ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকায় ‘উপসর্গহীন’ পরিবারে ৮ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৪০, ১১ আগস্ট ২০২০ | আপডেট: ০০:৩৭, ১২ আগস্ট ২০২০

রাজধানী ঢাকায় করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ নেই এমন পরিবারে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, উপসর্গহীন সদস্যদের মধ্যে ৮ শতাংশের করোনা পজিটিভ। সম্প্রতি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এর যৌথ জরিপের মাধ্যমে রাজধানীর করোনার সংক্রমণের এমন চিত্র উঠে এসেছে।

স্থানীয় পর্যায়ে করোনা কতটা বিস্তার করেছে, তা জানতে ইউএসএআইডি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় গত ১৮ এপ্রিল থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত সোয়া তিন হাজার পরিবারের ১২ হাজার মানুষের ওপর এ জরিপ চালানো হয়।

আইইইডিসিআর জরিপটির সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে জানিয়েছে, এই জরিপের আওতায় আনা পরিবারগুলোর প্রাথমিক স্ক্রিনিংয়ের ভিত্তিতে উপসর্গযুক্ত এবং উপসর্গহীন- এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। জরিপের দিন বা আগের সাত দিনের মধ্যে কোনো পরিবারের কোনো সদস্যের মধ্যে যদি করোনার চারটি উপসর্গের অন্তত একটি দেখা গিয়ে থাকে, তাহলে সেই পরিবারকে ‘উপসর্গযুক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া উপসর্গহীন’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে যেসব পরিবারে কারো মধ্যে ওই সময়ে কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।

দুই সিটি করপোরেশনের মোট তিন হাজার ২৭৭ পরিবারের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। এসব পরিবারের মোট ২১১ জনের মধ্যে করোনার উপসর্গ পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে ১৯৯ জনের নমুনা নিয়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হয়। আর ‘উপসর্গযুক্ত’ পরিবারগুলোর ৪৩৫ জন উপসর্গহীন ব্যক্তিকে এ জরিপের জন্য বেছে নেয়া হয়। তাদের মধ্যে ২০১ জনের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হয়েছে।

‘উপসর্গহীন’ পরিবারগুলো থেকে জরিপে বেছে নেয়া হয় ৮২৭ জন উপসর্গহীন ব্যক্তিকে। তাদের মধ্যে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হয় ৫৩৮ জনের। এর বাইরে ঢাকার ছয়টি বস্তি এলাকার ৭২০টি পরিবারকে এই জরিপের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জরিপে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে ৫ শতাংশ ছিল ‘উপসর্গযুক্ত; অর্থাৎ এসব পরিবারের কারও না কারও মধ্যে উপসর্গ ছিল। আর জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মোট সংখ্যার ২ শতাংশের মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ ছিল।

আইইডিসিআর আরও জানায়, 'যাদের মধ্যে উপসর্গ ছিল, তাদের ৩০ শতাংশ; ‘উপসর্গযুক্ত’ পরিবারের যে উপসর্গহীন ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের ১৪ শতাংশ এবং ‘উপসর্গহীন’ পরিবারের উপসর্গহীন ব্যক্তিদের ৮ শতাংশের আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে।'

সব মিলিয়ে ঢাকায় এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৯ শতাংশের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানানো হয়েছে সমীক্ষার ফলাফলে।

সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের ৫৩ শতাংশের মধ্যে জ্বর, ৩৬ শতাংশের মধ্যে সর্দি-কাশি, ১৭ শতাংশের মধ্যে গলাব্যথা এবং ৫ শতাংশের মধ্যে শ্বাসকষ্টের লক্ষ্মণ দেখা গেছে পরীক্ষার দিন। বয়সভিত্তিক হিসেবে পরীক্ষায় যাদের করোনা পজিটিভ এসেছে, তাদের ১৩ শতাংশের বয়স ৪০ বছরের বেশি; ১২ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে এবং ৮ শতাংশের বয়স ১০ বছরের কম। করোনা ভাইরাসে যাদের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাদের মধ্যে ১৫ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে এক মাসের ফলোআপে তাদের মধ্যে কেবল একজনের মৃত্যুর তথ্য এসেছে। পুরো জরিপে যেখানে ৯ শতাংশের মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে, সেখানে বস্তিবাসীর মধ্যে সংক্রমণের হার ৬ শতাংশ বলে জানানো হয়েছে জরিপের ফলাফলে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশে যে দুই লাখ ৬৩ হাজার মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাদের মধ্যে ৬৭ হাজার ১৩৫ জন ঢাকার বাসিন্দা। কিন্তু যদি ঢাকার মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশ হিসেবে ধরা হয় তাহলে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলেই মত জরিপটি প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি