ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:৪২, ২৪ জুলাই ২০২০

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূর করে অচল ঢাকা সচল করা, জলবদ্ধতা নিরসনে ব্যার্থতার জন্য দায়িদের শাস্তি এবং দখলকৃত খাল নালা উদ্ধার ও নদ-নদীসমূহকে দখল ও দুষণমুক্ত করার দাবিতে আজ ২৪ জুলাই ২০২০ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বাসদ ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদ ঢাকা মহানগর
শাখার সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন, আহসান হাবিব বুলবুল এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল কাদেরি জয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, পরিকল্পনাহীন নগরায়ন আর খাল-নালা দখলের কারণে ঢাকা শহর থেকে প্রাকৃতিক ভাবে পানি নিস্কাষনের পথ বহু আগে থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে। পানি নিস্কাষনের যে উপায়গুলি আছে তার দায়িত্ব প্রাপ্ত সংস্থাগুলি দীর্ঘদিন যাবত সেগুলির রক্ষনাবেক্ষণ না করে একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে চলছে। বছরের পর বছর জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে শত শত কোটি টাকা খরচ করা হলেও সমন্বিত কোন উদ্যোগ না থাকায় সমাধান তো হয়নি বরং ক্রমাগত সমস্যা বেড়ে চলেছে। 

ঢাকা শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য দায়িত্ব ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, দুই সিটি কর্পোরেশন, রাজউক ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এই ৬টি সংস্থার উপর। ৩৮৫ কিলোমিটার বড় আকৃতির নালা, ৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর্রে খাল ও চারটি স্থায়ী পাম্পস্টেশন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রয়েছে ঢাকা ওয়াসার উপর। দুই হাজার ২১১ কিলোমিটার নালা দেখাশুনা করে দুই সিটি করপোরেশন। ৫২টি স্লূইস গেট আর একটি পাম্পস্টেশন দেখভাল করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ৩০০ একরের হাতিরঝিল এবং প্রায় ২৫ কিলোমিটার লেক দেখাশুনার দায়িত্ব রাজউকের। দায়িত্বপ্রাপ্ত এই সংস্থাগুলো কোনো বছরই বর্ষার আগে নালা বা খাল পুরোপুরিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে না। ফলে নালা ও খালগুলি ময়লা জমে ভরাট হয়ে পানি প্রবাহের সক্ষমতা কমে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সমস্যা প্রকট হয়। একটি আদর্শ শহরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ উম্মুক্ত জায়গা, সবুজ পার্ক ও জলাধার থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে ঢাকা শহরে তা নেই, বাংলাদেশ ইন্সিটিটিউট অব প্লানার্সের এক গবেষনায় দেখা গেছে ১৯৯৯ সালে ঢাকায় উম্মুক্ত জায়গা, জলাধার ছিল ১৪ শতাংশ। ২০ বছর পর ২০১৯ সালে তা কমে হয়েছে ৪.৩৮ শতাংশ। পানি নিস্কাষনের জন্যে পাম্প হাউজের সক্ষমতাও অনেক দুর্বল। ৪০ মিলি মিটারের বেশী বৃষ্টিপাত হলে পাম্প হাউজগুলিও আর কার্যকর থাকেনা।

তাছাড়া স্লূইসগেট ও পাম্প স্টেশনগুলোতে ময়লা আবর্জনা জমে থাকায় তা পরিস্কার না করায় পানি নিস্কাষন সক্ষমতা অনুযায়ী হয়না। এটাও জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। সরকারের প্রশ্রয়ে সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, লুটপাট আর অনিয়মের যে মহাউৎসব চলছে
পানি নিস্কাষনের এই অব্যবস্থাপনা তার বাইরের কিছু নয়। মুলত জনদুর্ভোগ কাজে লাগিয়ে লুটপাটের নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরী করতেই এই সমন্বয়হীনতাকে জিয়িয়ে রাখা হয়েছে। ফলে জনদুর্ভোগ এর কোন সুরাহা হচ্ছে না। নেতৃবৃন্দ, বিগত ১০ বছরে
ঢাকা শহরের জলবদ্ধতা নিরষনে পরিকল্পনাকারী এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশ, ব্যর্থতা ও দুর্নীতির জন্য দায়িদের শাস্তি এবং অবিলম্বে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন করে অচল ঢাকাকে সচল করার দাবি জানান। আর এই অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্যে নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি