতির চিত্র।
এভাবেই নানা রঙ, বার্তা আর প্রতীকে সাজানো হচ্ছে এবারের বর্ষবরণ শোভাযাত্রা— যার মূল বার্তা: উৎসব, প্রতিবাদ আর ঐতিহ্যের সমন্বয়।
এসএস//
আরও পড়ুন