ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন মকবুল: পুলিশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩৭, ২৪ এপ্রিল ২০২২ | আপডেট: ১৮:১৯, ২৪ এপ্রিল ২০২২

রাজধানীর নিউমার্কেটে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী-দোকান কর্মচারীদের সংঘর্ষের মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন সরদারের কাছ থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য’ মিলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শনিবার থেকে ৩ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন বিএনপির এই সাবেক নেতা। রিমান্ডের প্রথম দিনেই জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নিউমার্কেট জোনের পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শাহেনশাহ। 

জিজ্ঞাসাবাদে কী পাওয়া গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সেই তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করছি।”

দুই দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় শুক্রবার মকবুলকে তার ধানমণ্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার আদালতে হাজির করে তিন দিনের হেফাজতে পায় পুলিশ।

দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জ্বালাও-পোড়াও, পুলিশের কাজের বাধা দেওয়ার অভিযোগে নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে যে মামলা করেছেন, সেখানে মকবুলকেই প্রধান আসামি করা হয়েছে।

ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুড নামের যে দুই দোকানের কর্মচারীদের দ্বন্দ্ব থেকে গত ১৮ এপ্রিল মধ্যরাতে সংঘর্ষের সূত্রপাত, সেই দোকান দুইটি সিটি করপোরেশন থেকে মকবুলের নামে বরাদ্দ হওয়া। তবে কোনো দোকানই নিজে চালান না। রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজনকে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন দোকান দুটি। রফিকুল ও শহিদুল আবার পরস্পরের আত্মীয়।

মকবুল ছাড়াও মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।

গ্রেপ্তার হওয়ার আগে মকবুল দাবি করেন, ‘বিএনপি করার কারণে’ পুলিশ তাকে এ মামলার আসামি বানিয়েছে।

তবে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৮ এপ্রিল মধ্যরাত ও পরদিন দিনভর সংঘর্ষের সময় মকবুলসহ বাকিরা ঘটনাস্থলে ছিলেন।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে শাহেনশাহ বলেন, “এখনও স্বীকার করেছেন না। তবে পুলিশের তথ্য রয়েছে তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং উসকানি দাতা হিসেবে কাজ করেছেন।”

পরিদর্শক ইয়ামিন এজাহারে লিখেছেন, ১৮ তারিখ রাতে নিউ মার্কেটের ৪ নম্বর গেইটে ঢাকা কলেজের ২০০ থেকে ৩০০ জন অজ্ঞাতনামা ছাত্র ভাঙচুর করে। ১১টা ৪৫ মিনিটে বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশের সিনিয়র অফিসার ও ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। ছাত্ররা তখন ৪ নম্বর গেইটের পরিবর্তে ২ নম্বর গেইট দিয়ে ভাঙচুর করে এবং নিউ মার্কেটের ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করে।

এজাহারে বলা হয়, সিনিয়র অফিসার ও ফোর্স বাধা দিলে তারা নিউ মার্কেট থেকে ঢাকা কলেজের দিকে যায় এবং আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনসহ ঢাকা কলেজের গেইটের সামনে বিভিন্ন স্থানে বাঁশের লাঠি, রড, দা, হকিস্টিক নিয়ে অবস্থান নেয়।

সে সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে অবস্থান নেয়। তখন সেখানে এডিসি (রমনা), এডিসি (ধানমন্ডি), এডিসি (নিউমার্কেট), এসি (রমনা), এসিসহ (ধানমন্ডি) অতিরিক্ত ফোর্স উপস্থিত হয়।

মামলায় বলা হয়, অ্যাডভোকেট মকবুল, আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু হাজী জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাজীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শত্রু হিদুল ইসলাম শহিদ, জাপানী ফারুক, মিজান বেপারী, আসিফের উস্কানিতে জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুলসহ অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ ব্যবসায়ী ও কর্মচারী বেআইনিভাবে সমবেত হয়ে ঢাকা কলেজের দিকে দৌড়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। লাঠি, রড, হকিস্টিক নিয়ে রাত ২টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।

দুই পক্ষকে শান্ত করতে গিয়ে ১০ থেকে ১৫ জন পুলিশ শারীরিকভাবে আহত হন। ওই ঘটনায় মকবুলসহ ১২ জন ‘উসকানিদাতা’ হিসেবে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয় এজাহারে।

সংঘর্ষের ওই ঘটনায় দুই জনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হন। পরে দুটি হত্যা মামলাসহ মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়।

এমএম/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি