ভেঙে ফেলা হচ্ছে কবি রফিক আজাদের বাড়ি
প্রকাশিত : ১৯:১২, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

কবি রফিক আজাদের দীর্ঘ ২৯ বছরের বসবাস আর সাহিত্যচর্চার ঠিকানা—তাঁর প্রিয় বাড়িটি ভাঙা শুরু করেছে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে বাড়িটির পূর্ব পাশে বুলডোজার চালানো হয়। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন কবিপ্রেমীরা।
সেই বাড়ির দেয়ালে এখনো টাঙানো কবির ছবি। সেখানে লেখা তাঁর নাম। অথচ পাশেই ভাঙার কাজ চলছে পুরোদমে। কবিপত্নী দিলারা হাফিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চার ইউনিটের বাড়িটির একটি অংশে থাকেন দিলারা হাফিজ। বাকি তিনটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে অন্যদের নামে। ইতোমধ্যে পূর্ব দিকের দুটি ইউনিট ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। থাকাটাই এখন অনিশ্চিত।
দিলারা হাফিজ জানান, ১৯৮৮ সালে তিনি যখন ইডেন কলেজে প্রভাষক ছিলেন, তখন একতলা বাড়িটি সাময়িকভাবে তাঁর নামে বরাদ্দ দেয় এস্টেট অফিস। তখন বলা হয়েছিল, যতদিন পর্যন্ত নতুন কোনো আদেশ না আসে, ততদিন তিনি বাড়িটিতে থাকতে পারবেন।
কিন্তু ২০১২ সালে সৈয়দ নেহাল আহাদ নামে এক ব্যক্তি বাড়িটির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা করেন। এরপর দিলারা হাফিজ প্রতিকার চান এবং আদালত বাড়িটির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। সেটি এখনো বহাল রয়েছে এবং আগামী ২৫ মে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ হওয়ার কথা।
এই অবস্থায় বাড়ি ভাঙার বিষয়ে দিলারা হাফিজ বলেন, “কোনো লিখিত নোটিশও দেওয়া হয়নি আমাকে। শুধু মৌখিকভাবে কিছুদিনের সময় চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ করেই ভাঙা শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ-গ্যাস বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আর এখানে থাকা সম্ভব নয়।”
এই বাড়িতে কবি রফিক আজাদ কাটিয়েছেন জীবনের অনেকটা সময়। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা, একুশে পদকপ্রাপ্ত এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত সাহিত্যিক। তাঁর স্মৃতি রক্ষার জন্য অন্তত বাড়িটির কিছু অংশ স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন দিলারা হাফিজ। গতকালও তিনি গিয়েছিলেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে সেই দাবি জানাতে।
এদিকে, ফেসবুক-টুইটারে কবির ভক্ত, সাহিত্যপ্রেমী ও সাধারণ মানুষ স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটি রক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
আরও পড়ুন